এক্সক্লুসিভ

দাম বেড়েছে চাল-পিয়াজের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

৩০ জুন ২০১৮, শনিবার, ৯:০১ পূর্বাহ্ন

রাজধানীতে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি সব ধরনের চালের দাম ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, চাতাল থেকে দাম বাড়িয়ে দেয়ায় বাধ্য হয়ে চালের দাম বাড়িয়েছেন তারাও। এদিকে বাড়তে শুরু করেছে পিয়াজের দরও। খুচরা বাজারে দেশি পিয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। তবে, অপরিবর্তিত আছে আমদানি করা পিয়াজের দাম। অন্যদিকে সব ধরনের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কিছুটা চড়া। এর মধ্যে কাঁচা মরিচের কেজি ১৪০ আর টমেটো ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর কাওরান বাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। ঈদের ছুটির পরে বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। খুচরা বাজারগুলোয় প্রায় সব দোকান খুলেছেন দোকানিরা। ক্রেতার ভিড় বাড়ায় বেচাকেনা আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে।
বাজারে মোটা চাল মান ভেদে ৪০ থেকে ৪৮ টাকা ও চিকন চাল ৫৮ থেকে ৬২ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে। জানা গেছে, গত বছর বন্যার আগে মোটা চালের কেজি ছিল ৩৪ থেকে মান ভেদে ৩৮ টাকা ও চিকন চালের কেজি ছিল ৪০ থেকে ধরন ভেদে ৪৪ টাকা। বন্যার পর মোটা চালের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮ থেকে ৬৪ টাকাতে উঠে। আর চিকন চাল ৬৫ থেকে মান ভেদে ৭০ টাকায় উঠে। কিন্তু ক্ষতি সামাল দিতে যে পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে তাতে চালের দাম কমার কথা থাকলেও আগের দামে আর ফিরে আসেনি। বাজারে মোটা স্বর্ণা চালের দাম কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৮ থেকে ৪২। পাইজাম ৫০ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হলেও আগের সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬২ টাকা এবং মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা দরে। চাল বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার পর গড় ৬ থেকে ৭ মাসে চালের দাম যেটুকু কমেছিল গত এক মাসে চালের দাম আবার কিছুটা বেড়েছে। এদিকে বাজেট উপস্থাপনের সময় চাল আমদানির উপর ২৮ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব কারণে চালের দাম আরো বাড়ার আভাস দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এদিকে বাজারে বাড়তে শুরু করেছে পিয়াজের দর। সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে দেশি পিয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজির দাম এখন মানভেদে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। তবে, আমদানি করা ভারতীয় পিয়াজের দাম পরিবর্তন হয়নি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। কাওরান বাজারের পিয়াজ ব্যবসায়ী সেলিম, এখন সংরক্ষণ করা পিয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ কারণে মোকামে পিয়াজের সরবরাহ কম থাকায় দর বাড়ছে। খুচরা পিয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়লেও পাইকারিতে দেশি পিয়াজের দাম ২ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পিয়াজের দাম বাড়েনি। পাইকারিতে প্রতি কেজি ২২ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ঈদুল ফিতরের পর চলতি সপ্তাহে সব ধরনের সবজির সরবরাহ বাড়লেও রোজার তুলনায় প্রায় সব সবজির দাম চড়া। সবচেয়ে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের, ব্রয়লার মুরগির দামের সমান।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৫০ টাকা কেজি। অপরদিকে ব্রয়লার মুরগিও বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা কেজি। আড়তে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। আর টমেটোর মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। এখন যে টমেটো বিক্রি হচ্ছে তা মজুত করে রাখা। যে কারণে দাম বেড়েছে। তবে, অধিকাংশ সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিংগা, বেগুন, কাকরোল, ঢেঁড়স, করলাসহ প্রায় সব সবজিই বাজারে ভরপুর। বাজার ও মান ভেদে প্রতিকেজি চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা রোজার সময়ে ছিল ৪০-৫০ টাকা। আর রোজায় ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুন, ঝিঙা ও ধুন্দলের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। এ দুটি সবজি ঈদের আগের মতোই ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে, দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে পটল, ঢেঁড়স, করলা, বরবটি। পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে। রোজায় এই সবজির দাম ছিল ৩০-৪০ টাকা কেজি। ঢেঁড়সের দাম বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা কেজি। অথচ ঈদের আগে এই সবজিটির দাম ছিল ৩০-৪০ টাকা কেজি। আর ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম বেড়ে হয়েছে ৪০-৫০ টাকা। ৪০-৫০ টাকা কেজির বরবটির দাম বেড়ে হয়েছে ৬০-৭০ টাকা। এদিকে রোজার মধ্যে বাজারে সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হওয়া কাকরোল ও পেঁপের দাম বেশ কমে গেছে। রোজায় ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া কাকরোলের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৪০-৪৫ টাকা। আর ৭০-৭৫ টাকা কেজির পেঁপের দাম কমে এখন হয়েছে ২৫-৩০ টাকা। রোজার মধ্যে ৫-১০ টাকা আটি বিক্রি হওয়া লাল শাক, সবুজ ডাটা শাক, পাট শাক, কলমি শাকের দাম বেড়ে ১০-১৫ টাকা আঁটি হয়েছে। ২০-২৫ টাকা আঁটি বিক্রি হওয়া পুঁইশাক ও লাউ শাকের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০-৩৫ টাকা। রোজার মাসে ২০০-২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া লাল কক মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সাদা বয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে ১৬০-১৭০ টাকা হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status