ঈদ আনন্দ ২০১৮
খেলাধুলা
ভেন্যু পরিচিতি
তাশফিক আহমেদ গুঞ্জন
৩০ জুন ২০১৮, শনিবার, ৬:৩৭ পূর্বাহ্ন
যেকোনো বিশ্বকাপের অন্যতম আকর্ষণ দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়াম। আসন্ন রাশিয়া বিশ্বকাপেও দর্শকদের জন্য অপেক্ষা করছে চমৎকার সব ভেন্যু। ১৪ জুন পর্দা উঠছে ফুটবল বিশ্বকাপের ২১তম আসরের। রাশিয়ার ১১ শহরের ১২টি মাঠে আয়োজিত হবে ৬৪ ম্যাচের টুর্নামেন্ট। ৩২ দলের শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতার সমাপ্তি ঘটবে ১৫ জুলাইয়ের ফাইনালের মধ্য দিয়ে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। রানার্সআপ আর্জেন্টিনা। কোন কোন মাঠে আপনার প্রিয় দলগুলোর ম্যাচ থাকছে তা নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে। পাঠকদের জন্য সব ভেন্যুর আদ্যোপান্ত তুলে ধরা হলোÑ
লুঝনিকি স্টেডিয়াম
রাশিয়ার সর্ববৃহৎ ও জাতীয় স্টেডিয়াম লুঝনিকি। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ ও ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে এই মাঠে। প্রথম দিন সৌদি আরবকে আতিথ্য দেবে স্বাগতিকরা। রাজধানী মস্কোতে অবস্থিত ভেন্যুটিতে একসঙ্গে ৮০ হাজার দর্শক ম্যাচ উপভোগ করতে পারবেন। ১৯৫৬ সালে স্টেডিয়ামটির গেট খুলে দেয়া হয়। বিশ্বকাপ সামনে রেখে এর ধারণক্ষমতা বাড়াতে ২০১৩ সালে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল। তুলে ফেলা হয় অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক। পুরো স্টেডিয়াম নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মাঠে প্রবেশ করলেই চোখ আটকে যাবে চোখ ধাঁধানো গ্যালারি আর সবুজ ঘাসে। ঝলমলে আলোয় মুড়িয়ে দেয়া হয়েছে স্টেডিয়ামের বাইরে অংশ। বিশ্বকাপ শেষে আবারো রাশিয়ার সব জাতীয় খেলার মূল ভেন্যুতে পরিণত হবে লুঝনিকি স্টেডিয়াম। মস্কোভা নদীর বাঁকে জন্মানো সুগভীর তৃণক্ষেত্র থেকে ‘লুঝনিকি’ নামটির উৎপত্তি।
ম্যাচের সূচি
১৪ জুন - রাশিয়া বনাম সৌদি আরব
১৭ জুন - জার্মানি বনাম মেক্সিকো
২০ জুন - পর্তুগাল বনাম মরক্কো
২৬ জুন - ডেনমার্ক বনাম ফ্রান্স
১ জুলাই - শেষ ষোলোর তৃতীয় ম্যাচ
১১ জুলাই - দ্বিতীয় সেমিফাইনাল
১৫ জুলাই - ফাইনাল
স্পার্তাক স্টেডিয়াম
শুধুমাত্র মস্কো শহরে দুইটি ভেন্যু রাখা হয়েছে। ২০১৪ সালে নির্মিত হয় স্পার্তাক স্টেডিয়াম। এটি রাশিয়ান প্রিমিয়ার লীগের দল স্পার্তাক মস্কোর ঘরের মাঠ। ২০১৭ ফিফা কনফেডারেশন্স কাপে এই মাঠটি ব্যবহৃত হয়েছিল। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। স্টেডিয়ামের সম্মুখভাগে ছোটছোট হীরা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে স্পার্তাকের লোগো। এটি পরিবর্তিতও হতে পারে, যা নির্ভর করবে কোন দল খেলছে তার ওপর। এই স্টেডিয়ামটি ২০১০ সালের অক্টোবরে ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে উন্মুক্ত হয় দর্শকদের জন্য।
ম্যাচের সূচি
১৬ জুন - আর্জেন্টিনা বনাম আইসল্যান্ড
১৯ জুন - পোল্যান্ড বনাম সেনেগাল
২৩ জুন - বেলজিয়াম বনাম তিউনিসিয়া
২৭ জুন - সার্বিয়া বনাম ব্রাজিল
৩ জুলাই - শেষ ষোলোর অষ্টম ম্যাচ
সেইন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়াম
