ঈদ আনন্দ ২০১৮

স্বাস্থ্যকথা

উড়াল দিন সুখে সুস্থদেহে

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী

২৮ জুন ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৪:৪৪ পূর্বাহ্ন

প্লেনে উঠার আগে প্রস্তুতি নিন উড়াল ভ্রমণে। সুস্থ থাকার জন্য উড়াল ভ্রমণে সুস্থ থাকা নির্ভর করে পূর্বে ভালো প্রস্তুতির ওপর। সে ব্যাপারে বাস্তব অভিজ্ঞতা যাদের তাদের কিছু পরামর্শ।

শূন্য একটি পানির বোতল নিরাপত্তাসীমা দিয়ে নিয়ে উঠুন প্লেনে।
আজকাল, বিজন্যাস ক্লাসযাত্রী নাহলে বারবার পানীয় সরবরাহ সেবা নিয়মিত পাওয়া কঠিন উড়াল ভ্রমণে। অথচ অসুস্থ হওয়া ঠেকাতে আকাশ ভ্রমণের আগে ও ভ্রমণ সময়ে শরীরকে জলপূর্ণ রাখা। কারণ, বায়ুচাপ নিয়ন্ত্রিত কেবিনে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকাতে শরীরের শ্লেষ্ম ঝিল্লি শুকিয়ে যায় তাই রোগজীবাণু বেরিয়ে আসা কঠিন হয়। তাই নিরাপত্তা বলয় তরল পদার্থ আনতে না দিলেও শূন্য বোতল নেয়ার অনুমতি দিতে পারে। তাই নিরাপত্তা প্রাচীর পার হওয়ার পর বোতল বিশুদ্ধ পানিভর্তি করে নিন, আর উড়ালের আগে পানি পান করে সজল হয়ে নিন। আর উড়ালের সময় আবার পান করুন। প্লেনে উঠে ফ্লাইট এটেন্ডেন্টকে পানির বোতলটি পূর্ণ করতে বলুন, লজ্জিত হবেন না বলতে।


প্লেনে বোর্ড করার আগে ধৌতালয় ব্যবহার করুন সতর্কতার সঙ্গে। বেশিরভাগ মানুষ জানেন যে পাবলিক টয়লেট সিট স্পর্শ করে ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে অনেকে জানেন না যে ফ্লাশ করলেও রোগ জীবাণু ছড়াতে পারে। টয়লেটের যত কাছে দাঁড়াবেন তত বেশি বিপদ। গবেষণায় দেখা গেছে টয়লেট বাটিতে, ফ্লাশের পানিতেও আশেপাশে আছে অসংখ্য জীবাণু। বোর্ড করার আগে তাই জনশৌচাগার এবং প্লেনে শৌচাগার যতকম সম্ভব ব্যবহার করুন। ফ্লাশ করার আগে টয়লেটের ঢাকনা, হাতল ব্যবহারে কাগজের টাওয়েল ব্যবহার করুন। ফ্লাশ করার পর হাত খুব ভালো করে ধূতে হবে। পানির নল বন্ধ করতে কাগজের টাওয়েল ব্যবহার করুন।


