প্রথম পাতা

অদম্য ক্রোয়েশিয়ার সামনে বাধা ইতিহাস

স্পোর্টস ডেস্ক

১৪ জুলাই ২০১৮, শনিবার, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

রাশিয়া বিশ্বকাপে কী নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখা যাবে? ক্রোয়েশিয়া কি পারবে রূপকথার জন্ম দিতে? নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবার  বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে ক্রোয়াটরা। জনসংখ্যার নিরিখে ৬৮ বছরে বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা সবচেয়ে ছোট দেশ ৪০ লাখ মানুষের দেশ ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপের মাত্র ১৩তম ফাইনালিস্ট তারা। আগের ২০ আসরে ঘুরেফিরে ১২টি দেশের দখলে থাকে শিরোপা। দলকে ফাইনালে তুলে কুড়ি বছর আগে গড়া ডেভর সুকার-জনিমির বোবানদের কীর্তি ছাড়িয়ে যান মদরিচ-রাকিটিচ-পেরিসিচরা।

স্বপ্নের ফাইনালে ক্রোয়াটদের লড়াই ৯৮’র চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিপক্ষে। এতে ক্রোয়াটদেরও স্মৃতিতে তাজা ‘১৯৯৮’।  সেবার ফ্রান্সের কাছে হেরেই সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় ক্রোয়েশিয়া। যদিও ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাতকো বলেন, ফুটবলে প্রতিশোধ বলে কিছু নেই। ফাইনালে জয়ের জন্যই মাঠে নামবে তার দল। ক্রোয়াটদের বর্তমান দলটা আরও অদম্য। মনোবলে অনেক বলীয়ান। বিশ্বকাপ ইতিহাসে নকআউট পর্বে টানা তিন ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়ার রেকর্ড গড়ে লুকা মদরিচের দল। তিন ম্যাচেই ১২০ মিনিট খেলে নিজেদের অদম্য মনোবল দেখায় ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে প্রথম ঝলক দেখায় তারা। ‘সি’ গ্রুপের তিন ম্যাচ জিতেই নকআউট পর্বে পা রাখে কোচ জ্লাতকো দালিচের শিষ্যরা। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অধিনায়ক লুকা মদরিচ। দ্বিতীয় রাউন্ডে ডেনমার্ক ও কোয়ার্টার ফাইনালে স্বাগতিক রাশিয়াকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ২০ বছর পর সেমিফাইনালের টিকিট কাটে ক্রোয়েশিয়া। শেষ চারে ইংল্যান্ডকে হতাশায় ডোবায় ক্রোয়াটরা। অতিরিক্তি সময়ে করা জুভেন্টাস তারকা মারিও মানজুকিচের নিশানাভেদে ২-১ গোলের জয়োৎসবে মাতে ক্রোয়াট শিবির। সেমিফাইনালের আগে মিডিয়ায় ক্রোয়েশিয়া দলকে ‘ক্লান্ত’ বলা হয়। মাঠের খেলায় তা ভুল প্রমাণ করেন মদরিচরা। ১০২ ডিগ্রি জ্বর নিয়েও ১২০ মিনিট মাঠে থাকেন মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচ। আগের টানা দুই ম্যাচে টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার জয়সূচক সফল শেষ শট নেন এফসি বার্সেলোনার এ মিডফিল্ডারই এই ম্যাচে পাঁচ মিনিটের গোলে এগিয়ে যায় ইংলিশরা। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও হাল ছাড়েনি অভিজ্ঞ খেলোয়াড় সমৃদ্ধ ক্রোয়েশিয়া দল। ৬৮ মিনিটে দলকে ম্যাচে ফেরান ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানের পরীক্ষিত উইঙ্গার ইভান পেরিসিচ। আত্মবিশ্বাস, মনোবল আর অদম্য মানসিকতার প্রদর্শনী দেখিয়ে যোগ্য দল হিসেবেই ফাইনালের মঞ্চে পৌঁছায় ক্রোয়াটরা।
এবারের আসরে ফুটবলপ্রেমীদের নজর কাড়েন ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কলিন্দা গ্রাবার কিতারোভিচও। বিশ্বকাপে দলকে সমর্থন যোগাতে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে বিমানের ইকোনমি ক্লাসে চেপে রাশিয়ায় পৌঁছেন তিনি। স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ভিআইপি গ্যালারিতে ছিল তার সরব উপস্থিতি। ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে ব্যস্ত না থাকলে সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও মদরিচদের সমর্থনে গলা ফাটাতেন তিনি। ফাইনালে নিশ্চয়ই গ্যালারিতে তার হাস্যোজ্জ্বল মুখ দেখা যাবে।

ক্রোয়েশিয়ার মতো ফ্রান্সও শিরোপা ঘরে ফেরাতে মরিয়া। এক যুগ পর ফাইনালে নামছে ব্লু’রা। ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছেন ফুটবলবোদ্ধারা। দুই দলেই রয়েছেন একঝাঁক প্রতিভাবান ফুটবলার। মাঝমাঠে বল দখলের লড়াইটা ঝমবে বেশ। ফ্রান্সের আছেন পল পগবা, এনগোলো কান্তে, মাতুইদিরা। ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠে রয়েছেন পরীক্ষিত সৈনিক লুকা মদরিচ, ইভান রাকিটিচরা। গতির ঝড় তুলে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণভাগের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারেন ১৯ বছরের কিলিয়ান এমবাপ্পে। দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনাকে একাই ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন এই উঠতি ফরোয়ার্ড। সুযোগ বুঝে ফ্রান্সের জাল কাঁপাতে পারেন অভিজ্ঞ মানজুকিচ। সঙ্গে আছেন পেরিসিচ। দুই দলের গোলরক্ষকই নির্ভরযোগ্য। ফ্রান্সের হুগো লরিস আর ক্রোয়েশিয়ার ড্যানিয়েল সুবাসিচ। নকআউপ পর্বের দুই ম্যাচে টাইব্রেকারে দলকে উদ্ধার করেন সুবাসিচ। টাইব্রেকারে (শুরুর পাঁচ শটে) তিনটি সেভ করে পর্তুগালের গোলরক্ষক রিকার্ডোর রেকর্ড স্পর্শ করেন তিনি। এক আসরে টাইব্রেকারে ৪টি সেভ করে আর্জেন্টিনার সার্জিও গাইকোচিয়া ও জার্মানির হ্যারাল্ড শুমাখারের কীর্তিতে নাম লেখান সুবাসিচ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status