বিশ্বজমিন

বিশ্বকাপের কুখ্যাত ১০ প্রতারণা (পর্ব-১)

মানবজমিন ডেস্ক

২৫ জুন ২০১৮, সোমবার, ১০:৫০ পূর্বাহ্ন

গ্রুপ পর্বে কোস্টারিকাকে হয়তো ২-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল। তবে সবাই আলোচনা করছেন দলটির তারকা স্ট্রাইকার নেইমারের ডাইভ নিয়ে। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে গোল করে ব্রাজিল। তার আগে গোলশূন্য থাকা অবস্থায় কোস্টারিকার ডি-বক্সের ভেতর নেইমার বেশ নাটকীয়ভাবে পড়ে যান! রেফারিও বিভ্রান্ত হয়ে দিয়ে দেন পেনাল্টি! তবে কোস্টারিকার জোরালো আপিলে ভিডিও অ্যাসিস্টিং রেফারির সহায়তা নেন রেফারি। সেখানে দেখা যায় তেমন কোনো কারণ ছাড়াই প্রায় ইচ্ছা করেই পড়ে যান নেইমার। ফলে পেনাল্টি বাতিল করা হয়।
খুব দ্রুতই এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে যায় সোস্যাল মিডিয়ায়। সবাই নেইমারের অভিনয় দক্ষতা নিয়ে ব্যঙ্গ করেন। তবে অতীতে অনেকবারই খেলোয়াড়রা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে রেফারির চোখে ধুলো দিতে পেরেছেন। আল জাজিরা এমন শীর্ষ ১০টি কুখ্যাত ঘটনার সংকলন করেছে। শেষ পাচঁটি দেয়া হলো আজ।
১০. ২০১৪ বিশ্বকাপ, ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে উদ্বোধনী ম্যাচ খেলছিল স্বাগতিক দল। খেলা চলছিল ১-১ এ। ম্যাচের বাকি ২০ মিনিট। ব্রাজিলের স্ট্রাইকার ফ্রেড তখন ক্রোয়েশিয়ার পেনাল্টি এরিয়ায়। হঠাৎ ক্রোয়েশিয়ার দেজান লভরেনের পিঠে নিজ থেকেই উড়ে গিয়ে পড়লেন ফ্রেড। এরপর মাটিতে পড়ে গেলেন। এই স্পষ্ট ডাইভ ধরতে পারলেন না জাপানিজ রেফারি ইয়ুচি নিশিমুরা। দিয়ে দিলেন পেনাল্টি। নেইমার করলেন গোল। সেই ম্যাচ ৩-১ গোলে জয় পায় ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়া বাদ পড়ে গ্রুপ পর্ব থেকে।
৯. ১৯৯৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টাইন তারকা দিয়েগো ম্যারাডোনার অত প্রভাব থাকবে কেউ ভাবেনি। ১৯৮৬ সালে তার হাত ধরেই বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। কিন্তু ১৯৯৪ সালে তিনি ইনজুরি আক্রান্ত, স্থুলকায় আর ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে গেছেন। কিন্তু গ্রিসের সঙ্গে ৪-০ গোলের জয়ে ম্যারাডোনা ছিলেন পুরোনো রূপে। হঠাৎ যেন তিনি নিজের ব্যালেন্স আর নান্দনিক ড্রিবলিং ফিরে পেলেন। এক সপ্তাহ পর বলবর্ধক ওষুধ গ্রহণের পরীক্ষায় পজিটিভ প্রমাণিত হন। নিষিদ্ধ হন টুর্নামেন্ট থেকে।
৮. জার্মানির সঙ্গে ২০১০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলায় ২-১ গোলে পিছিয়ে ইংল্যান্ড। কিন্তু ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের হাফ ভলিতে খেলায় সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড। কিন্তু না! টিভি রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা গেছে গোললাইন অতিক্রম করে মাটি স্পর্শ করেছে বল। কিন্তু রেফারি জর্জ লারিওন্দা সেটিকে গোল ঘোষণা করতে রাজি হননি।
মূলত, বল মাটি স্পর্শ করলেও জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার খুব ক্ষিপ্রতার সঙ্গে দ্রুত নিজের হাতে নিয়ে নেন। বিষয়টি এত দ্রুত ছিল যে, রেফারিও ধরতে পারেন নি। পরে ওই ম্যাচ জার্মানি ৪-১ গোলে জিতে। নয়্যার পরে নিজের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমি বুঝেছিলাম এটি গোললাইন অতিক্রম করেছিল। আমার মনে হয়, যেভাবে আমি কিছু হয়নি ভাব ধরে চালিয়ে গিয়েছিলাম তা রেফারিকে বোকা বানিয়ে দিয়েছিল।’
৭. ১৯৮২ বিশ্বকাপে পশ্চিম জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার খেলা চলছিল। দুই নম্বর গ্রুপের শেষ খেলা। ওই ম্যাচে এক বা দুই গোলে জয় পেলেই জার্মানি দ্বিতীয় পর্বে উঠবে। ছিটকে পড়বে আলজেরিয়া। পশ্চিম জার্মানি ওই ম্যাচে ১ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর থেকে দেখা গেল এক অদ্ভুত দৃশ্য। কোনো দলই বিপক্ষের গোলবারের দিকে বল এগিয়ে নিচ্ছে না, কেউ বল দখলেরও চেষ্টা করছে না। ম্যাচের অবশিষ্ট ৮০ মিনিট দুই দল অর্ধেক অর্ধেক করে নিজেদের মধ্যে পাসিং করে কাটিয়ে দেয়! এ থেকে কারোই বোঝার বাকি থাকে না, দুই দলের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমেই ওই পাতানো খেলা হয়।
৬. ২০০৬ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উঠার লড়াইয়ে পর্তুগাল ও ইংল্যান্ড। ৬২ মিনিট ধরে গোলশূন্য ছিল ম্যাচ। ইংলিশ তারকা স্ট্রাইকার ওয়েন রুনিকে দেখা গেল পর্তুগিজ রিকার্ডো কারভালহোকে পাড়া মেরেছেন। পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো তাই রেফারির সঙ্গে তর্কে নামেন যাতে নিজের ক্লাব-সতীর্থ রুনিকে লাল কার্ড দেওয়া হয়। রেফারি সত্যি সত্যিই রুনিকে মাঠছাড়া করেন। পরে টিভি ক্যামেরায় দেখা যায় কোচ লুই স্কলারির দিকে চোখ টিপ মারছেন রোনালদো। ওই ম্যাচ পরে ট্রাইবেকারে গড়ায়, আর জয় পায় পর্তুগাল। তবে রুনিকে মাঠছাড়া করে পরে বেকায়দায় পড়েন রোনালদো। পরের মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলতে নেমে প্রতিনিয়ত দুয়োধ্বনি শুনতে হয়েছে তাকে।
(আগামী পর্বে সমাপ্য)
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status