দেশ বিদেশ
শিগগিরই ভিত্তিপ্রস্তর হবে পুলিশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ জুন ২০১৮, শনিবার, ৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
পুলিশ সদস্য ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে শিগগিরই পুলিশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিস্তিপ্রস্তর স্থাপন হতে যাচ্ছে। ওই হাসপাতালে পুলিশের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন ছাড়াও সকল জনগোষ্ঠীর লোকজন সেবা পাবেন। মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে পুলিশের স্বজন ও তাদের আত্মীয়দের জন্য ৩৫ শতাংশ আসন বরাদ্দ থাকবে। ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালের ভিস্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায়। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একটি খসড়া পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। পুলিশের সদস্যরা অবসরে গেলেও হাসপাতালটির আগের মতো সব নিয়ম বহাল থাকবে। ২০১৮ সালের ১২ই জানুয়ারি পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর দরবারে উপস্থিত পুলিশের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। এসময় ঢাকা মহানগর পুলিশের এক এসি ঢাকায় অবস্থিত আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আদলে পুলিশের একটি আলাদা স্বয়ংসম্পন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য আবেদন করেন। এ বিষয়টি জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড প্ল্যানিং) আব্দুল আলিম মাহমুদ মানবজমিনকে জানান, চলতি বছরের পুলিশ সপ্তাহে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দাবি তোলা হয়। খুব শিগগিরই এই প্রতিষ্ঠানটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে। সেখানে পুলিশসহ সাধারণ জনগোষ্ঠীর লোকজনও সেবা পাবে। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদস্যদের জন্য রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল রয়েছে। তবে সেটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল নয়। কোনো পুলিশ সদস্য গুরুতর অসুস্থ হলে ঢাকাসহ বাইরের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সারা দেশের পুলিশ সদস্য এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের জন্য পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এখানে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রেও পুলিশের সন্তানদের জন্য ৩৫ শতাংশ কোটা থাকবে। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর রাজারবাগ পুলিশের কেন্দ্রীয় হাসপাতালটি সেখানে স্থানান্তরিত হবে। আর রাজারবাগের পুলিশের হাসপাতালটি ছোট মেডিকেল সেন্টার হিসেবে রাখা হবে। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মাঠে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় আক্রান্ত হয় পুলিশের সদস্যরা। অথবা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। তখন তারা দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেন। অনেক পুলিশ সদস্যের সুচিকিৎসা হয় না বলে পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ করা হয়। এর আগের বছরেও পুলিশ সপ্তাহে একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছিল। অসুস্থ পুলিশের সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এই পুলিশ কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। ৩০০ বেডের এই হাসপাতালটি সব শ্রেণির মানুষ সেবা পাবেন। তবে এই হাসপাতালের ৩৫ শতাংশ বেড পুলিশের জন্য বরাদ্দ থাকবে। সূত্র জানায়, হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার জন্য কেরানীগঞ্জে জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু, সেটি সেখানে আর হচ্ছে না। বর্তমানে আশুলিয়ায় পুলিশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হবে। ২০১৯ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। সূত্র জানায়, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে প্রজ্ঞাপন দিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে। যারাই নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন তারাই কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেবেন। প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। এছাড়াও উন্নতমানের আইসিইউ এবং সিসিইউ প্রতিষ্ঠা করা হবে। আহত পুলিশ সদস্যদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড গড়ে তোলা হবে। যাতে তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা যায়। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ওই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে গতানুগতিকভাবে পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। প্রথম ব্যাচে এমবিবিএস কোর্সের জন্য ৭০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে এবং তখন থেকেই ক্লাস শুরু হবে। কলেজ ভবনে থাকবে আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম। থাকবে ২টি লেকচার গ্যালারি, ১টি পাঠাগার, কনফারেন্স রুম, ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি কমনরুম। এছাড়াও বিভাগভিত্তিক বিভিন্ন ল্যাবরেটরি, ডিসেকশন রুম, ব্যবহারিক কক্ষ, টিউটোরিয়াল কক্ষ। শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সংস্করণে আপডেট বই দিয়ে তৈরি হবে একটি পাঠাগার। তবে মোট ভর্তির ৩৫ শতাংশ পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের অগ্রাধিকার থাকবে।