চোখ শুকিয়ে যাতে না যায়
গবেষণায় দেখা গেছে, উড়োজাহাজের কেবিনে বদ্ধ এলাকায় আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকা আকাশ পথে ভ্রমণে অসুস্থতার একটি কারণ। চোখ যখন শুষ্ক হয়ে যায়, তখন অনেকে চোখ কচলান, ভালো লাগে বলে। কিন্তু চোখ এভাবে কচলালে ঠাণ্ডা সর্দির ভাইরাস ছড়ায়। হাতে জীবাণু থাকলে অশ্রুনালী দিয়ে এগুলো চলে যায় গলার পেছনে নামাগ লবিল এলাকায়।
ঠাণ্ডা সর্দি ভাইরাস
বারবার হাত ধোবেন, চোখে হাত ছোঁয়াবেন না। কনট্যাক্ট লেন্স পরে থাকলে বোর্ডিংয়ের আগে খুলে ফেলতে হবে। প্লেনে চশমা পরতে হবে। লেন্স পরে কখনও ঘুমাবেন না, কারণ এতে চোখ আরও শুকিয়ে যাবে।
একটি পাতলা কম্বল ও বালিস সঙ্গে নেবেন। অনেক এয়ারলাইন কম্বল সরবরাহ করে না, যেগুলো করে সেগুলোতে থাকতে পারে অসংখ্য জীবাণু। বস্তুত H1 N1  ফ্লু ভীতিতে অনেক এয়ারলাইন উড়াল ভ্রমণে কম্বল ও বালিশ দেয় না, ঠাণ্ডা সর্দি এড়ানোর জন্য।
তাই হাতের ব্যাগে সঙ্গে নিতে হবে হাল্কা কম্বল বা গরম পোশাক। একটি ঘাড়ের বালিশও সঙ্গে নিতে হবে। পরিসর কম থাকলে ফোলানো যায় এমন চুপসানো বালিশ ও সঙ্গে নিতে হবে। নিজের বালিশ সঙ্গে নিলে জীবাণুমুক্ত থাকা সম্ভব, আর পিঠে ও ঘাড়ে ও ব্যথা হবে না। সঙ্গে বালিশের ওসাড় নিলে আরো ভালো।
বোর্ড করার আগে স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নিলে ভালো
একটি তথ্য: সম্প্রতি LSQ স্কাই শেক, ডেনমার্কভিত্তিক এয়ারলাইন খাদ্য সরবরাহকারী যা বিশ্বজুড়ে বছরে ৪০৫ মিলিয়ন খাবার সরবরাহ করে ৩০০টি এয়ারলাইনে, এদেরকে স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা শর্ত লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
LSQ রান্নাঘরে ও খাদ্য সরবরাহ এলাকায় রান্নাঘরের মেঝে, তেলাপোকা, মাছি, পিপড়া মৃত ও জীবিত নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে এতে রয়েছে ভয়ঙ্কর জীবাণু। কেবল LSQ আকাশ রাঁধুনেই নয় এমনি আরও অনেক খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থা যারা গত দু’বছর আকাশ পথে খাবার সরবরাহ করছে এরাও একই দোষে দুষ্ট।
নিজের খাবার সঙ্গে নিতে হবে বা বিমানবন্দর রেস্তোরাঁ থেকে স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করে নিতে হবে। বিমানবন্দর রেস্তোরাঁতে সাধারণ স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়া যায়, এমনকি ফাস্টফুড রেস্তোরাঁয়ও তা পাওয়া যায়। যেসব ডিশে আছে প্রচুর সবজি কচি মোরগের মাংস তাই বেছে নেবেন। খেলে ঘুমও হবে ভালো।
মদের দোকান বা মধ্যপান থেকে দূরে থাকুন। এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে মদ্যপানের বিলাস অনেকে পছন্দ করেন তবে তা বর্জন করলে ভালো, তাহলে সুস্থ দেহে পৌঁছাতে পারবেন গন্তব্যস্থলে। মদ্যপানের উদ্দেশ্য যদি থাকে মনও শরীরকে শিথিল করা, ঘুমানো তাহলে অন্য স্বাস্থ্যকর বিকল্প আছে। আছে মেলাটনিন বড়ি, প্রশান্তিদায়ক ওষুধ।

কানে ব্যথা প্রতিরোধ করুন
আকাশ পথে ভ্রমণে আকাশপতের ভেতরে বায়ুচাপের পরিবর্তন, বিশেষ করে আরোহণ ও অবতরণের সময়, অনেকের কানে বেশ ব্যথা করে। যখন শ্রুতিনালী কানের পর্দার ভেতরে চাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, স্বাভাবিকভাবে মন্দিত হতে বাধা পায়, ব্যথা করে কানে। অনেকের সমস্যা হয় বেশি। চোয়ালের পেশিকে নড়াচড়া করালে শ্রুতিনালী খুলে যায়। তাই চোয়াল উঠান ও নামান বারবার। তাই শক্ত ক্যান্ডি, লজেন্স সঙ্গে নিলে প্লেন উঠানামার সময় মুখে দিয়ে চুষলে সমস্যা হবে না। যদি হাই তোলেন তাহলেও চাপ কমে যাবে। বারবার সমস্যা হলে ফিল্টাবড ইয়ারপ্লান ব্যবহার করতে পারেন।
নাক বন্ধ, গলা শুকানোর ওষুধ সঙ্গে নিতে পারেন প্রয়োজনে।
সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৩০,০০০-৩৫,০০০ ফুট উঁচুতে বেশির ভাগ বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ উড়াল দেয়, সেখানে আবহাওয়া ভয়ানক শুষ্ক, উড়োজাহাজের ভেতরে কেবিনে বায়ূর পুনঃসঞ্চালন আবহাওয়াকে আরও শুষ্ক করে। আর্দ্রতা কম হওয়ায় নাক ও মুখের টিসু থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়। কেউ ঠাণ্ডা সর্দি এলার্জিতে নাকমুখ শুষ্ক থাকলে অবস্থা হয় আরও শোচনীয়।
সঙ্গের ব্যাগে নিন এক বোতল ন্যাজাল স্যালাইন স্প্রে। যা উড়াল দেবার আগে ব্যবহার করলে নাকের ভেতরে মালকা ঝিল্লি আর্দ্রতা পাবে। এলার্জি থাকলে ওষুধ খেলে ভালো।

