খেলা
বিশ্লেষণ
‘ইংল্যান্ডের বড় শক্তি তারুণ্য’
১১ জুলাই ২০১৮, বুধবার, ১০:১৪ পূর্বাহ্ন
আলফাজ আহমেদ, জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার
১৯৬৬, এরপর কেটে গেছে কয়েক যুগ। কিন্তু ইউরোপিয়ান ফুটবলের ধারক ইংল্যান্ডের হাতে আর ওঠেনি এ শিরোপা। এমনকি সেই একবারই তারা ফাইনাল খেলতে সক্ষম হয়েছিল। এরপর আর হয়নি, ডেভিড বেকহ্যাম, ওয়েন রুনির মতো তারকারাও পারেননি ইংলিশদের স্বপ্নের পথ দেখাতে। তবে হ্যারি কেইন, রাহিম স্টারলিং, ডেলে আলিদের মতো তরুণরা আবারও দেখাচ্ছে স্বপ্ন। আজ ক্রোয়েশিয়াকে হারাতে পারলেই তারা চলে যাবে শিরোপার একেবারেই কাছে। কিন্তু শক্তিশালী ক্রোয়েশিয়াকে হারাতে পারবে তারা? আমি মনে করি এ ম্যাচে ইংল্যান্ডের সম্ভবনাই বেশি। তার অন্যতম কারণ এবারের ইংল্যান্ড দলটি দারুণ তারুণ্যনির্ভর। জান দিয়ে খেলার মতো ক্ষমতা ওদের আছে। ক্রোয়েশিয়াও দারুণ দল। তবে আগের পাঁচ ম্যাচে জয় তুলে নিতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। দুটি ম্যাচতো ১২০ মিনিট খেলে টাই ব্রেকারে জিতেছে। সেই ধকলটাও কিছুটা তাদের আছেই। সেমিফাইনালের চাপটাও কম নয়।’
সেমিফাইনাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডকে কোনো বড় দলের মুখোমুখি হতে হয়নি। কিন্তু ক্রোয়েশিয়া হারিয়েছে আর্জেন্টিনাকেও। নাইজেরিয়া ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে দারুণ জয় পেলেও পরের তিন ম্যাচেই তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক ও রাশিয়া। বলা চলে ইউরোপের দলগুলোর বিপক্ষে সুবিধাই করতে পারেনি। ডেনমার্ক ও রাশিয়ার সঙ্গেতো ড্র করে শেষ পর্যন্ত ভাগ্য জোরে জয় পেয়েছে। যে কারণে ইরোপের আরেক শক্তি ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও লড়াই সহজ হবে না। মাঠের খেলাতেও দুই দলের পার্থক্য। বিশেষ করে আমি মনে করি ইংল্যান্ড কর্নার ও ফ্রিকিকে অসাধারণ। ওরা এখন পর্যন্ত বেশি গোলই পেয়েছে এ দুই দিক থেকে। এরপর ধরনে স্টারলিং ওদের দারুণ এক স্টাইকার। যদিও এখনো গোল পায়নি। কিন্তু আমি মনে করি ওর মতো খেলোয়াড় বড় ম্যাচে দারুণ জ্বলে উঠবে। আলি আছে, এ তরুণ চমক দেখাতে সক্ষম। হেরি কেন এ পর্যন্ত বেশির ভাগ গোলই পেয়েছে ভাগ্য থেকে। এটি কিন্তু দারুণ সত্যি যে ফুটবলে ভাগ্যেরও প্রয়োজন আছে। দেখবেন অনেক বড় বড় ফুটবলারের গোল পোস্টে লেগে ফিরে এসেছে। অল্পের জন্য গোল হয়নি। কিন্তু হেরি কেনের ক্ষেত্রে বলতে হবে দারুণ ভাগ্য তার। আমি খেলার মাঠের কথা যদি বলি ইংল্যান্ডের তরুণনা মরিয়া হয়ে খেলবে যেটি ক্রোয়েশিয়ার জন্য দারুণ বিপদজনক।
‘এমবাপেই সেরা স্ট্রাইকার মনে হয়েছে’