রাশিয়ার অন্যতম আধুনিক স্টেডিয়াম এটি। ২০১৭ কনফেডারেশন্স কাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল ম্যাচ হয়েছিল এই মাঠে। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সেইন্ট পিটার্সবার্গে ক্রেস্তভস্কি দ্বীপের পশ্চিত অংশে স্টেডিয়ামটির অবস্থান। বিশ্বকাপ শেষে জেনিত সেইন্ট পিটার্সবার্গের ঘরের মাঠটিতে আগের মতোই কনসার্ট আয়োজন ও অন্যান্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলবে। ২০২০ ইউয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের (ইউরো) ভেন্যু তালিকায় রয়েছে এটি। ধারণক্ষমতা ৬৭ হাজার। গত বছর এই স্টেডিয়াম সংস্কার করা হয়েছিল।
ম্যাচের সূচি
১৫ জুন - মরক্কো বনাম ইরান
১৯ জুন - রাশিয়া বনাম মিশর
২২ জুন - ব্রাজিল বনাম কোস্টারিকা
২৬ জুন - নাইজেরিয়া বনাম আর্জেন্টিনা
৩ জুলাই - শেষ ষোলোর সপ্তম ম্যাচ
১০ জুলাই - প্রথম সেমিফাইনাল
১৪ জুলাই - তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ
ফিস্ট স্টেডিয়াম
সোচি শহরে ২০১৪ শীতকালীন অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল ফিস্ট স্টেডিয়াম। উদ্বোধনী ও সমাপনি অনুষ্ঠান হয়েছিল এখানে। পরে বিশ্বকাপের জন্য বিশেষভাবে পুনর্নির্মিত হয়। ভেন্যুটির নামকরণ করা হয়েছে মাউন্ট ফিস্টের নামানুসারে। দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৮ হাজার। বিশ্বকাপের সময় সোচিতে অনুশীলন ক্যাম্প করবে রাশিয়া।
ম্যাচের সূচি
১৫ জুন - পর্তুগাল বনাম স্পেন
১৮ জুন - বেলজিয়াম বনাম পানাম
২৩ জুন - জার্মানি বনাম সুইডেন
২৬ জুন - অস্ট্রেলিয়া বনাম পেরু
৩০ জুন - শেষ ষোলোর দ্বিতীয় ম্যাচ
৭ জুলাই - চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনাল
সামারা অ্যারেনা
২০১৮ বিশ্বকাপের জন্য চার বছর আগে সামার শহরে স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। শেষ হয় এ বছর। গত এপ্রিলে ফিফার হাতে মাঠটি বুঝিয়ে দেয় আয়োজকরা। স্টেডিয়ামের নকশায় মহাকাশকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কাচের গম্বুজ সদৃশ ভেন্যুটিতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশ প্রোগ্রামের প্রতি সম্মান দেখানো হয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচ রয়েছে সামারা অ্যারেনায়। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপ শেষে এটিকে ঘরের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করবে এফসি ক্রিলিয়া সভেতোভ।
ম্যাচের সূচি
১৭ জুন - কোস্টারিকা বনাম সার্বিয়া
২১ জুন - ডেনমার্ক বনাম অস্ট্রেলিয়া
২৫ জুন - উরুগুয়ে বনাম রাশিয়া
২৮ জুন - সেনেগাল বনাম কলম্বিয়া
২ জুলাই - শেষ ষোলোর পঞ্চম ম্যাচ
৭ জুলাই - তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল
কাজান অ্যারেনা
কাজান শহরের এই স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয়েছিল ২০১৩ গ্রীষ্মকালীন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের জন্য। প্রতিযোগিতা শেষে প্রস্তুত করা হয় ফুটবল মাঠ। স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। এর নকশা করেছেন ইংল্যান্ডের এমিরেটস স্টেডিয়াম ও ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের স্থপতি। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপ শেষে রুবিন কাজানের ঘরের মাঠের আগের মতোই কনসার্ট, বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।