আকাশ ভ্রমণের আগে প্রাতঃরাশে যেন থাকে দধি
ল্যাকটিক এসিড কালচার করে দুধ থেকে হয় দধি। অন্য দুধজাতদ্রব্য থেকে তা আলাদা, এতে আছে স্বাস্থ্য হিতকর প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া যা পরিপাকতন্ত্র ও দেহ প্রতিরোধ তন্ত্রকে শক্তিশালী করে। লোফ্যাট দধি এক কাপ প্রতিদিন খেলে ঠাণ্ডা সর্দির সম্ভাবনা কমে ২৫%।
ঘরেপাতা দধি ভালো। ভ্রমণের কয়েকদিন আগে থেকে প্রাতঃরাশে যেন অবশ্য থাকে দধি। দধির ঘোল বা মাঠা খুব ভালো পানীয় উড়ালের আগে। ট্রানজিটেও খেতে পারেন দধি, রেস্তরাঁ থেকে। ভ্রমণের আগে আগে ক’দিন খাবেন ফল ও সবজি সমৃদ্ধ খাদ্য, পত্রবহুল সবজিও রঙ-বেরঙের ফল ও সবজি।

উড়োজাহাজে ভ্রমণে নেবেন যে যে সতর্কতা
উড়াল ভ্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। অসংখ্য মানুষ পৃথিবীজুড়ে চড়ছেন উড়োজাহাজে। ২০১৩ সালে তিন কোটি ২০ লাখ উড়াল জাহাজে ভ্রমণ করেছেন ৩০০ কোটি যাত্রী। ২০৩৪ সালে তা হতে পারে ৭০০ কোটি অনুমান। তাই দীর্ঘপথে উড়ালে কিছু যাত্রীর সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
বেশির ভাগ যাত্রীর যে ক্লান্তি এবং জেটল্যাগ। এছাড়া দীর্ঘসময় নিশ্চল থাকা আবহাওয়া ও পরিবেশের বদল, আর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে আকাশে উড়াল এসব কারণে অনেকের পায়ের শিরাতে রক্ত জমাট বাঁধে, খুব ব্যথা হয়। নানা উপসর্গ তখন পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা, লাল হয়ে যাওয়া, গরম হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া, পা উপরদিকে তুলে ফেললে ভয়ানক ব্যথা। আর ফুসফুসের রক্তনালীর রক্তের দলা আটকে গেলে প্রচণ্ড বুকব্যথা, শ্বাসকষ্ট, নাড়ি দ্রুত চলা- এসব হতেই পারে। আরও বুঝিয়ে বলি...
সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১০,০০০ মিটার উঁচুতে, বাইরের তাপ কমে আসে হিমশীতল ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বায়ুমণ্ডলের চাপ কমে ৭০%, গ্যাস চাপও অনেক কমে, কমে বাতাসের ঘনত্ব। এ রকম পরিবেশে বেঁচে থাকার উপায় নেই। বিমান পথের ভেতরে অবশ্য চাপ থাকে নিয়ন্ত্রণে, তবে আর্দ্রতা অনেক কমে যায়, শরীরে তাই পানি শূন্যতা দেখা দেয়, রক্ত হতে থাকে ঘন।
আর উড়োজাহাজে মদ্যপান করলে এবং একইস্‌সে আর্দ্রতা বাড়ে, মদ্যপান প্রস্রাব করা বাড়ায় তাই পানি শূন্যতা আরও বাড়ে। যথেষ্ট পানিও পান করা হয় না। এছাড়া দীর্ঘ সময় নিশ্চল থাকার কারণে রক্ত চলাচল কমে আসে হৃদযন্ত্রে আর নিম্নাঙ্গে শিরাগুলোতে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা অনেক বাড়ে। ইকোনমি ক্লাসে অতিস্বল্প পরিসর পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে বিশেষ করে দীর্ঘ সময় যখন উরুর উপরে অন্য পা রেখে চেপে বসে থাকা যায় না তখন পরিস্থিতি হয় খারাপ। একে বলে ‘ইকোনমি ক্লাস সিনড্রোম’ এসব কিছুর জন্য শিরার ভেতরে রক্ত জমাট বাঁধে।
তখন পায়ে প্রদাহ হয়, প্রচণ্ড ব্যথা হয়, একে বলে ‘ফ্রেবাইটিম’। অনেক সময় এর স্থানান্তরও হয়। ফুসফুসের শিরায় রক্তের দলা আটকায় পোলমোনাবি এমবোলিজম বা স্ট্রোক। তবে তা সচরাচর হয় না, হয় কদাচিৎ এই যা স্বস্তি। তবে কিছু লোকের এসব হওয়ার প্রবণতা বেশি। প্রতি ১০ লাখ লোকের মধ্যে ৪ জনে ১ জন।

