এক্সক্লুসিভ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি- জাতিসংঘ
কূটনৈতিক রিপোর্টার
৯ জুলাই ২০১৮, সোমবার, ১০:১৩ পূর্বাহ্ন
সপ্তাহব্যাপী বাংলাদেশ সফরকারী জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াং হি লি অভিযোগ করেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। বাংলাদেশ সফরের সমাপনী সংবাদ সম্মেলনে গতকাল তিনি এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি রোহিঙ্গাদের ‘শরণার্থী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তাদের ওপর এখনো রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে তার লাগাম টেনে ধরতে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় এবং মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। লি আশংকা প্রকাশ করে বলেন- রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদাপূর্ণ সর্বোপরি টেকসই প্রত্যাবাসন শিগগিরই হচ্ছে না। তার মতে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের অঙ্গীকার ও চুক্তি বাস্তবায়নে এখনো তার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি, পরিস্থিতির একটুও উন্নতি হয়নি। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ দূত তার বাংলাদেশ সফর বিশেষত তার কক্সবাজারস্থ রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। বলেন- সমপ্রতি রাখাইন থেকে এসেছে এমন কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে ক্যাম্পে আমার কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, বর্মী বাহিনীর সদস্যরা তাদের গ্রামে ঢুকে তাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড (এনভিসি) গ্রহণ করতে বলে, অন্যথায় দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের এনভিসি চায় না, তারা চায় নাগরিকত্ব। জাতিসংঘ দূত ইয়াং হি লি বলেন, একজন রোহিঙ্গা নারী বলেছেন, তার ১২ বছরের ছেলেকে মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যরা কেটে টুকরো টুকরো করেছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তের জিরো লাইনের বাংলাদেশ অংশে চার হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে। সেখানও গিয়েছিলেন ইয়াং হি লি। সেখানকার অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে কয়েকটি বাচ্চা ছেলে ফুটবল খেলে ফিরছিল। তাদের মধ্যে একজন পেছনে পড়ে গেলে মিয়ানমারের দিক থেকে একটি গুলি ছুটে আসে। ওই গুলিতে ছেলেটি আহত হয়। ইয়াং হি লি বলেন, আমি এ ধরনের কাপুরুষোচিত কাজের তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি জানান, বাংলাদেশ সফরে তিনি যে চিত্র পেয়েছেন তা নিয়ে আগামী অক্টোবরে জাতিসংঘে পূর্ণাঙ্গভাবে এটি জমা দেবেন। তিনি মিয়ানমারের পরিস্থিতিও দেখতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তাকে অনুমতি দেয়নি বলে জানান জাতিসংঘ দূত। ভারতে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখতেও তিনি ভারত যেতে চেয়েছিলেন। দিল্লি তার আবেদনে সাড়া দেয়নি জানিয়ে লি বলেন, ভারত সরকার আমাকে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছুই বলেনি।