ম্যাচের সূচি
১৬ জুন - ফ্রান্স বনাম অস্ট্রেলিয়া
২০ জুন - ইরান বনাম স্পেন
২৪ জুন - পোল্যান্ড বনাম কলম্বিয়া
২৭ জুন - দক্ষিণ কোরিয়া বনাম জার্মানি
৩০ জুন - শেষ ষোলোর প্রথম ম্যাচ
৬ জুলাই - দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল।
নিঝনি নভগোরদ স্টেডিয়াম
তিন বছর সংস্কারের পর বিশ্বকাপের জন্য সদ্য নির্মিত স্টেডিয়ামটিতে ছয়টি ম্যাচ আয়োজিত হবে। নিঝনি নভগোরদ শহরের মানুষ দইটি নকআউট পর্বের ম্যাচ উপভোগ করতে পারবেন। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপ শেষে এই স্টেডিয়াম হবে দ্বিতীয় স্তরের ক্লাব অলিম্পিয়েটস নিঝনি নভগোরদের হোম গ্রাউন্ড।
ম্যাচের সূচি
১৮ জুন - সুইডেন বনাম দক্ষিণ কোরিয়া
২১ জুন - আর্জেন্টিনা বনাম ক্রোয়েশিয়া
২৪ জুন - ইংল্যান্ড বনাম পানামা
২৭ জুন - সুইজারল্যান্ড বনাম কোস্টারিকা
১ জুলাই - শেষ ষোলোর চতুর্থ ম্যাচ
৬ জুলাই - প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল
রোস্তভ অ্যারেনা
২০১৮ বিশ্বকাপের সম্পূর্ণ নতুন স্টেডিয়াম রোস্তভ অন ডন শহরের রোস্তভ অ্যারেনা। পাশের ডন নদীর আদলে করা হয়েছে স্টেডিয়ামের ছাদের নকশা। গ্যালারি থেকে দর্শকরা নদীয় সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। এই স্টেডিয়ামে তৈরি করতে সময় লেগেছে চার বছর। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপের পর এফসি রোস্তভ তাদের হোম ম্যাচগুলো এই মাঠেই খেলবে।
ম্যাচের সূচি
১৭ জুন - ব্রাজিল বনাম সুইজারল্যান্ড
২০ জুন - উরুগুয়ে বনাম সৌদি আরব
২৩ জুন - দক্ষিণ কোরিয়া বনাম মেক্সিকো
২৬ জুন - আইসল্যান্ড বনাম ক্রোয়েশিয়া
২ জুলাই - শেষ ষোলোর ষষ্ঠ ম্যাচ।
একাতেরিনবার্গ অ্যারেনা
রাশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ফুটবল ক্লাব এফসি উরালের ঘরের মাঠ একাতেরিনবার্গ অ্যারেনা। নির্মিত হয়েছিল ১৯৫৩ সালে। এরপর বেশ কয়েকবার সংস্কার কাজ করা হয়। সবশেষ ২০১৮ বিশ্বকাপের জন্য গত তিন বছর বিশেষ সংস্কার করে আয়োজকরা। আগের ২৫ হাজার ধারণক্ষমতা বাড়াতে গ্যালারির একটি স্ট্যান্ড উঠে গেছে স্টেডিয়ামের ছাদের উপর পর্যন্ত। এখন একসঙ্গে ৩৫ হাজার দর্শক একসঙ্গে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। ভেন্যুটি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচ আয়োজন করবে। মোহাম্মদ সালাহর মিশরের মুখোমুখি হবে লুইস সুয়ারেজের উরুগুয়ে।
ম্যাচের সূচি
১৫ জুন - মিশর বনাম উরুগুয়ে
২১ জুন - ফ্রান্স বনাম পেরু
২৪ জুন - জাপান বনাম সেনেগাল
২৭ জুন - মেক্সিকো বনাম সুইডেন
মরদোভিয়া অ্যারেনা