ঝুঁকি কাদের
ফ্লেভাইটিস, এমবোলিজম, হার্ট এটাক হৃদছন্দের অনিয়মের ইতিহাস যাদের, ...রক্ত তরল করার ওষুধ নিচ্ছেন, তাদের ঝুঁকিতো বেশি বটে-এছাড়া ৬০ ঊর্ধ্ব যে কেউ, গর্ভবতী নারী, গর্ভনিরোধক পিল বা ইস্ট্রোজেন যারা নিচ্ছেন। গত ৮ মাসে যাদের অপারেশন হয়েছে। যাদের ক্যানসার চিকিৎসা ইচ্ছে, যাদের দেহ স্থূল, যারা খুব ধূমপান করেন, তাদের বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে।

কি কি সতর্কতা নেবেন
যাদের ঝুঁকি আছে এবং উড়াল ভ্রমণ যদি ৬ ঘণ্টার বেশি হয়, তাহলে যেসব সতর্কতা গ্রহণ করবেন:
  •  উড়াল ভ্রমণের পুরোটা সময় নিয়মিত পানি পান করতে হবে তাহলে পানিশূন্যতা এড়ানো যাবে, তাহলে রক্ত ঘন হবে না।

  •  মদ্যপান বর্জন করতে হবে (মদ্যপানে পানিশূন্যতা হয়)।
  • বারবারই পা দুটো নড়াচড়া করতে হবে (প্লেনের মধ্যে চলাচলের পথের পাশের আসনে বসা ভালো), পায়ের উপর পা চেপে বসবেন না বেশিক্ষণ, উঠে দাঁড়ান এবং মাঝে-মধ্যে হেঁটে চলে বেড়ান দু’ঘণ্টা পরপর একবার। দেখতে হবে আসলে বসলে যাতে দুটো উরু চেপে না থাকে।

  • পড়তে হবে ক্লাস ২ কমপ্রেসন সকস্‌। সকালে ঘুম থেকে উঠার আগে আর প্লেন থেকে নামার পর খুলতে হবে।

পানি পান ও হাঁটুন এবং চলে ফিরে বেড়ান/নিরাপদ হবে উড়াল ভ্রমণ

উড়াল দিন সুখে, সুস্থ দেহে
এমন এক সময় ছিল যখন প্লেনে উঠে উড়াল দেওয়া ছিল অতীব সহজ কাজ, পকেটে টাকা থাকলেই হলো। আজকাল উড়াল অভিজ্ঞতা অনেক সময় উপভোগ্য না হয়ে হয় বিপর্যয়ের অভিজ্ঞতা, সন্ত্রাস, সেফটি ও সিকিউরিটি চেক হওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা, কি নিতে পারেন সঙ্গে কি কি নিতে পারেন না এগুলো চেক করা।
এছাড়া ভ্রমণে যাওয়ার আগে মনের চাপ, শরীরে স্বাস্থ্য সমস্যাও থাকতে পারে। হাতে পায়ে ব্যথা, গোড়ালি ফোলা, ঘুমের ব্যাঘাত। ইকোনমি ক্লাস সিনড্রোম বলে একে। ডিপডেন থ্রম্বোসিস (DVT) হতে পারে সমস্যা। জেটল্যাগ সামলানোও একটি চ্যালেঞ্জ।
এমন সব অসুবিধা সত্ত্বেও অসংখ্য মানুষ প্লেনে উড়ছেন, আগের চেয়ে অনেক বেশি। গত ৩০ বছর ধরে পৃথিবীতে প্রতি বছর উড়াল ভ্রমণ বাড়ছে ৫%। উড়োজাহাজে ভ্রমণের প্রতি আমাদের এই আকর্ষণের একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন এরোস্পেস মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. বয় এল ডিহার্ট। উড়াল ভ্রমণের স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলেও ভ্রমণকারীদের জন্য এই ভ্রমণ অনেক সুবিধাও বয়ে আনে। ব্যবসা-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, জনস্বাস্থ্য এমন সব বিসয়ে অনেক সাহায্য হয় এমন ভ্রমণে। তবে আমরা কিভাবে উড়াল ভ্রমণকে করে তুলতে পারি স্বাস্থ্যকর ও স্বস্তিকর? এজন্য সংগ্রহ করা হয়েছে বেশ কিছুু পরামর্শ ভ্রমণ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক ও সরকারি পরামর্শকদের কাছ থেকে। যারা প্রায়ই ভ্রমণ করেন এদের অভিজ্ঞতাকে সম্বল করেও এসেছে কিছু পরামর্শ। কিভাবে জেটল্যাগের প্রভাব কমানো যায়, আরাম ও স্বস্তি পাওয়া যায় ভ্রমণকালে, প্লেনে কি করে ভালো ঘুমানো যায়, ব্যায়াম করা যায়, ডিভিটির ঝুঁকি কমানো যায়।

