বাংলারজমিন

বরগুনায় বনপ্রহরীদের ব্যারাক ৩০ ভবনের মধ্যে ২৪টিই ঝুঁকিপূর্ণ

মো. মিজানুর রহমান, বরগুনা থেকে

২৪ জুন ২০১৮, রবিবার, ৮:৫১ পূর্বাহ্ন

বরগুনা জেলার প্রায় ৬৫ হাজার একর জমিতে রয়েছে বিশাল বনভূমি। আর এসব বনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বনরক্ষীদের আবাসিক ভবনগুলোর বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থা। এসব ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও কোনও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব ভবনেই বাস করছেন এখানকার বনপ্রহরীরা। সরজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন বিটে ভাগ করা বনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে বন বিভাগের বন কর্মকর্তাসহ বনরক্ষীরা। এসকল বনে বন বিভাগের বন প্রহরীদের থাকার বেশির ভাগ ভবন পরিত্যক্ত। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে গেছে। এছাড়াও কাঠ ও ইটে লেগে আছে শ্যাওলা। বৃষ্টির মৌসুমে পলিথিন দিয়েই চলে বৃষ্টি আটকানোর কাজ। অনেক ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে পরছে পানি। আবার অনেক স্থানে সুপেয় পানির ব্যবস্থাও নেই। অনেক ভবন রয়েছে সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে। যে কোনও সময় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ধসে পরে মৃত্যু হতে পারে বসবাসকারীদের। অন্যদিকে কর্মকর্তাদের দাবী, দ্রুত এসব ঘর মেরামত করে বসবাসের উপযোগী করা হবে। বরগুনা জেলার ছয় উপজেলার মধ্যে বামনা, বেতাগী ও আমতলী উপজেলায় বনকর্মীদের জন্য কোনো সরকারি অফিস বা থাকার জন্য কেনো ভবন নেই। প্রতিমাসে ভাড়া নেয়া ঘরে চলছে অফিসের কাজ। একই সঙ্গে ঘর ভাড়া করেই বসবাস করছে বনকর্মীরা। এদিকে বরগুনা সদর, পাথরঘাটা ও তালতলী উপজেলায় বনকর্মীদের ৩০টি ভবনের মধ্যে ২৪টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
হরিণঘাটা বিটের বন কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন বাংলা বলেন, এখানে একটি ভবন ভালো আছে, তবে বাকি দু’টি এখন মরণফাঁদ। এসব ভবন বসবাসের উপযুক্ত নয়। পাথরঘাটার চরদুয়ানী বনের বনপ্রহরী মো. ইউনুস আলী হাওলাদার জানান, চরদুয়ানীতে ঝুঁকিতে থাকা ঘরটি ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরে ভেঙে যায়। এরপর আর এখানে নতুন কোনো ঘর ওঠানো হয়নি। তাই ভাঙা ঘরে বেড়া দিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।
চরলাঠিমারা বিটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান খান বলেন, পুরাতন দু’টি ভবন ভেঙে গেছে। আমিসহ চার-পাঁচজন বনপ্রহরী একটি পরিত্যক্ত ভবনের ওপরে ত্রিপল ও পলিথিন দিয়ে বসবাস করছি। পরিবার নিয়ে থাকার মতো কোনো ব্যবস্থা আমাদের ব্যারাকে নেই।
বরগুনা সদর উপজেলা ও তালতলী উপজেলার বিভিন্ন বন বিভাগের ব্যারাকেরও একই অবস্থা। বরগুনা জেলা শহরের বন বিভাগের কার্যালয়ে দেখা যায় রেঞ্জ কর্মকর্তার ভবনটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সেটা বসবাসের উপযোগী নয়। বরগুনা অফিসের দায়িত্বে থাকা মো. মতিয়ার রহমান জানান, অনেক আগেই রেঞ্জ কর্মকর্তার ভবন পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া অন্য কর্মীদের থাকার ঘরও ভালো নেই। সব ঘরগুলো দিয়ে বৃষ্টির মৌসুমে পানি পড়ে। যারা এখানে রয়েছে তাদের অনেক কষ্ট করে বসবাস করতে হয়।
পাথরঘাটা চরলাঠিমার বিটের বনরক্ষী মো. মতিউর মিয়া বলেন, আমাদের থাকার জন্য একটু ভালো ভবন দরকার। সারাদিন বনের মধ্যে কাটিয়ে সন্ধ্যায় এসে ভাঙ্গা ঘরে ঝুঁকি নিয়ে থাকছি। চাকরি করার কারণে এখানে থাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই।
পটুয়াখালী ও বরগুনায় বন বিভাগের দায়িত্বরত বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততার জন্য পুরাতন ভবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নতুন করে ভবন নির্মাণের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status