শেষের পাতা

অনশনে যাচ্ছেন নন-এমপিও শিক্ষকরা

স্টাফ রিপোর্টার

২১ জুন ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন

আজ থেকে আমরণ অনশন শুরু করছেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ অনশন শুরুর তথ্য জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করার নতুন নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ নীতিমালা জারি করা হয়। এতে বেশ কিছু কঠিন শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল আন্দোলনের ১১তম দিনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীতে অবস্থানকালে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এমপিওভুক্তির  ব্যাপারে পরিষ্কার কোনো দিকনির্দেশন দেয়া হয়নি। বাজেটে এমপিওভুক্তির ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণার দাবিতে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হচ্ছি। ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী বলেন, গত ৯ই এপ্রিল আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যাই। আমাদের বাইরে অপেক্ষা করতে বলা হয়। কিছুক্ষণ পরে তিনি গাড়িতে করে বের হয়ে যাচ্ছেন এমন সময় গাড়ির গ্লাসটা নামিয়ে আমাদের জিজ্ঞেস করেন, আপনারা কারা। আমাদের পরিচয় দিলে তিনি বলেন, আপনাদের জন্য কিছু করলেও দোষ না করলেও দোষ। আপনাদের আমি প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও অনশন প্রত্যাহার করলেন না। কিন্তু একজন সাধারণ কর্মচারীর আশ্বাসে অনশন ভঙ্গ করলেন। আপনাদের এমপিওভুক্তি কিভাবে হয় আমি দেখবো। মাহমুদুন্নবী বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর ২৭ বারের প্রতিশ্রুতিতে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। তিনি এর আগেও ২৬ বার আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কোনবারই তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে। সিলেটের কোনো প্রতিষ্ঠান নন-এমপিও নেই দাবি করে তিনি বলেন, আমাদের তালিকাভুক্ত ৫ হাজার ২৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিলেটের কোনো প্রতিষ্ঠানই নেই। ২০১০ সালেই ১০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানকে সরকারি সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। পরবর্তীতে দুই একটি প্রতিষ্ঠান বিচ্ছিন্নভাবে গড়ে উঠতে পারে। তবে সিলেটের মতো বাকি সকল নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানগুলাকেও সরকারি সুবিধার আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ফেডারেশনের সভাপতি বলেন, উপরের নির্দেশেই তাদের প্রেস ক্লাবের সামনে বসতে দেয়া হয়নি। তাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে নিজেদের দাবি বাস্তবায়ন করতে প্রেস ক্লাবের বিপরীতে অবস্থান করছেন শিক্ষকরা।
এমপিওভুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই কমিটি: বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত (মান্থলি পে-অর্ডার) করার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে দুটি কমিটি গঠন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। এগুলো হলো শর্ত পূরণ করা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুতের জন্য অনলাইনে আবেদন নেয়া ও ব্যবস্থাপনা’ কমিটি এবং ‘এমপিওভুক্তির জন্য বাছাই’ কমিটি। অনলাইন আবেদন নেয়া ও ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান (সভাপতি) করা হয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষা, তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) মহাপরিচালক মো. ফসিল্লাহকে, অন্য সদস্যরা হলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-১), এই বিভাগের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রতিনিধি, ইলেক্ট্রনিক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেলের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, অধিদপ্তরের প্রোগ্রামার ও ব্যানবেইসের সিস্টেম অ্যানালিস্ট। আর এমপিওভুক্তির জন্য বাছাই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত সচিবকে (বেসরকারি মাধ্যমিক)। এর অন্য সদস্যরা হলেন ব্যানবেইসের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (আইন), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব (কলেজ), উপ-সচিব (বাজেট), সিনিয়র সহকারী সচিব (বাজেট)। এছাড়া এ কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে যুগ্ম-সচিবকে (বেসরকারি মাধ্যমিক-৩)। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ বলেন, দুটি কমিটি এমপিওভুক্তি নিয়ে কাজ করবে। যাচাই-বাছাইযের পর নম্বরের ভিত্তিতে শর্তপূরণ করা প্রতিষ্ঠান এমপিভুক্ত করা হবে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে এক হাজার বা তার কিছু বেশি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার প্রস্তুতি রয়েছে সরকারের। এদিকে গত ১০ই জুন থেকে এমপিওভুক্তির দাবিতে বেসরকারি নন-এমপিও শিক্ষকরা আন্দোলন করছেন। সবশেষ তারা আমরণ অনশনের আহ্বান জানিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, বর্তমানে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে পাঁচ হাজার ২৪২টি। এছাড়া সরকার নতুনভাবে ১৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দাবি, এমপিও পাওয়ার মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status