জেটল্যাগ
উড়াল ভ্রমণের কয়েকটি সময় অঞ্চল, পার করলে পার হতে পারে জেটল্যাগ, ক্লান্তি ও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে দারুণ।
আমাদের ভ্রমণের শুরুতে দেহঘড়ি দিনরাতের চক্রে অভ্যস্ত, সেই সব যেন বাঁধা। তাই আমরা যখন উড়াল ভ্রমণে বিভিন্ন সময় ও বিভিন্ন অঞ্চল দ্রুত অতিক্রম করি, আমাদের শরীর কিন্তু যে সময় যে অঞ্চলের উপরে ছিল সেইমত কাজ করতে থাকে। আমরা কতদূর ভ্রমণ করলাম এর উপর নির্ভর করে কত সময়ে শরীর নতুন অঞ্চলের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবে।
শরীরের বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন হারে খাপ খাওয়াতে পারে। যেমন পরিপাক খাপ খাওয়াতে পারে ঘুমের চেয়ে দ্রুত।
  •  ভ্রমণ শুরু করার সময় ঘড়ির কাটাকে গন্তব্যের সময় অঞ্চলে পরিবর্তন করে নিতে হবে।
  • জেটল্যাগের ফলকে কমাতে আছে পরামর্শ:
  •  যদি পশ্চিম দিকে ভ্রমণ করেন (যেমন প্যারিস থেকে ভ্যাংকুভার, বা ব্যাংকক থেকে লন্ডন), গন্তব্যে পৌঁছালে যতসময় সম্ভব জেগে থাকুন। দীর্ঘতর দিন সহ্য করা সহজ। আর ভ্রমণের আগে, সম্ভব হলে কিছুদিন রাতে ঘুমাতে যাবেন দেরিতে, ঘুম থেকে উঠবেনও দেরিতে।

  • যদি পূর্বদিকে ভ্রমণ করেন (যেমন মেক্সিকো নগরী থেকে ফ্রাংকফুট বা জোহানেসবার্গ থেকে সিডনি) প্লেনে ঘুমাতে চেষ্টা করুন, গন্তব্যস্থলে যেহেতু তখন রাত। গন্তব্যে পৌঁছালে দিনের বেলা না ঘুমাতে চেষ্টা করুন। তা না হলে নতুন সময় অঞ্চলে দেহঘড়ি খাপ খেতে হবে বেশি সময়। আর ভ্রমণের আগে কিছুদিন আগে ঘুমাবেন ও আগে উঠবেন।

  • পশ্চিমদিকে উড়াল দিয়ে এলে সকালে ঘরের বাইরে যাবার চেষ্টা করুন। প্রথম কয়েকদিন বিকেল ও সন্ধ্যা বেলা ঘরে থাকতে চেষ্টা করুন। পূর্বদিকে উড়াল দিয়ে এলে সকালের আলোকে এড়িয়ে বিকেল বেলা ঘরের বাইরে বেশি সময় থাকুন।

  • স্বল্পকালীন ভ্রমণে গেলে, যেমন এয়ারকুব কোনও সদস্যের বেলায় হতে পারে, বা ব্যবসায়ী কেউ কোনও মিটিং- এ যাচ্ছেন, তাহলে স্থানীয় সময় অঞ্চলের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। নিজ দেশের সময় অঞ্চলে এক্ষেত্রে থাকলেই ভালো।

