দেশ বিদেশ
রাজধানীতে জলজটে ভোগান্তি
স্টাফ রিপোর্টার
২৪ জুন ২০১৮, রবিবার, ৯:৩৪ পূর্বাহ্ন
আষাঢ় মাসে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীতে থৈ থৈ অবস্থা ছিল গতকাল। সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে কোথাও হাঁটু সমান আবার কোথাও তার চেয়ে বেশি পানি জমে জলজট তৈরি হয়। এতে নিচু এলাকার ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। আর রাজধানী অধিকাংশ সড়কে জলাবদ্ধতার দেখা যায়। এ কারণে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কমে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ঈদ ফিরত যাত্রীরা। ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরে দুর্ভোগের কবলে পড়তে হয়েছে অনেককে। গতকাল সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। সকাল ১১টার দিকে শুরু হয় বজ্রপাতসহ বৃষ্টি। ঘণ্টা খানেকের বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক। সরজমিন নগরীর খিলগাঁও, বাসাবো, তিলপাড়া, রাজারবাগ, মতিঝিল, কমলাপুর, গুলিস্তান, ওয়ারী, ফকিরাপুল, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, কাওরানবাজার, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, সাতরাস্তা, লাভ রোড, রাজাবাজার, বিজয় সরণি, সংসদ সদস্য ভবন এলাকা, ধানমন্ডি ২৭, শুক্রাবাদ, সোবহানবাগ, কলেজগেট, মোহাম্মদপুর, শেখেরটেক, মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, কালশী, অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসব এলাকার মানুষেরা চরম ভোগান্তির মধ্যদিয়ে দিন পার করেন। বিশেষ করে নিচু এলাকায় অবস্থিত ঘর বাড়িতে পানি প্রবেশ করে ভোগান্তি ছিল চরমে। চারপাশে পানি থাকায় অনেকেই ঘর বন্দি হয়ে পড়েছিলেন। জলাবদ্ধতার কারণে ছুটির দিনেও রাজধানীতে ছিল যানজট। সিটি করপোরেশনের আওতাধীন অনেক এলাকায় চলছে সংস্কারের কাজ। এছাড়া ভাঙাচুরা রাস্তার গর্তে পানি জমে বেহাল হয়ে পড়ে। অধিকাংশ এলাকায় গাড়ি চলাচলে বেগ পেতে হয়েছে। ছোট বড় যানবাহনগুলো থেমে থেমে চলতে দেখা গেছে। আর পায়ে হাঁটা মানুষের যেন দুর্ভোগের শেষ ছিল না। তিলপাড়া কাপড়ের গলি এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, অল্প সময়ের বৃষ্টিতে প্রায় হাঁটু সমান পানি জমেছে। ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নাই। জরুরি প্রয়োজনে অনেকেই রিকশা দিয়ে রাস্তা পারাপার করেন। গোড়ানের বাসিন্দা জমির শেখ বলেন, এলাকায় নিচু হওয়াতে অনেক বাড়িতে পানি প্রবেশ করে ভোগান্তি বেড়েছে। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। মাদারটেক এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে এমনিতে এলাকার সড়কের অবস্থা খারাপ। তার ওপর আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আর এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনকে দ্বিগুন ভাড়া দিতে হয়। অন্যদিকে রাজধানীর অভিজাত এলাকার আশপাশের সড়কগুলোতেও জলাবদ্ধতা যানজট ছিল চরমে। ধানমন্ডির বেশ কয়েকটি সড়কে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে। ধানমন্ডি ২৭ এলাকায় সিএনজি চালক সোহেল মিয়া বলেন, বৃষ্টি হলে গাড়ির চাকা আর সামনে দিকে যায় না। জলাবদ্ধতার কারণে যানজট তৈরি হয়। যানজটে বসে সময় পার করতে হয়। কালশী এলাকার বাসচালক মনির হোসেন জানান, নগরীর সবচেয়ে খারাপ এলাকা কালশী। সারা বছরই এখানে জলাবদ্ধতা থাকে। জলাবদ্ধতায় চলতে চলতে এখন প্রায় অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এদিকে ঈদের পর কর্মক্ষেত্রে ও স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা জলাবদ্ধতার কারণে অসহায় ছিলেন। ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে ফেরা অনেকেই জমে থাকা কাজ সারতে বাইরে বের হয়েছিলেন। কিন্তু জলাবদ্ধতা কারণে নাকাল হয়ে পড়েন অনেকেই।