এক্সক্লুসিভ
ঝুলে আছে আরিফের ভাগ্য
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২৩ জুন ২০১৮, শনিবার, ৯:০৬ পূর্বাহ্ন
সিলেটের মেয়র প্রার্থী কে হচ্ছেন- সেই সিদ্ধান্ত জানাবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সিলেটের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করতে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি। এর কারণ- আরিফ ছাড়া যে ৫ জন সিলেটে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন তারা একজোট হয়েছেন। এ ৫ জনের মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে প্রার্থী দেয়ার জন্য স্থায়ী কমিটির কাছে দাবি জানিয়েছেন। আর স্থায়ী কমিটি মনে করছে- সিলেটে যারা মেয়র প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তারা সবাই দলের সিনিয়র নেতা। ৫ জনের মধ্য থেকে কেউই আরিফকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে চান না। এবার মার্কা দিয়ে নির্বাচন হবে। সুতরাং মার্কা নির্বাচনে বিএনপি’র নেতারা আরিফের পক্ষে না থাকলে জয় ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়বে। ঢাকায় অবস্থানরত সিলেট মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ‘সিলেটে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী কে সেই সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। দলের সর্বোচ্চ ফোরাম সিদ্বান্ত জানাবেন। আমরা দাবি জানিয়েছি দলের কর্মীঘেঁষা কোনো নেতাকে মনোনয়ন দিতে।’ কর্মী বিচ্ছিন্ন নেতাদের মনোনয়ন দিলে পরাজয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। দলীয় সূত্র জানিয়েছে- সিলেট থেকে এবার বিএনপি’র মনোনয়ন পেতে প্রার্থী হয়েছেন ৬ জন। এরা হচ্ছে- বর্তমান মেয়র ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপি’র সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকি, সহ-সভাপতি ও প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান লোদি কয়েস ও যুবদল নেতা সালাহউদ্দিন রিমন। বৃহস্পতিবার বিকালে তারা প্রার্থী হতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। এ সময় আরিফুল হক চৌধুরী ছাড়া বাকি ৫ জনই একজোট হয়ে যান। তারা আরিফকে কর্মী বিচ্ছিন্ন নেতা আখ্যায়িত করে তাকে মনোনয়ন না দেয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে তারা দাবি করেন- তাদের ৫ জন থেকে যে কোনো একজনকে যেন মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়া হয়। সিলেট বিএনপি’র সিনিয়র নেতারা জানিয়েছেন- তাদের বক্তব্যে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিব্রত হয়েছেন। কারণ- আরিফের পক্ষে কেউই অবস্থান নেননি। এর প্রেক্ষিতে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সিলেট সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি। নামও ঘোষণা হয়নি মেয়র প্রার্থীর। সিলেট মহানগর বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও প্যানেল মেয়র-১ রেজাউল হাসান লোদি কয়েস মানবজমিনকে জানিয়েছেন- আমরা দাবি জানিয়েছি ৫ জন থেকে যে কোনো একজনকে মেয়র প্রার্থী করার। বর্তমান মেয়রকে আমরা কেউই চাইনি। এর পক্ষে আমরা স্থায়ী কমিটির কাছে বক্তব্য তুলে ধরেছি। তিনি বলেন- আমি বিএনপি করি। কিন্তু গত ৫ বছর প্যানেল মেয়র-১ থাকলেও আমাকে একটি দিনের জন্য দায়িত্ব পালন করতে দেননি। আরিফুল হক চৌধুরী এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি বিএনপি’র সর্বোচ্চ ফোরামের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। ২০১৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও বিএনপি’র সমর্থন নিয়ে এমনিভাবে কঠিন পরীক্ষায় পড়েছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। ওই সময়ও তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন সিলেট বিএনপি’র নেতারা। পরবর্তীতে দলীয় প্রধান আরিফকেই মেয়র প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন। এবার বর্তমান মেয়র হিসেবেও আরিফের পাল্লা ভারী। কিন্তু সিলেট বিএনপি’র নেতারা তার বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার কারণে ঢাকা থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এখন আরিফের ভাগ্য ঝুলছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতে। লন্ডন থেকে তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেই সিদ্ধান্ত সবাই মানবেন বলে জানান সিলেটের নেতারা। এ কারণে গতকাল রাতে সিলেট বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ঘোষণা দেয়া সম্ভব হয়নি। আজ-কালের মধ্যে লন্ডন থেকে সিদ্ধান্ত আসার পর সিলেটের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।