  •  যদি বিজনেস মিটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে মিটিংয়ের একদিন বা অর্ধেক দিন আগে পৌঁছালে নিজেকে খাপ খাওয়ানো সহজ হবে, সজাগ থাকা সহজ হবে কিছু গবেষণায় দেখা যায়, নতুন সময় নতুন অঞ্চলে শোবার সময় মেলাটনিন নিম্নে ৫০ শতাংশ লোকের জন্য তা কার্যকর হয়। তবে ক্লিনিক্যাল স্টাডি করে এ কথার যথার্থতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। মেলাটনিন একটি হরমোন যা উদ্দীপিত হয় অন্ধকারে আর আলোতে এটির দমন ঘটে।

কেউ কেউ খেতে চান ঘুমের বড়ি, উড়াল ভ্রমণে ও জেটল্যাগ হলে, কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনও নয়। আর মধ্যপান তো নয়ই।

আরাম ও ঘুম :
অনেকেই প্লেনে ঘুমাতে পারেন না, আর সত্যিইতো প্লেনের ভেতর গোলমাল, শব্দ, বাচ্চাদের কান্না, জানালা দিয়ে আসা আলো (৩৫,০০০ ফুট উঁচুতে দিনের আলো খুবই ঔজ্জ্বল্য যা মনকে বিক্ষিপ্ত করতে যথেষ্ট। আর হয়তো পায়ের নিচে পরিসর কম, খুব আটঘাট, খুব শীত লাগছে, জুতো খুব আটসাট, সোজা হয়ে বসে ঘুমানো কষ্ট হবে।
এত সব অসুবিধা সত্ত্বেও খুঁজে নিতে হবে আরাম, দীর্ঘ উড়ালে ঘুম কয়েক ঘণ্টা ঘুমাতে। আছে পরামর্শ-
  •  নিজের আসন বেছে নিতে হবে, বিজোচিত যেন হয় তা। জানালার পাশের সিট, যাতে হেলান দিয়ে বসা যায়, সানশেডের উপরও থাকবে নিয়ন্ত্রণ। মানুষ টপকে যাবে না, মাঝপথ দিয়ে চলাফেরা করলেও নিজে থাকবেন তফাতে।

  •  বহির্গমন পথে আসন সারি এবং বালক হেড আসন সংরক্ষণ করার আগে ভাবুন, কারণ পায়ের জন্য বাড়তি পরিসর থাকলেও চেয়ারের হাতল উঠে না, আসন পেছন দিকে হেলেন। প্লেনের এই অঞ্চল অনেক সময় কলবরে ভবপুর থাকে, পরিবার বাচ্চা এরা সাধারণ এমন সিট সংরক্ষণ করে থাকেন।

  • শেষের সারিগুলোও তেমন। আসনগুলো পেছন দিকে হেলে না। আসনগুলো টয়লেটের কাছে হলে গোলমাল ও দুর্গন্ধ দুটোই বিব্রতকর হতে পারে।

  •  ট্রিপ এডভাইসার ‘ট্রিপশুরু’ চেক করে দেখুন, ফ্লাইট নাম্বার টোকা দিলে দেখবেন প্লেনের ভেতর এবং বিভিন্ন আসনের দোষগুণ থেকে সিট নির্বাচন করতে পারবেন।


