প্রথম পাতা

বিশ্বকাপে ব্যস্ত চার বাংলাদেশি ভলান্টিয়ার

স্পোর্টস রিপোর্টার, মস্কো (রাশিয়া) থেকে

২৫ জুন ২০১৮, সোমবার, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন

রাস্তাঘাটে যেখানে তাকাবেন চোখে পড়বে  নানা রকম বিলবোর্ড। বাসস্ট্যান্ড, মেট্রোস্ট্যান্ডেও সোভা পাচ্ছে বিশ্বকাপে নতুন মানচিত্র। সবকিছুতেই বিশ্বকাপের ছোঁয়া আছে। রাশিয়া সরকারও দর্শকদের জন্য ট্রেনে ফ্রি রাইডের ব্যবস্থা করেছেন। ম্যাচের আগের দিন ও পরের দিন দর্শকরা পাবেন এই সুবিধা। সাংবাদিকদের জন্য যা পুরোটাই ফ্রি। বিদেশিদের কাছে দারুণ প্রশংসা পেয়েছে এই ‘ফ্রি রাইড’ সেবা। মস্কোর সোচি, সেন্ট পিটার্সবার্গ, কাজান, নিজনিসহ সকল ভেন্যুতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শক ফ্রি রাইডে যাতায়াত করছেন। বিশ্বকাপের প্রতিটি ভেন্যুতে বসানো হয়েছে ফিফা ফ্যান ফেস্ট। মস্কোর ফ্যান ফেস্টে রুশদের চেয়ে বিদেশিদের সংখ্যাই বেশি। এসব ক্ষেত্রে দর্শকদের চলাফেরা নির্বিঘ্নে কাজ করছে ২৫ হাজার সিটি ভলানটিয়ার। এর বাইরে ১৭ হাজার ফিফা ভলানটিয়ারতো রয়েছেই।
১ লাখ ৭০ হাজার আবেদনকারীদের মধ্য থেকে তিন ধাপের বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয়েছে ১৭ হাজার ফিফা ভলানটিয়ার। ৩৬ শতাংশ ছেলে আর ৬৪ শতাংশ মেয়ে। যার মধ্যে ৯৩ শতাংশ রাশিয়ান বাকি ৭ শতাংশ পৃথক ১১২ দেশের। চারজন বাংলাদেশি কাজ করার সুযোগ পেয়েছে ফিফা ভলানটিয়ার হিসেবে। এরমধ্যে একজন মস্কোতে, একজন সোচিতে একজন নিজনি নভগোরদে আর একজন সেন্ট পিটার্সবার্গে। ফিফা ভলানটিয়ারের কাজ ফুটবল কেন্দ্রিক হলেও সিটি ভলানটিয়াররা ব্যস্ত দর্শকদের নিয়ে। মেট্রো থেকে বের হেেল দেখা যাবে বেশ কিছু তরুণ-তরুণী নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এরা অত্যন্ত সাবলীল ভঙ্গিতে আপনাকে সবকিছু ব্যাখ্যা করবে। আপনাকে কোনো কিছু খুঁজে পেতে কষ্ট করতে হবে না। তারা হাসিমুখে সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। শুধু ভলানটিয়াররাই নন, সাধারণ রুশরাও রাস্তাঘাট চিনিয়ে দিতে সহযোগিতা করছেন। আর প্রয়োজনীয় নিদর্শনাগুলো রুশ ভাষার পাশাপাশি ইংরেজিতে তো রয়েছেই। ভেনিজুয়েলা থেকে শিশুসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বকাপের খেলা দেখতে এসেছেন আর্গেস নিদাই। রাশিয়ায় এটিই তার প্রথম সফর। খেলা দেখার পাশাপাশি মেয়েকে নিয়ে রাশিয়ার কয়েকটি শহরে বেড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে তার। আর্গেসের সঙ্গে কথা হয় মেট্রোতে বসে। রাশিয়ায় কেমন লাগছে, জানতে চাইলে বলেন, ‘দারুণ ভালো লাগছে। দেখুন, পশ্চিমা বিশ্বজুড়ে ‘রাশিয়াফোবিয়া’ বিরাজ করছে। সুইডেনসহ গোটা ইউরোপীয় গণমাধ্যমে রাশিয়া-ইইউ সম্পর্ক নিয়ে এক প্রকার টানাহেঁচড়া খেলা চলছে। যে কারণে ওইসব দেশের সাধারণ জনগণ রাশিয়া সফর করতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইংলিশ নাগরিক তো বলেই ফেললেন, ‘রাশিয়াকে নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে শুধু মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা চালানো হয়, রাশিয়ায় বেড়াতে না এলে ওই প্রপাগাণ্ডাই আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে।’ বাংলাদেশের চার ভলানটিয়ারের মধ্যে ঢাকার কেরানিগঞ্জের অমিত বিশ্বকাপে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, শুরুতে আমার কাছে মনে হয়নি বিশ্বকাপের মতো মহাযজ্ঞে আমাকে কি কাজ করার সুযোগ দেবে রাশিয়া? কিন্তু যোগ্যতা থাকলে যে রাশিয়ায় সব সম্ভব, তা এখানে প্রমাণ হয়েছে। এখানে কাজ করে বিভিন্ন দেশের মানুষের দেখা পাচ্ছি। যতটুকু সম্ভব তাদের সহায়তা করাই আমাদের কাজ। ফিফা ভলানটিয়ারদের কাজ স্টেডিয়ামে ভেতরে হলেও সিটি ভলানটিয়াররা কাজ করেন শহরজুড়ে। তাদের কাজে মুগ্ধ হয়ে উজবেকিস্তানের সফররত ফুটবল সমর্থক গুলাজিকার বলেন, আগেও আমি রাশিয়া এসেছি। প্রতিবারই ভাষার কারণে আমি ভোগান্তিতে পড়েছি। কিন্তু এবার ইংলিশ জানা এসব ভলানটিয়ার থাকাতে কোথাও কোনো প্রকার সমস্যা হচ্ছে না। ব্রাজিল বিশ্বকাপের উদাহরণ টেনে লেবাননের সাংবাদিক মোহাম্মদ বেলাল বলেন, মাঠে ও মাঠের বাইরের আয়োজনে রাশিয়া সকলে ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে রুশদের যোগাযোগ ব্যবস্থা অসাধারণ। আপনি চাইলে ৬০০-৭০০ কিলোমিটারের পথ জার্নি করে সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে একদিনেই খেলা দেখে মস্কোতে ফিরতে পারবেন। শেষ দুই বিশ্বকাপে ব্রাজিল-দক্ষিণ আফ্রিকায় যা সম্ভব ছিল না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status