শেষের পাতা

পুলিশ কমিশনার, ডিসিকে তলব

খুলনার নির্বাচনে অনিয়মে মামলার সিদ্ধান্ত

সিরাজুস সালেকিন

১১ জুলাই ২০১৮, বুধবার, ১০:১৬ পূর্বাহ্ন

খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে তিনটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই নির্বাচনে অনিয়মে পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগে খুলনার পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে তলব করা হয়েছে। একই সঙ্গে সুনামগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে সেখানকার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ঢাকায় কৈফিয়ত তলব করেছে কমিশন। দুই একদিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে নির্ধারিত সময়ে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে উপস্থিত থাকার জন্য জানানো হবে। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, খুলনার পুলিশ কমিশনার, ডিসি, সুনামগঞ্জের ডিসি-এসপিকে ঢাকায় তলব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। কিন্তু কবে তাদের ঢাকায় ডাকা হবে তার সিদ্ধান্ত এখনো পাওয়া যায়নি।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন নিয়ে অসন্তুষ্ট কমিশন। বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা আসায় নির্বাচনে অনিয়মে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসি। ইতিমধ্যে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের অনিয়ম অনুসন্ধানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে দায়িত্ব দিয়েছেন। গত ১৫ই মে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি নির্বাচন ও গত ২৯শে মার্চ অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচনে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় খুলনার পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর, জেলা প্রশাসক মো. আমিনুল আহসান এবং সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাবেরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহকে তলব করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। কমিশনের নিজস্ব তদন্তে খুলনা ও সুনামগঞ্জের নির্বাচনে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট দুটি নির্বাচনে কেন এবং কি কারণে অনিয়ম হয়েছে-সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে পুরো কমিশন।

খুলনা সিটি নির্বাচনে জোরপূর্বক ব্যালট ছিনতাই ও অনিয়মের কারণে ৩টি ভোট কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়। কেন্দ্রগুলো হলো- ইকবাল নগর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, রুপসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৩১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কার্যালয় কেন্দ্র। আর তিনটি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে কমিশন। বিশেষ করে খালিশপুরের নয়াবাটী হাজী শরীয়ত উল্লাহ বিদ্যাপীঠ (মাধ্যমিক) কেন্দ্রে একজন বাদে সবাই ভোট দেন। এই কেন্দ্রে ৯৯ দশমিক ৯৪ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ ছাড়াও খালিশপুরের মওলানা ভাসানী বিদ্যাপীঠ (গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ) স্কুল ভবন কেন্দ্রে ভোট পড়ে ৯৭ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং খুলনার গগনবাবু রোডের নতুন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পড়ে ৯১ দশমিক ৩৮ শতাংশ ভোট।

যেখানে খুলনা সিটিতে মোট ভোট পড়ে ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ সেখানে এই তিনটি কেন্দ্রের অস্বাভাবিক ভোটের জন্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্থগিত তিনটি কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে ইসি সূত্র।

অন্যদিকে, গত ২৯শে মার্চ অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ পৌরসভার উপনির্বাচনে উত্তর আরপিননগর পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে সকাল ১০টা ১মিনিটে ব্যালট পেপারের একটি বই ছিনিয়ে নেয় সরকারদলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা। এখানে পুলিশ কোনো ভূমিকাই রাখেনি। এ ঘটনায় ইসির গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোতালেবসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত ৬জন সহকারী রিটার্নিং অফিসার, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের দায়িত্বরত ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার নির্দেশ দিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে পত্র পাঠানো হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status