দেশ বিদেশ

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ছয় তরুণের পদযাত্রা

আবদুল আলীম

১৪ জুলাই ২০১৮, শনিবার, ৯:৫১ পূর্বাহ্ন

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পর্যন্ত পদযাত্রা করেছেন ছয় তরুণ। গত ৫ই জুলাই সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনে থেকে তারা পায়ে হেঁটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার মধ্য দিয়ে এ নীরব প্রতিবাদ কর্মসূচির শুরু করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরাতন ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে এসে এ পদযাত্রা শেষ করেন। এর আগে বুধবার বিকালে তারা নয়া পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছান। পদযাত্রায় অংশ নেয়া তরুণদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এ নীরব প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করার পর প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা করে হেঁটেছেন। যেখানে রাত হয়েছে সেখানে স্থানীয় কোনো হোটেলে রাত্রিযাপন করেছেন। ছয় তরুণের মধ্যে পাঁচজন বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদল নেতা এবং একজন যুবদলের নেতা।
খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তাঁর মুক্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো। তবে ছয় তরুণের এই পদযাত্রা কর্মসূচি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী। এর আগে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন চলাকালে ভারতের কলকাতা থেকে পদযাত্রার মাধ্যমে ঢাকায় এসেছিলেন নাট্যকর্মী ইকরামুল হাসান শাকিল। কলকাতা থেকে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত পার হয়ে গোপালগঞ্জ হয়ে পায়ে হেঁটে ঢাকার রমনার বটমূলে পৌঁছান।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পদযাত্রায় অংশ নেয়া চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল নেতা শহিদুজ্জামান মানবজমিনকে জানান, এই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচির চিন্তা আমার মাথায় আসে প্রথম। পরে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিই। তখন স্ট্যাটাস দেখে সাইফুল আলম রানা ও মো. আজিম উদ্দিন চট্টগ্রাম থেকে আমার সঙ্গে যোগ দেন। তিন জনে একসঙ্গে রওনা হওয়ার পর সীতাকুণ্ড থেকে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন সোহেল মালতো, কুমিল্লার পদুয়া বাজার থেকে সাদ্দাম মজুমদার ও ক্যান্টনমেন্ট থেকে সোহেল রানা। ব্যতিক্রমী কর্মসূচির বিষয়ে শহিদুজ্জামান বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারাগারে রেখেছে। তিনি কারাগারে যাওয়ার আগে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের কথা বলেছেন। এই পদযাত্রা অনেকটা মৌন মিছিলের মতো। তাই এই কর্মসূচির মাধ্যমে দুর্ভোগের সুযোগ নেই, অশান্তি সৃষ্টিরও সুযোগও নেই। আমাদের মনে হয়েছে এটা সবচেয়ে নিরাপদ কর্মসূচি। এজন্যই এটা করেছি। আমাদের এই পদযাত্রাকালে বিভিন্ন জায়গার দলীয় নেতাকর্মীরা উৎসাহ যুগিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। পদযাত্রাকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫ই জুলাই চট্টগ্রাম থেকে রওনা হওয়ার পর প্রথমদিন রাত্রী যাপন করেন সীতাকুণ্ড, দ্বিতীয় দিন মিরসরাই, তৃতীয় দিন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, চতুর্থ দিন কুমিল্লার পদুয়া বাজার, পঞ্চম দিন চান্দিনা ও ষষ্ঠদিন রাতে নারায়ণগঞ্জের কাচপুরে রাত্রিযাপন করে পরদিন বুধবার বিকালে তারা ঢাকায় নয়া পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছান। পদযাত্রার উদ্যোক্তা শহিদুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম থেকে পদযাত্রা শুরুর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে জানাই। তিনি আমাকে উৎসাহ যোগান। এর পর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন, মহানগর বিএনপির সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর আমাকে সাপোর্ট করার পাশাপাশি সব সময় খোঁজখবর রেখে সহযোগিতা করেছেন। একই সঙ্গে ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিকও আমাদের এলাকার ছেলে হওয়ায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের খোঁজখবর রেখে উৎসাহ যোগান। ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিক বলেন, পদযাত্রার উদ্যোক্তা শহিদুজ্জামন আমার এলাকার ছেলে এবং ছাত্রদলের নেতা। তারা চট্টগ্রাম থেকে পদযাত্রা শুরু করলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আমাকে তাদের খোঁজখবর রাখা ও ঢাকায় এলে সব ধরনের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। ঢাকায় আসার পর থেকে শুরু করে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে কারাফটকে যাওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গেই ছিলাম।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status