বিনোদন
আলাপন
আমি চলচ্চিত্রের মানুষ তাই এ অঙ্গনের ভালোটাই চাই
কামরুজ্জামান মিলু
১২ জুলাই ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন
রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠান। এ আয়োজনে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতা। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন তিনি। তাকে মানবজমিনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানোর পর জানতে চাওয়া হলো অনুভূতির কথা। তিনি বলেন, আমি অনেক আনন্দিত। এই অনুভূতি সত্যিই আলাদা। মনের মধ্যে জমে থাকা ইচ্ছেগুলোও শেয়ার করেছি আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে। বিশেষ করে জীবনের শেষ সময়টাতে অনেক শিল্পী ও কলাকুশলীকে দুঃখ-কষ্টে পার করতে হয়। অনেক শিল্পী তার সারাটা জীবন চলচ্চিত্রে সময় দেয়ার পর শেষ জীবনে পরিবারকে তেমন কিছুই দিতে পারে না। আমি চলচ্চিত্রের মানুষ, তাই এ অঙ্গনের ভালোটাই চাই। শিল্পী ও কলাকুশলীরা যাতে অন্তত নিজের ঘরে থাকা ও সুচিকিৎসার অধিকারটুকু পান, সে ব্যবস্থা যেন প্রধানমন্ত্রী করে দেন। এটাই চেয়েছি। বর্তমানে তরুণ অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই ভালো করছেন বলেও জানান ববিতা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটা সময় ছবি দেখা বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। এখন মানুষ আবারো ছবি দেখছে। এ বিষয়টি আমার খুব ভালো লাগে। এই প্রজন্মের অনেকেই ভালো করছে। তাই মানুষ আবারো সিনেমা হলে ভিড় জমাচ্ছে। তবে তরুণ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয়ে আরো মনোযোগী হতে হবে। ইদানিং চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীদের মধ্যে বিভাজনের খবর পাই। এ ব্যাপারটি সত্যি অনেক কষ্ট দেয়। আর আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে রাজ্জাক ভাইয়ের কথাও তুলেছিলাম। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, চলচ্চিত্রে রাজ্জাক ভাইয়ের অবদান অনেক। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তার নামে একটি ইনস্টিটিউট বা ফিল্ম আর্কাইভ করা দরকার। এ বিষয়টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। নিজের কোন বিষয়টি নিয়ে ভাবতে আপনার ভালো লাগে ? এমন প্রশ্নের জবাবে ববিতা বলেন, নিজেকে নিয়ে তেমন ভাবা হয় না এখন। তবে আমি যে ববিতা হয়েছি, তা শুধু চলচ্চিত্রে অভিনয় করে। এ বিষয়টি নিয়ে আমি অবশ্যই গর্ববোধ করি। কারণ যে বয়সে চলচ্চিত্রে এসেছি, তখন থেকে আমার ইচ্ছে ছিল, দেশ-বিদেশের বড় বড় উৎসবে অংশ নেব। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অল্প বয়সে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে বিভিন্ন দেশ আর বড় বড় উৎসবে অংশ নেয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। বিশেষ করে কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ছবির নায়িকা হিসেবে কাজ করেছি। দেশের পতাকা নিয়ে অন্য নানা দেশ এবং উৎসবে অংশ নিয়েছি। এসবই আমার ভাবতে ভালো লাগে। সামনের পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে গুণী এ অভিনেত্রী বলেন, গেল রোজার ঈদটি ছেলে অনিককে ছাড়াই করেছি। তাই আর কয়েকদিন পরই কানাডা যাব। সেখানে ছেলের সঙ্গে দেখা করে নিউইয়র্কে আমার দুই ভাইয়ের বাসায় যাব। সেখানে তাদের সঙ্গে কিছুদিন সময় কাটাব। তারপর কানাডা হয়ে কোরবানি ঈদের পরে ঢাকা আসব। ঢাকায় ফেরার পর নভেম্বরে ডিসট্র্যাস্ড চিলড্রেন অ্যান্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল (ডিসিআই)-এর শুভেচ্ছাদূত হিসেবে আমাকে ওয়াল্ড ট্যুরে যেতে হবে। সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, ইতালি, ইংল্যান্ডসহ বেশকিছু দেশে যাওয়ার কথা রয়েছে আমার। এভাবেই বছরটা কেটে যাবে।