গর্ভকালে উড়াল ভ্রমণ কেমন করে করবেন
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারী এবং তার গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সন্তানসম্ভবা মায়ের জন্য গর্ভের সন্তানের মতো মূল্যবান সম্পদ নিয়ে উড়াল ভ্রমণে যাওয়ার আগে ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞাসা করে নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করা উচিত। তাই পরবর্তী ভ্রমণের আগে যাতে নিরুদ্বেগ, শিথিল থাকা যায় সেজন্য আছে বিশেষ পরামর্শ।
জটিলতা না হলে উড়াল ভ্রমণের নিরাপদ সময় হলো গর্ভের দ্বিতীয় ত্রৈমাস। ইতোমধ্যে প্রথম ত্রৈমাসের প্রভাত পীড়ার উপসর্গ উপশম হতে থাকবে। এনার্জি মানও বেড়ে যাবে, প্রসবের ঝুঁকিও কম হবে।
বাণিজ্যিক উড়াল উড়োজাহাজ ভালো তবে ছোট এবং চাপ নিয়ন্ত্রণহীন প্লেনে চড়া বিপজ্জনক। কারণ প্লেনের ভেতরে অক্সিজেন মান কম থাকলে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে গর্ভের শিশুর ওপর।
গর্ভবতী নারীদের আকাশ ভ্রমণের ব্যাপারে যাত্রীবাহী বিমানের কিছু বিধি নিষেধ আছে। অধিকাংশ এয়ারলাইন্স ৩৮ সপ্তাহ গভধারণের পরবর্তী সময়ে চার ঘণ্টার বেশি সময় উড়াল ভ্রমণের অনুমোদন দেয় না। ২৮ সপ্তাহের গর্ভবতী হলে বা এর বেশি হলে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ বিশেষ চিকিৎসকের সার্টিফিকেট দিতে বলেন। উড়াল ভ্রমণের জন্য চাহিদা এবং বিধিনিষেধের পরিবর্তন ঘটতে পারে তাই অবকাশ যাপন এবং টিকিট ক্রয়ের আগে এয়ারলাইন্সের সঙ্গে চেক করা ভালো। ফোনে কথা বলুন।
দূরদেশে ভ্রমণের আগে ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স ভালো করে নজর করা ভালো, কারণ কিছু কোম্পানি গর্ভবতী নারীকে গর্ভের নির্দিষ্ট মাস পর্যন্ত মাত্র ইন্স্যুরেন্স করে (মাত্র ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত) আবার অন্য কোম্পানিগুলো বিদেশে শিশু জন্ম হলে এর জন্য ইন্স্যুরেন্স করে না।
সর্বশেষে গুরুত্বপূর্ণ হলো, গর্ভের যে কোনও পর্যায়ে ভ্রমণ করার আগে ডাক্তারের সঙ্গে সম্ভাব্য ঝুঁকি জটিল- উদ্বেগ নিয়ে আলাপ করে পরামর্শ নেয়া ভালো।

ভ্রমণেও ত্বক থাকুক সুস্থ
বিদেশ ভ্রমণ, স্বদেশ ভ্রমণ যাই হোক, ত্বকের সুরক্ষা প্রয়োজনীয় বিষয়। আছে কিছু পরামর্শ।

  •  দীর্ঘ উড়াল ভ্রমণে কখনও মেকআপ নেবেন না। তবে লিপস্টিক পরা যায়, যদি ময়শ্চারাইজিং হয় তাহলে বেশ ভালো।

  •  কেবিনে বাতাস খুবই শুষ্ক, তাই নিতে হবে লিপ বাম, ময়শ্চারাইজার। মুখমণ্ডলকে মিষ্টিং করে, জলীয়বাষ্প লাগিয়ে পরে ময়শ্চারাইজার লাগালে পানির অনুগুলো ত্বকের সঙ্গে মিশে যায় ভালোভাবে। প্রসাধনী আধারগুলো ছোট যেন হয় (৩ আউন্সের কম) যাতে নিরাপত্তা ব্যুহ দিয়ে সহজে যেতে পারে।

  •  প্লেনে প্রচুর পানি পান করেন। উড়াল ভ্রমণে মদ্যপান কখনো না। কারণ এতে শরীরের পানিশূন্যতা হয়।

  •  মাঝে মাঝে আসন থেকে উঠে দুই সারি আসনের ভেতরে সরুপথ ধরে হাঁটবেন। এতে রক্তে জমাট বাধা রোধ হয়। দীর্ঘভ্রমণে রক্তের জমাট বাধা একটি জটিলতা বটে।

  •  উড়াল ভ্রমণে চোখ দুটো শুকনো হয়, চটচটে হয়ে উঠা এবং চক্ষুরক্তবর্ণ হওয়া, অনেক সময় ভ্রমণের শেষে গন্তব্যে পৌঁছেও এমন হওয়া ঠেকানো যায় যদি প্রিজারভেটিভ মুক্ত চোখ পিচ্ছিল করার মতো চোখের ড্রপ সঙ্গে থাকে। সত্যিকারের অশ্রুর মতো আইড্রপ ব্যবহার আরো ভালো।

  • সুটকেসে থাকুক নিজের প্রিয় মৃদু ক্লিনজার একটি ছোট বোতলে। সঙ্গে তুলো। হাতের ব্যাগে রাখুন। লাগেজ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া সহজ, আর অপরিচিত প্রসাধনী ব্যবহার করে চোখ শুকনো হতে পারে এলার্জি হতে পারে। হোটেলের কমপ্লেমেন্টারি প্রসাধনী ব্যবহারে অনেকের চোখে-মুখে হয় এলার্জি হয় দেখা গেছে। তাই সেইসব ছোট ছোট কিউট হোটেলের সাবান ও ক্রিম থেকে সাবধান।