এখন পর্যন্ত সেরা রাশিয়া বিশ্বকাপে বেশ কয়েজন ফুটবলার নজর কেড়েছেন। মেসি রোনালদো, নেইমার ছাড়াও আলোচনায় এসেছে এমবাপে, হেরি কেনের নামও। বিশেষ করে স্ট্রাইকার হিসেবে আমার দৃষ্টিতে ফ্রান্সের এমবাপেকেই আমি এগিয়ে রাখতে চাইছি। ও যখন পিএসজিতে ছিল তখন থেকেই বলেছিলাম দারুণ স্ট্রাইকার হবে। এ বিশ্বকাপে শুরুতে গোল পাচ্ছি না। কিন্তু দুই ম্যাচ পরেই ও দারুণভাবে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছে। কেন ও সেরা সেটিও আমি বলছি। তারপরের কাজ কিন্তু দারুণ। এছাড়া তার সবচেয়ে বড় বিষয় হলো শক্তি আর ক্ষীপ্রতা। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত ও নিজেকে কতটা প্রমাণ করতে পারে। কিন্তু যদি আমি নিজের পছন্দের স্ট্রাইকারের কথা বলি তাকেই এগিয়ে রাখবো। নিজে স্ট্রাইকার ছিলাম তাই জানি সে কতটা প্রতিভাবান।
‘যে কারণে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল-স্পেনের বিদায়’
বিশ্বকাপ জেতার হুঙ্কার দিয়ে রাশিয়াতে এসেছিল লাতিন ফুটবলের সেরা তিন দল ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও স্পেন। কিন্তু কোটি কোটি ফুটবল ভক্তকে হতাশায় ডুবিয়ে বিদায় নিয়েছে তারা। আমি মনে করি এ তিন দলেরই বেশ কিছু দুর্বলতা ছিল। একে তো লাতিন ফুটবলের ওপর চেয়ে শারীরিক শক্তিতে ইউরোপের ফুটবলাররা এগিয়ে ছিল এবার অনেক বেশি। বলতে গেলে এ শক্তি কারণেই মাঠের ফুটবলেও ছিল পিছিয়ে। তবে যদি আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও স্পেনের কথা বলে সেই ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বলতেই হয়। আর্জেন্টিনার অন্যতম দুর্বলতা ছিল গোল পোস্ট। সেখানে যে গোলকিপাররা ছিলেন তারা মোটেই বিশ্বমানের তো নয়ই এমনকি বিশ্বকাপের খেলার মানেও নয়। যদি এটি না হতো তাহলে দেখতেন সেমির দল এবারও ফাইনাল খেলতে। ক্রোয়েশিয়া বা জার্মানির বিপক্ষে যে গোল খেয়েছে সেগুলো ভালো গোলকিপার হয়ে থামিয়ে দিতে পারতো।’ স্পেনের বড় ধাক্কা ছিল ঠিক আসর শুরুর আগে ওদের প্রধান কোচের চলে যাওয়া। একজন কোচ সেই বাছাই পর্ব থেকে দলকে সাজাচ্ছে। তার পরিবর্তে অন্যজন এসে সঠিক কাজটি করতে পারেননি। সেই সঙ্গে দলও মানসিকভাবে পিছিয়ে ছিল। আর ব্রাজিলের কথা যদি বলেন আমি বলবো দুর্ভাগ্য। শেষ ম্যাচে বেলজিয়ামের বিপক্ষে কম হলেও পাঁচটি নিশ্চিত গোল হয়নি। কিছু তো একটুর জন্য। আর সবচেয়ে বড় বাধা ছিল ওদের গোলকিপার কুরতোয়া। এমন গোলকিপারের সামনে যেকোনো স্ট্রাইকার অসহায়।
অনুলিখন: ইশতিয়াক আহমেদ
সেমিফাইনাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডকে কোনো বড় দলের মুখোমুখি হতে হয়নি। কিন্তু ক্রোয়েশিয়া হারিয়েছে আর্জেন্টিনাকেও। নাইজেরিয়া ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে দারুণ জয় পেলেও পরের তিন ম্যাচেই তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক ও রাশিয়া। বলা চলে ইউরোপের দলগুলোর বিপক্ষে সুবিধাই করতে পারেনি। ডেনমার্ক ও রাশিয়ার সঙ্গেতো ড্র করে শেষ পর্যন্ত ভাগ্য জোরে জয় পেয়েছে। যে কারণে ইরোপের আরেক শক্তি ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও লড়াই সহজ হবে না। মাঠের খেলাতেও দুই দলের পার্থক্য। বিশেষ করে আমি মনে করি ইংল্যান্ড কর্নার ও ফ্রিকিকে অসাধারণ। ওরা এখন পর্যন্ত বেশি গোলই পেয়েছে এ দুই দিক থেকে। এরপর ধরনে স্টারলিং ওদের দারুণ এক স্টাইকার। যদিও এখনো গোল পায়নি। কিন্তু আমি মনে করি ওর মতো খেলোয়াড় বড় ম্যাচে