বাংলারজমিন
গাজীপুর থেকে পুলিশ ইন্সপেক্টরের পোড়া লাশ উদ্ধার
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে
১১ জুলাই ২০১৮, বুধবার, ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
গাজীপুরের একটি জঙ্গল থেকে আগুনে পোড়া অবস্থায় পুলিশের ঢাকার বিশেষ শাখার এক পুলিশ ইন্সপেক্টরের পোড়া মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মামুন ইমরান খান (৩৪) ঢাকার বিশেষ শাখায় স্কুল অব ইনটেলিজেন্সে পরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ এলাকায়। গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ ও মো. গোলাম সবুর ডিবি ইন্সপেক্টর আমীর হোসেন, কালীগঞ্জ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক, গাজীপুর পুলিশের বিশেষ শাখার ইন্সপেক্টর মোমিনুল ইসলাম সহ ঢাকার ডিবি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশ কর্মকর্তারা মরদেহ উদ্ধারের স্থান পরিদর্শন করেছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। গাজীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, মঙ্গলবার দুপুরে কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের উলুখোলার রায়েরদিয়া গ্রামের একটি জঙ্গলে স্থানীয়রা আগুনে পোড়া একটি মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। তার ধারণা, মামুন ইমরানকে পরিকল্পিতভাবে অন্যত্র হত্যা করে গাজীপুরের এই নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। পুলিশ সুপার আরো জানান, ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। মরদেহ যেহেতু শনাক্ত হয়েছে। তাই আশা করছি এর সঙ্গে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। তিনি আরো জানান, খবর পেয়ে ঢাকার ডিবি ও বিশেষ শাখার কর্মকর্মতারা ঘটনাস্থলে এসে মরদেহটি নিখোঁজ পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খানের বলে শনাক্ত করেন। দুই দিন আগে গত রোববার ঢাকার সবুজবাগ এলাকার ভাইয়ের বাসা থেকে নিখোঁজ হন মামুন। এদিকে, গাজীপুর পুলিশের কালীগঞ্জের সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার পঙ্কজ দত্ত সাংবাদিকদের জানান, গত ৮ই জুন ইন্সপেক্টর মামুন তার ঢাকার মধ্য বাসাবোর এলাকার বাসা থেকে বনানী এলাকায় পারিবারিক অনুষ্ঠানে যান। তারপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে তার চেহারা বিকৃত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চক্রটি নিজেদের রক্ষা করতে ইন্সপেক্টর মামুনের পরিচয় নিশ্চিহ্ন করতে পুড়িয়ে দিয়েছে। নিহত মামুন ২০০৫ সালে পুলিশে যোগ দেন। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এই ঘটনায় ঢাকার পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দিও দিয়েছে। ইনসপেক্টর মামুনকে হত্যার পর বস্তাবন্দি মরদেহ সোমবার রাতে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে এবং ন্যাশনাল পার্ক এলাকার নির্জনস্থানে ফেলে দেবার সুযোগ খোঁজে দুর্বৃত্তরা। ওই এলাকায় ফেলতে না পেরে পরে নগরের জয়দেবপুরের শিমুলতলী বাজার এলাকা থেকে তারা ৮ লিটার পেট্্েরাল কিনে এবং রাতে কালীগঞ্জের রায়েরদিয়া এলাকার নির্জনস্থানের জঙ্গলে মরদেহ ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। সকালে স্থানীয়রা ওই জঙ্গলে মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। নিহতে মামুনের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, নিখোঁজ হবার পরদিন সোমবার ঢাকার সবুজ বাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। কারো সাথে মামুনের কোন বিরোধ বা শত্রুতা ছিল এমন কোন বিষয়ও তাদের জানা নেই।