মস্কোর ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে মরদোভিয়ার সারান্সকে অবস্থিত মরদোভিয়া অ্যারেনা। সারান্সক শহরের মাঠটির দীর্ঘ আট বছরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। মরদোভিয়া সংস্কৃতির প্রতি সম্মান দেখাতে স্টেডিয়ামের আকৃতি উপবৃত্তাকার এবং গোলাপি, লাল ও সাদা রঙ বিশিষ্ট। বিশ্বকাপ শেষে মাঠের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হবে। দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৪ হাজার থেকে নেমে আসবে ২৫ হাজারে। বিশ্বকাপের চারটি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই ভেন্যুতে। টুর্নামেন্ট শেষে এটি হবে এফ মরদোভিয়া ক্লাবের ঘরের মাঠ।
ম্যাচের সূচি
১৬ জুন - পেরু বনাম ডেনমার্ক
১৯ জুন - কলম্বিয়া বনাম জাপান
২৫ জুন - ইরান বনাম পর্তুগাল
২৮ জুন - পানামা বনাম তিউনিসিয়া
কালিনিনগ্রাদ স্টেডিয়াম
২০১৮ বিশ্বকাপের নতুন স্টেডিয়াম এটি। ভেন্যু পুরোপুরি প্রস্তুত করতে সময় লেগেছে দুই বছর। রাশিয়ার মূল ভূখন্ডের বাইরে পোল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল ও বালটিক সমুদ্রের পাশ্ববর্তী অকটিয়ারসকি দ্বীপে এর অবস্থান। বিশ্বকাপ শেষে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাল্টি-পারপাস ভেন্যুতে পরিণত হবে কালিনিনগ্রাদ শহরের স্টেডিয়ামটি। ধারণক্ষমতা ৩৫ হাজার থেকে কমে দাঁড়াবে ২৫ হাজার। এফসি বালটিকা ক্লাবের নতুন হোম ভেন্যু হবে কালিনিনগ্রাদ স্টেডিয়াম।
ম্যাচের সূচি
১৬ জুন - ক্রোয়েশিয়া বনাম নাইজেরিয়া
২২ জুন - সার্বিয়া বনাম সুইজারল্যান্ড
২৫ জুন - স্পেন বনাম মরক্কো
২৮ জুন - ইংল্যান্ড বনাম বেলজিয়াম
ভলগোগ্রাদ অ্যারেনা
বিশ্বকাপের জন্য ভলগোগ্রাদ অ্যারেনা সম্পূর্ণ নতুন নির্মিত স্টেডিয়াম। ভোলগা নদীর তীরে অবস্থিত মাঠটির ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। ২০১৫ সালে এফসি রোটোর ক্লাবের পুরনো সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম ভেঙে এটি তৈরি করা হয়। এ বছর শেষ হয়েছে নির্মাণকাজ। স্টেডিয়ামের বাইরে শোভা পাচ্ছে বিজয় দিবসের আতশবাজির প্রতিচ্ছবি ও বীর সৈনিকের মূর্তি। বিশ্বকাপ শেষে ভলগোগ্রাদ অ্যারেনাকে নিজেদের ঘরের মাঠ হিসেবে বুঝে পাবে এফসি রোটোর।
ম্যাচের সূচি
১৮ জুন - তিউনিসিয়া বনাম ইংল্যান্ড
২২ জুন - নাইজেরিয়া বনাম আইসল্যান্ড
২৫ জুন - সৌদি আরব বনাম মিশর
২৮ জুন - জাপান বনাম পোল্যান্ড ত
লুঝনিকি স্টেডিয়াম
রাশিয়ার সর্ববৃহৎ ও জাতীয় স্টেডিয়াম লুঝনিকি। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ ও ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে এই মাঠে। প্রথম দিন সৌদি আরবকে আতিথ্য দেবে স্বাগতিকরা। রাজধানী মস্কোতে অবস্থিত ভেন্যুটিতে একসঙ্গে ৮০ হাজার দর্শক ম্যাচ উপভোগ করতে পারবেন। ১৯৫৬ সালে স্টেডিয়ামটির গেট খুলে দেয়া হয়। বিশ্বকাপ সামনে রেখে এর ধারণক্ষমতা বাড়াতে ২০১৩ সালে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল। তুলে ফেলা হয় অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক। পুরো স্টেডিয়াম নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মাঠে প্রবেশ করলেই চোখ আটকে যাবে চোখ ধাঁধানো গ্যালারি আর সবুজ ঘাসে। ঝলমলে আলোয় মুড়িয়ে দেয়া হয়েছে স্টেডিয়ামের বাইরে অংশ। বিশ্বকাপ শেষে আবারো রাশিয়ার সব জাতীয় খেলার মূল ভেন্যুতে পরিণত হবে লুঝনিকি স্টেডিয়াম। মস্কোভা নদীর বাঁকে জন্মানো সুগভীর তৃণক্ষেত্র থেকে ‘লুঝনিকি’ নামটির উৎপত্তি।
ম্যাচের সূচি