দারুণ জ্বলে উঠবে। আলি আছে, এ তরুণ চমক দেখাতে সক্ষম। হেরি কেন এ পর্যন্ত বেশির ভাগ গোলই পেয়েছে ভাগ্য থেকে। এটি কিন্তু দারুণ সত্যি যে ফুটবলে ভাগ্যেরও প্রয়োজন আছে। দেখবেন অনেক বড় বড় ফুটবলারের গোল পোস্টে লেগে ফিরে এসেছে। অল্পের জন্য গোল হয়নি। কিন্তু হেরি কেনের ক্ষেত্রে বলতে হবে দারুণ ভাগ্য তার। আমি খেলার মাঠের কথা যদি বলি ইংল্যান্ডের তরুণনা মরিয়া হয়ে খেলবে যেটি ক্রোয়েশিয়ার জন্য দারুণ বিপদজনক।
‘এমবাপেই সেরা স্ট্রাইকার মনে হয়েছে’
এখন পর্যন্ত সেরা রাশিয়া বিশ্বকাপে বেশ কয়েজন ফুটবলার নজর কেড়েছেন। মেসি রোনালদো, নেইমার ছাড়াও আলোচনায় এসেছে এমবাপে, হেরি কেনের নামও। বিশেষ করে স্ট্রাইকার হিসেবে আমার দৃষ্টিতে ফ্রান্সের এমবাপেকেই আমি এগিয়ে রাখতে চাইছি। ও যখন পিএসজিতে ছিল তখন থেকেই বলেছিলাম দারুণ স্ট্রাইকার হবে। এ বিশ্বকাপে শুরুতে গোল পাচ্ছি না। কিন্তু দুই ম্যাচ পরেই ও দারুণভাবে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছে। কেন ও সেরা সেটিও আমি বলছি। তারপরের কাজ কিন্তু দারুণ। এছাড়া তার সবচেয়ে বড় বিষয় হলো শক্তি আর ক্ষীপ্রতা। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত ও নিজেকে কতটা প্রমাণ করতে পারে। কিন্তু যদি আমি নিজের পছন্দের স্ট্রাইকারের কথা বলি তাকেই এগিয়ে রাখবো। নিজে স্ট্রাইকার ছিলাম তাই জানি সে কতটা প্রতিভাবান।
‘যে কারণে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল-স্পেনের বিদায়’
বিশ্বকাপ জেতার হুঙ্কার দিয়ে রাশিয়াতে এসেছিল লাতিন ফুটবলের সেরা তিন দল ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও স্পেন। কিন্তু কোটি কোটি ফুটবল ভক্তকে হতাশায় ডুবিয়ে বিদায় নিয়েছে তারা। আমি মনে করি এ তিন দলেরই বেশ কিছু দুর্বলতা ছিল। একে তো লাতিন ফুটবলের ওপর চেয়ে শারীরিক শক্তিতে ইউরোপের ফুটবলাররা এগিয়ে ছিল এবার অনেক বেশি। বলতে গেলে এ শক্তি কারণেই মাঠের ফুটবলেও ছিল পিছিয়ে। তবে যদি আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও স্পেনের কথা বলে সেই ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বলতেই হয়। আর্জেন্টিনার অন্যতম দুর্বলতা ছিল গোল পোস্ট। সেখানে যে গোলকিপাররা ছিলেন তারা মোটেই বিশ্বমানের তো নয়ই এমনকি বিশ্বকাপের খেলার মানেও নয়। যদি এটি না হতো তাহলে দেখতেন সেমির দল এবারও ফাইনাল খেলতে। ক্রোয়েশিয়া বা জার্মানির বিপক্ষে যে গোল খেয়েছে সেগুলো ভালো গোলকিপার হয়ে থামিয়ে দিতে পারতো।’ স্পেনের বড় ধাক্কা ছিল ঠিক আসর শুরুর আগে ওদের প্রধান কোচের চলে যাওয়া। একজন কোচ সেই বাছাই পর্ব থেকে দলকে সাজাচ্ছে। তার পরিবর্তে অন্যজন এসে সঠিক কাজটি করতে পারেননি। সেই সঙ্গে দলও মানসিকভাবে পিছিয়ে ছিল। আর ব্রাজিলের কথা যদি বলেন আমি বলবো দুর্ভাগ্য। শেষ ম্যাচে বেলজিয়ামের বিপক্ষে কম হলেও পাঁচটি নিশ্চিত গোল হয়নি। কিছু তো একটুর জন্য। আর সবচেয়ে বড় বাধা ছিল ওদের গোলকিপার কুরতোয়া। এমন গোলকিপারের সামনে যেকোনো স্ট্রাইকার অসহায়।
অনুলিখন: ইশতিয়াক আহমেদ