বিশ্বজমিন

সাবেক ইসরাইলি মন্ত্রী ইরানের গুপ্তচর?

মানবজমিন ডেস্ক

১৯ জুন ২০১৮, মঙ্গলবার, ৮:২৬ পূর্বাহ্ন

ইসরাইলের সাবেক একজন আইনপ্রণেতা ও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইরানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেট তার বিরুদ্ধে যুদ্ধকালীন সময়ে শত্রুপক্ষকে সহায়তা করার অভিযোগও এনেছে। ইসরাইলের হারেৎস পত্রিকা এক প্রতিবেদনে বলেছে, গোনেন সেগেভ নামে ওই ব্যক্তি ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত দেশের জ্বালানী ও অবকাঠামো মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৫ সালে নেদারল্যান্ডস থেকে ইসরাইলে ৩ লাখ মাদক ট্যাবলেট পাচারের চেষ্টা ও কূটনৈতিক পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০০৭ সালে তিনি মুক্তি পান।
এক বিবৃতিতে শিন বেট জানিয়েছে, গোনেন সেগেভের বিরুদ্ধে শুক্রবার আদালতে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে শত্রু রাষ্ট্রকে সহায়তা, ইসরাইলের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ও দেশের শত্রুকে একাধিক বার্তা প্রেরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
হারেৎসের খবরে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেগেভ নাইজেরিয়ায় বসবাস করতেন। সেখানে তিনি একটি ক্লিনিক পরিচালনা করতেন। ওই ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রদূত, দূতাবাস কর্মী, কূটনীতিক ও ব্যবসায়ী। এই বছরের শুরুর দিকে তিনি একুয়েটোরিয়াল গিনিতে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। তবে তাকে প্রবেশের অনুমতি না দিয়ে দেশটি তাকে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করে। ইসরাইলে প্রবেশের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ইসরাইলি গোয়েন্দারা যেসব তথ্য পেয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তিনি ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। পাশাপাশি, ইসরাইল-বিরোধী তৎপরতায় ইরানকে সহযোগিতা করেছেন।

খবরে বলা হয়, ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের যৌথ তদন্তে দেখা গেছে, সেগেভকে অনেক আগেই রিক্রুট করেছে ইরান। তিনি পরে ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টে পরিণত হন। পরে দুইবার ইরানে তিনি নিজের পরিচালকের সঙ্গে দেখা করনে।
সূত্রের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি লিখেছে, গোনেন সেগেভ গ্রেপ্তারের পর থেকে তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ইরানিয়ানদের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক নিয়েও বিস্তারিত বলেছেন। তিনি অবশ্য বলেছেন, ইসরাইলের ক্ষতি করার কোনো উদ্দেশ্য তার ছিল না। তবে গোয়েন্দা সংস্থার সংগৃহীত প্রমাণের সঙ্গে তার দেওয়া বক্তব্যের বৈপরীত্য আছে। ইসরাইলি পুলিশ বলেছে, এই ঘটনা ইসরাইলের সবচেয়ে বিপজ্জনক নিরাপত্তা ফুটোর একটি।
তদন্ত মোতাবেক, ২০১২ সালে প্রথম সেগেভের সঙ্গে দুই ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগ হয়। নাইজেরিয়ায় অবস্থিত ইরানের দূতাবাসের মাধ্যমে এই যোগাযোয় স্থাপিত হয়। সেগেভ দাবি করেন, ওই দুই ব্যক্তি তার কাছ থেকে মেডিক্যাল যন্ত্রাংশ কিনতে চেয়েছিলেন। তবে এরপর থেকে তিনি ইরানের এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। ইরানকে তিনি ইসরাইলের জ্বালানী খাত, নিরাপত্তা স্থাপনা, কাঠামো, ইসরাইলের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রভাবশালীদের পরিচয়, ইত্যাদি সরবরাহ করেন। তথ্য পেতে সেগেভ এতদিন প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক অঙ্গনের প্রভাবশালী ইসরাইলিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এসেছেন। এমনকি কিছু ইসরাইলি নাগরিককে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status