পর্যটকে মুখর পাহাড়ঘেরা বান্দরবান

উচু-নিচু পাহাড়। সর্পিল রাস্তা। ঘন সবুজ বন। মেঘে ঢাকা আকাশ। দুই পাহাড়ের কোল ঘেঁষে চলা সরু রাস্তা। মিশে গেছে আকাশের সঙ্গে। পার্বত্য অঞ্চল বান্দরবানে এমন অপরূপ সৌন্দর্য্য হাতছানি দেয়। তাইতো প্রতিবছর সৌন্দর্য্য পিপাসুদের ভিড় জমে এখানে। সম্প্রতি বন্যা ও পাহাড় ধসের আশঙ্কায় এবার ঈদে পর্যটক না আসার শঙ্কায় হতাশ হয়েছিল বান্দরবানের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাদের হতাশায় ভাটা পড়েছে। ঈদের ছুটিতে বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা গেছে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। সেনাবাহিনী পরিচালিত নীলগিরি, জেলা প্রশাসন পরিচালিত মেঘলা, নীলাচল ও স্বর্ণ মন্দির সব জায়গা এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। শিশু, বৃদ্ধ, যুবক ও যুবতীরা তাদের প্রিয়জনদের নিয়ে চাঁদের গাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছে দর্শনীয় সব স্থান। কেউ কেউ ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পরিবারের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব দর্শনীয় স্থান। নীলাচলে বেড়াতে আসা পুরান ঢাকার রহমত উল্লাহ জানান, বান্দরবান খুবই সুন্দর জায়গা। এখানে না আসলে বুঝা যেত না বাংলাদেশ এত সুন্দর। মেঘলা আবহাওয়ায় পাহাড় এত সুন্দর দেখায়। এটা আগে জানতাম না। এখানে না এলে সেটা বুঝতেও পারতাম না। আবার অনেক পর্যটক ছুটে যাচ্ছেন থানচি ও বগালেকের সৌন্দর্য্য দেখতে। তবে, বর্ষাকাল হওয়ায় বেশিদূর যেতে পারছেন না তারা। নদীতে পানি বেশি থাকায় যাওয়া যাচ্ছে না নাফাকুম, অমিয়াকুমসহ থানচির বেশ কয়েকটি পর্যটন স্পটে। তাই লোকাল স্পটগুলোতে ঘুরতে ব্যস্ত পর্যটকরা। শহরের রেস্টুরেন্টগুলোতেও লক্ষ করা গেছে পর্যটকদের ভিড়। তবে, ঈদ উপলক্ষে বেশিরভাগ রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকায় চাপ পেতে হচ্ছে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের। বান্দরবান জামান রেস্টুরেন্টের মালিক গিয়াস উদ্দীন মাস্টার বলেছেন, পর্যটক গতবারের তুলনায় একটু কম। তবে, ঈদ উপলক্ষে অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট বন্ধ তাই যেগুলো খোলা আছে সেগুলোতে একটু চাপ পড়ছে। দোকানের স্টাফরাও ছুটিতে তাই সামাল দিতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে।
ঈদের আগে বুকিং ক্যান্সেল হওয়ায় হতাশ হলেও ঈদের একদিন পর থেকে পর্যটক আসায় খুশি হোটেল ব্যবসায়ীরাও।
বান্দরবান শহরের হোটেল স্বর্ণশিলার মালিক মানিক চৌধুরী জানান, এবার ঈদের আগে রুম বুকিং দিয়েও অনেকে ক্যান্সেল করে দিয়েছিল তাই পর্যটক আসবে না ভেবে খুবই হতাশ হয়েছিলাম কিন্তু আবহাওয়া ভালো হওয়ায় ঈদের একদিন পর থেকে পর্যটকদের আগমন শুরু হয়েছে। আমাদের বেশিরভাগ রুম বুকিং। আগামী দু’একদিনের জন্য অনেকে রুম বুকিং দিয়েছে। আশা করি আরো পর্যটকের সমাগম ঘটবে। বান্দরবান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) ইয়াছির আরাফাত জানান, পর্যটকদের ভ্রমণকে নিরাপদ করতে এবং কোথাও কোনো পর্যটক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও টুরিস্ট পুলিশ রয়েছে তারা সার্বক্ষণিক টহল দিচ্ছে এবং বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নাম্বার দেয়া হয়েছে। কোথাও কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।