  •  শরীরে আমবাত বা চাকা উঠলে উপশমের জন্য কর্টিসোন ক্রিম সঙ্গে নিন।
  •  একোয়াফর হিলিং ওয়েন্টমেন্টের ছোট একটি টিউব রাখুন হ্যান্ডিব্যাগে, হাত ও ঠোঁট রক্ষার জন্য। ছোট কাটাচ্ছে তা উপশমের জন্য।

  • মোলস্কিন প্যাচ সঙ্গে নিন পায়ে হেঁটে হেঁটে কোমল পড়লে সেগুলো উপশমের জন্য।
  •  প্রিয় সানস্ক্রিন সঙ্গে নিতে ভুলবেন না। মেঘলা দিনে আকাশ থেকে আসে অতিবেগুণী রশ্মি, ত্বককে ধ্বংস করার জন্য।


সুন্দর মুখের 
জয় হোক
সমতলে ভ্রমণ করুন বা সমুদ্রপৃষ্ট থেকে অনেক উঁচুতে আকাশ ভ্রমণ করুন সুন্দর তো দেখাতেই হবে। সুন্দর মুখ নিয়েও করা যাবে ভ্রমণ।
তাই সেজন্য রয়েছে ডিউটি ট্রাভেল টিপস্‌। লেখাটি নারীদের উদ্দেশে বেশি প্রযোজ্য বটে।
  • সঙ্গে নিন ময়েশ্চরাইজার :

ভ্রমণের একদিন আগে বেশ গাঢ় করে ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করুন। উড়োজাহাজের ভেতরে কেবিনে বায়ুচাপে বা এয়ারকনডিশনে যে পানি শূন্যতা হয় তা রোধ হয়।
  •  খোঁপা উঁচু করে বাঁধুন : উঁচু খোপা পড়লে দীর্ঘ ভ্রমণে অনেক সুবিধে। সঙ্গে চুল ব্রাশ ও থাকবে।

  •  মিনারেল ওয়ারটার মুখে ছিটিয়ে নিতে হয় : ভ্রমণে একটু টাচ্‌্‌আপ দেওয়ার জন্য বাড়তি ফাউন্ডেশন বা টাচ প্রয়োজন নাই, মুখে একটু মিনারেল ওয়াটারের ছিটে দিন, সঙ্গে একটু ময়েশ্চারাইজার।

  •  নিউড কালার বেছে নিন। উজ্বল রঙের নেইল পলিশ ভ্রমণে ব্যবহার না করা ভালো। সহজেই নষ্ট হয়ে যায়, চেহারা কেমন দেখাবে বিচ্ছিরি। বরং নিউট্রাল রং, বা নিউড রঙের কিছু যা একটু থেবড়ে গেলেও চোখে পড়বে না।

ক্লিনজার নিয়ে নিন!
ত্বক পরিচর্যকার জন্য একটি উপকরণও যদি নেন ঘর থেকে, তাহলে ক্লিনজার নিন সঙ্গে, কারণ ক্লিনজার বদলালে চেহারাটাই বিচ্ছিরি দেখাবে।
মুখমণ্ডল থেকে দূরে রাখুন হাত দুটো
অসুখ এড়াতে হলে ভ্রমণের সময় মুখ থেকে হাত দুটো দূরে রাখুন, কারণ হাতে থাকে অনেক জীবাণু যার কারণে হতে পারে ত্বকের অনেক সমস্যা। মেকআপ প্রয়োগের আগে এন্টিব্যাকটেরিয়াল হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করুন, হাত দুটো পরিচ্ছন্ন করে নিন।
চোখের মেকআপ কখনও না: কাসক্‌ারা এবং ক্রিমি আই শ্যাডো ব্যবহার করা যাবে না। অনেকে ভ্রমণে একটু নিদ্রা যান তখন এসব মেকআপ লেপ্টে যা বিচ্ছিরি দেখায়।
কেবলই লিপস্টিক নয়: অনেকে দীর্ঘস্থায়ী লিপস্টিক ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। এতে বরং ঠোঁট শুকিয়ে যায়, তাই প্রয়োজন লিপ গ্লস। ভ্রমণের পুরো সময় লিপ গ্লস ব্যবহার করুন, ঠোঁট সতেজ দেখাবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status