দেশ বিদেশ

ঈদের এক সপ্তাহ পরও সরবরাহ বাড়েনি রাজধানীর বাজারে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৩ জুন ২০১৮, শনিবার, ৯:০৭ পূর্বাহ্ন

ঈদের ছুটির এক সপ্তাহ পরও রাজধানীর বাজারে সবজিসহ নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়েনি। অন্যদিকে ক্রেতাও কম। এ কারণে বেশির ভাগ সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা কম থাকায় কিছু জিনিসের দাম কমেছে। আবার বেড়েছে বেশ কিছু পণ্যের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন আগামী সপ্তাহ থেকে সরবরাহ বাড়বে রাজধানীর বাজারগুলোতে। দামও স্থিতিশীল হয়ে আসবে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিতে প্রায় ৫ টাকা বেড়ে আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে পটোল ৪০ টাকা হয়েছে। শাকের আঁটি প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। পুঁইশাকের প্রতি আঁটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ডাঁটাশাক ও কলমিশাক প্রতি আঁটি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদে বাড়তি চাহিদার কারণে মাংস ও মুরগির দাম বাড়লেও এখন কিছুটা কমেছে। কেজিতে ১০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই হারে কমে লেয়ার মুরগির কেজি এখন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা হয়েছে। গরুর মাংস কেজিতে ২০ টাকা কমে ৫০০ টাকা ও খাসির মাংস ৭৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। অন্যান্য পণ্যের দামে তেমন পরিবর্তন হয়নি। জানা গেছে, ঈদের আগে একচেটিয়া দাম বেড়েছিল নানা ভোগ্যপণ্যের। রমজানের আগে ও রমজান মাসেও দাম বেড়েছিল কয়েক দফায়। যার মধ্যে ছিল বেগুন, শসা, পেঁপে, মাংস, মশলা থেকে শুরু করে রমজান ও ঈদে বাড়তি চাহিদায় থাকা বিভিন্ন পণ্য। ঈদের পর ক্রেতা সংকটে ভুগছে বাজারগুলো।
ঈদের ছুটিতে রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষের একটি বড় অংশ এখনো ঢাকায় এসে পৌঁছায়নি। ঢাকায় পুরোপুরি লোকজন না ফেরা পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা ও যোগান কোনোটি স্বাভাবিক হবে না বলে জানান বিক্রেতারা।
এদিকে ক্রেতা চাহিদা না থাকায় বেশ কিছু সবজির দাম কমেছে। কচুর লতি, পটোল, ঢেঁড়স, বরবটি, পেঁপে, শসার দাম কমেছে কেজিতে ৫-১০ টাকা হারে। রমজানের ১০০ টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে, একই দামে বিক্রি হচ্ছে পটোল ও শসা। কেজিতে ১০ টাকা কমে ঢেঁড়স ৩৫-৪০ টাকা। পেঁপে ও ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে চাহিদা থাকায় দাম বেড়েছে করলা, কাঁকরোল ও ঝিঙের। প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। ৩০ টাকা কেজির ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। কেজিতে ৫-৭ টাকা দাম বেড়েছে গোল আলুর। ১৮-২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আলু এখন ২৫ টাকা। বেড়েছে কাঁচামরিচের দামও। ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ আবার ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে টমেটো। এর কেজি ১২০ টাকা। এর পর গাঁজর ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি পিস লাউ ৩৫-৪০ টাকা, জালি কুমড়া ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতা জানান, মরিচ আসার পরই বেচা শেষ। তাজা জিনিস মানুষ ১০/২০ টাকা বেশি হলেও নিতে চায়। ক্রেতারা জানান, প্রায় সব সবজির দামই গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় ১০-২০ টাকা করে বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা পিয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।
কাওরান বাজারের সবজি বিক্রেতা মমিন বলেন, বাজারে ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। তাই আগের তুলনায় কম পরিমাণ মাল কিনছেন এবং অল্প বিক্রি করছেন। লোকজন ঢাকায় আসুক, তখন বাজারের কাস্টমারও থাকবে, আমাদের দোকানে পণ্যও ভরা থাকবে। আবার দামও বাড়তে পারে।
বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে আসায় দাম কমার কথা। আড়ত ও খুচরা বাজারে চালের মজুদ পর্যাপ্ত। তবু খুচরা বাজারে মোটা চালের দাম বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চাল কিনতে কেজিতে ৩ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বাজারে এখন এক কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৩ থেকে ৪৪ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ৩৯ থেকে ৪০ টাকা। খুচরা বাজারে পাইজাম, লতা ও বিআর আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজিতে। মৌসুমের নতুন চাল আসায় ঈদের আগে থেকেই কেজিতে ২ টাকা কমে এই দামে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মিনিকেট চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা ও নাজিরশাইল ৬৪ থেকে ৬৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা সংকটে দাম কমেছে মাংসের। ঈদের আগে ৫০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হলেও ৪৮০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে। এদিকে কেজিতে ৫ টাকা কমে ১৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status