১৪ জুন - রাশিয়া বনাম সৌদি আরব
১৭ জুন - জার্মানি বনাম মেক্সিকো
২০ জুন - পর্তুগাল বনাম মরক্কো
২৬ জুন - ডেনমার্ক বনাম ফ্রান্স
১ জুলাই - শেষ ষোলোর তৃতীয় ম্যাচ
১১ জুলাই - দ্বিতীয় সেমিফাইনাল
১৫ জুলাই - ফাইনাল
স্পার্তাক স্টেডিয়াম
শুধুমাত্র মস্কো শহরে দুইটি ভেন্যু রাখা হয়েছে। ২০১৪ সালে নির্মিত হয় স্পার্তাক স্টেডিয়াম। এটি রাশিয়ান প্রিমিয়ার লীগের দল স্পার্তাক মস্কোর ঘরের মাঠ। ২০১৭ ফিফা কনফেডারেশন্স কাপে এই মাঠটি ব্যবহৃত হয়েছিল। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। স্টেডিয়ামের সম্মুখভাগে ছোটছোট হীরা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে স্পার্তাকের লোগো। এটি পরিবর্তিতও হতে পারে, যা নির্ভর করবে কোন দল খেলছে তার ওপর। এই স্টেডিয়ামটি ২০১০ সালের অক্টোবরে ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে উন্মুক্ত হয় দর্শকদের জন্য।
ম্যাচের সূচি
১৬ জুন - আর্জেন্টিনা বনাম আইসল্যান্ড
১৯ জুন - পোল্যান্ড বনাম সেনেগাল
২৩ জুন - বেলজিয়াম বনাম তিউনিসিয়া
২৭ জুন - সার্বিয়া বনাম ব্রাজিল
৩ জুলাই - শেষ ষোলোর অষ্টম ম্যাচ
সেইন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়াম
রাশিয়ার অন্যতম আধুনিক স্টেডিয়াম এটি। ২০১৭ কনফেডারেশন্স কাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল ম্যাচ হয়েছিল এই মাঠে। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সেইন্ট পিটার্সবার্গে ক্রেস্তভস্কি দ্বীপের পশ্চিত অংশে স্টেডিয়ামটির অবস্থান। বিশ্বকাপ শেষে জেনিত সেইন্ট পিটার্সবার্গের ঘরের মাঠটিতে আগের মতোই কনসার্ট আয়োজন ও অন্যান্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলবে। ২০২০ ইউয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের (ইউরো) ভেন্যু তালিকায় রয়েছে এটি। ধারণক্ষমতা ৬৭ হাজার। গত বছর এই স্টেডিয়াম সংস্কার করা হয়েছিল।
ম্যাচের সূচি
১৫ জুন - মরক্কো বনাম ইরান
১৯ জুন - রাশিয়া বনাম মিশর
২২ জুন - ব্রাজিল বনাম কোস্টারিকা
২৬ জুন - নাইজেরিয়া বনাম আর্জেন্টিনা
৩ জুলাই - শেষ ষোলোর সপ্তম ম্যাচ
১০ জুলাই - প্রথম সেমিফাইনাল
১৪ জুলাই - তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ
ফিস্ট স্টেডিয়াম
সোচি শহরে ২০১৪ শীতকালীন অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল ফিস্ট স্টেডিয়াম। উদ্বোধনী ও সমাপনি অনুষ্ঠান হয়েছিল এখানে। পরে বিশ্বকাপের জন্য বিশেষভাবে পুনর্নির্মিত হয়। ভেন্যুটির নামকরণ করা হয়েছে মাউন্ট ফিস্টের নামানুসারে। দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৮ হাজার। বিশ্বকাপের সময় সোচিতে অনুশীলন ক্যাম্প করবে রাশিয়া।
ম্যাচের সূচি
১৫ জুন - পর্তুগাল বনাম স্পেন
১৮ জুন - বেলজিয়াম বনাম পানাম
২৩ জুন - জার্মানি বনাম সুইডেন
২৬ জুন - অস্ট্রেলিয়া বনাম পেরু
৩০ জুন - শেষ ষোলোর দ্বিতীয় ম্যাচ
৭ জুলাই - চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনাল
সামারা অ্যারেনা
২০১৮ বিশ্বকাপের জন্য চার বছর আগে সামার শহরে স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। শেষ হয় এ বছর। গত এপ্রিলে ফিফার হাতে মাঠটি বুঝিয়ে দেয় আয়োজকরা। স্টেডিয়ামের নকশায় মহাকাশকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কাচের গম্বুজ সদৃশ ভেন্যুটিতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশ প্রোগ্রামের প্রতি সম্মান দেখানো হয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচ রয়েছে সামারা অ্যারেনায়। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপ শেষে এটিকে ঘরের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করবে এফসি ক্রিলিয়া সভেতোভ।
ম্যাচের সূচি
১৭ জুন - কোস্টারিকা বনাম সার্বিয়া
২১ জুন - ডেনমার্ক বনাম অস্ট্রেলিয়া
২৫ জুন - উরুগুয়ে বনাম রাশিয়া
২৮ জুন - সেনেগাল বনাম কলম্বিয়া
২ জুলাই - শেষ ষোলোর পঞ্চম ম্যাচ
৭ জুলাই - তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল
কাজান অ্যারেনা
কাজান শহরের এই স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয়েছিল ২০১৩ গ্রীষ্মকালীন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের জন্য। প্রতিযোগিতা শেষে প্রস্তুত করা হয় ফুটবল মাঠ। স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। এর নকশা করেছেন ইংল্যান্ডের এমিরেটস স্টেডিয়াম ও ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের স্থপতি। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপ শেষে রুবিন কাজানের ঘরের মাঠের আগের মতোই কনসার্ট, বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।
ম্যাচের সূচি
১৬ জুন - ফ্রান্স বনাম অস্ট্রেলিয়া
২০ জুন - ইরান বনাম স্পেন
২৪ জুন - পোল্যান্ড বনাম কলম্বিয়া
২৭ জুন - দক্ষিণ কোরিয়া বনাম জার্মানি
৩০ জুন - শেষ ষোলোর প্রথম ম্যাচ
৬ জুলাই - দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল।
নিঝনি নভগোরদ স্টেডিয়াম
তিন বছর সংস্কারের পর বিশ্বকাপের জন্য সদ্য নির্মিত স্টেডিয়ামটিতে ছয়টি ম্যাচ আয়োজিত হবে। নিঝনি নভগোরদ শহরের মানুষ দইটি নকআউট পর্বের ম্যাচ উপভোগ করতে পারবেন। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপ শেষে এই স্টেডিয়াম হবে দ্বিতীয় স্তরের ক্লাব অলিম্পিয়েটস নিঝনি নভগোরদের হোম গ্রাউন্ড।
ম্যাচের সূচি
১৮ জুন - সুইডেন বনাম দক্ষিণ কোরিয়া
২১ জুন - আর্জেন্টিনা বনাম ক্রোয়েশিয়া
২৪ জুন - ইংল্যান্ড বনাম পানামা
২৭ জুন - সুইজারল্যান্ড বনাম কোস্টারিকা
১ জুলাই - শেষ ষোলোর চতুর্থ ম্যাচ
৬ জুলাই - প্রথম কোয়ার্টার ফাইনাল
রোস্তভ অ্যারেনা
২০১৮ বিশ্বকাপের সম্পূর্ণ নতুন স্টেডিয়াম রোস্তভ অন ডন শহরের রোস্তভ অ্যারেনা। পাশের ডন নদীর আদলে করা হয়েছে স্টেডিয়ামের ছাদের নকশা। গ্যালারি থেকে দর্শকরা নদীয় সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন। এই স্টেডিয়ামে তৈরি করতে সময় লেগেছে চার বছর। ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। বিশ্বকাপের পর এফসি রোস্তভ তাদের হোম ম্যাচগুলো এই মাঠেই খেলবে।
ম্যাচের সূচি
১৭ জুন - ব্রাজিল বনাম সুইজারল্যান্ড
২০ জুন - উরুগুয়ে বনাম সৌদি আরব
২৩ জুন - দক্ষিণ কোরিয়া বনাম মেক্সিকো
২৬ জুন - আইসল্যান্ড বনাম ক্রোয়েশিয়া
২ জুলাই - শেষ ষোলোর ষষ্ঠ ম্যাচ।
একাতেরিনবার্গ অ্যারেনা
রাশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ফুটবল ক্লাব এফসি উরালের ঘরের মাঠ একাতেরিনবার্গ অ্যারেনা। নির্মিত হয়েছিল ১৯৫৩ সালে। এরপর বেশ কয়েকবার সংস্কার কাজ করা হয়। সবশেষ ২০১৮ বিশ্বকাপের জন্য গত তিন বছর বিশেষ সংস্কার করে আয়োজকরা। আগের ২৫ হাজার ধারণক্ষমতা বাড়াতে গ্যালারির একটি স্ট্যান্ড উঠে গেছে স্টেডিয়ামের ছাদের উপর পর্যন্ত। এখন একসঙ্গে ৩৫ হাজার দর্শক একসঙ্গে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। ভেন্যুটি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচ আয়োজন করবে। মোহাম্মদ সালাহর মিশরের মুখোমুখি হবে লুইস সুয়ারেজের উরুগুয়ে।
ম্যাচের সূচি
১৫ জুন - মিশর বনাম উরুগুয়ে
২১ জুন - ফ্রান্স বনাম পেরু
২৪ জুন - জাপান বনাম সেনেগাল
২৭ জুন - মেক্সিকো বনাম সুইডেন
মরদোভিয়া অ্যারেনা
মস্কোর ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে মরদোভিয়ার সারান্সকে অবস্থিত মরদোভিয়া অ্যারেনা। সারান্সক শহরের মাঠটির দীর্ঘ আট বছরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। মরদোভিয়া সংস্কৃতির প্রতি সম্মান দেখাতে স্টেডিয়ামের আকৃতি উপবৃত্তাকার এবং গোলাপি, লাল ও সাদা রঙ বিশিষ্ট। বিশ্বকাপ শেষে মাঠের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হবে। দর্শক ধারণক্ষমতা ৪৪ হাজার থেকে নেমে আসবে ২৫ হাজারে। বিশ্বকাপের চারটি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই ভেন্যুতে। টুর্নামেন্ট শেষে এটি হবে এফ মরদোভিয়া ক্লাবের ঘরের মাঠ।
ম্যাচের সূচি
১৬ জুন - পেরু বনাম ডেনমার্ক
১৯ জুন - কলম্বিয়া বনাম জাপান
২৫ জুন - ইরান বনাম পর্তুগাল
২৮ জুন - পানামা বনাম তিউনিসিয়া
কালিনিনগ্রাদ স্টেডিয়াম
২০১৮ বিশ্বকাপের নতুন স্টেডিয়াম এটি। ভেন্যু পুরোপুরি প্রস্তুত করতে সময় লেগেছে দুই বছর। রাশিয়ার মূল ভূখন্ডের বাইরে পোল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল ও বালটিক সমুদ্রের পাশ্ববর্তী অকটিয়ারসকি দ্বীপে এর অবস্থান। বিশ্বকাপ শেষে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাল্টি-পারপাস ভেন্যুতে পরিণত হবে কালিনিনগ্রাদ শহরের স্টেডিয়ামটি। ধারণক্ষমতা ৩৫ হাজার থেকে কমে দাঁড়াবে ২৫ হাজার। এফসি বালটিকা ক্লাবের নতুন হোম ভেন্যু হবে কালিনিনগ্রাদ স্টেডিয়াম।
ম্যাচের সূচি
১৬ জুন - ক্রোয়েশিয়া বনাম নাইজেরিয়া
২২ জুন - সার্বিয়া বনাম সুইজারল্যান্ড
২৫ জুন - স্পেন বনাম মরক্কো
২৮ জুন - ইংল্যান্ড বনাম বেলজিয়াম
ভলগোগ্রাদ অ্যারেনা
বিশ্বকাপের জন্য ভলগোগ্রাদ অ্যারেনা সম্পূর্ণ নতুন নির্মিত স্টেডিয়াম। ভোলগা নদীর তীরে অবস্থিত মাঠটির ধারণক্ষমতা ৪৫ হাজার। ২০১৫ সালে এফসি রোটোর ক্লাবের পুরনো সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম ভেঙে এটি তৈরি করা হয়। এ বছর শেষ হয়েছে নির্মাণকাজ। স্টেডিয়ামের বাইরে শোভা পাচ্ছে বিজয় দিবসের আতশবাজির প্রতিচ্ছবি ও বীর সৈনিকের মূর্তি। বিশ্বকাপ শেষে ভলগোগ্রাদ অ্যারেনাকে নিজেদের ঘরের মাঠ হিসেবে বুঝে পাবে এফসি রোটোর।
ম্যাচের সূচি
১৮ জুন - তিউনিসিয়া বনাম ইংল্যান্ড
২২ জুন - নাইজেরিয়া বনাম আইসল্যান্ড
২৫ জুন - সৌদি আরব বনাম মিশর
২৮ জুন - জাপান বনাম পোল্যান্ড ত