অনলাইন

গণবিচ্ছিন্নদের ‘হাইপার প্রোপাগান্ডার’ উপর নির্ভর করতে হয়

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ জুন ২০১৮, সোমবার, ১২:৫৪ অপরাহ্ন

গণবিচ্ছিন্নদের ‘হাইপার প্রোপাগান্ডার’ উপর নির্ভর করতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সকালে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।  বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হোক বিএনপি চায় না।” অগণতান্ত্রিক সরকারের মিথ্যাবাদী গোয়েবলস এর  ভূমিকা পালন করছেন ওবায়দুল কাদের সাহেবরা। যারা গণবিচ্ছিন্ন তারা ‘হাইপার প্রোপাগান্ডার’ উপর নির্ভর করতে হয়। সরকারের টিকে থাকার নিবু নিবু দীপটিকে টিকিয়ে রাখার জন্যই ওবায়দুল কাদের মরিয়া হয়ে উঠেছে। রিজভী বলেন, এর অবশ্য কারণও থাকতে পারে ১/১১’র সময় গ্রেফতার অবস্থায় নিজ নেত্রীর টাকা লেন দেন সম্পর্কে যা বলেছেন সেটিকে আড়াল করার জন্যই বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণার প্রানন্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তারা সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন নানাভাবে যেমন, বাথরুম আর মেঝেতে ইদুঁর আর তেলাপোকার অবাধ বিচরণের সুযোগ করে দিয়েছেন। জ্বরাজীর্ন ভবনের মধ্যে দেশনেত্রীর কক্ষের চারদিকে দেওয়াল থেকে সিমেন্ট আর বালি ঝড়ে পরার অবাধ সুযোগ দিয়ে দেশনেত্রীর সদ্য অস্ত্রপচারকৃত দুটি চোখকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করার সুযোগ করে দিয়েছেন, সুযোগ করে দিয়েছেন সিমেন্ট আর বালিতে আকীর্ন কক্ষটিতে বসবাসের কারণে সার্বক্ষনিক হাঁচি কাশি ও জ্বরের মধ্যে ভূগতে। ৫/৬ মিনিট অজ্ঞান হয়ে পরে াকার পরও ঘটনাটি কারাকর্তৃপক্ষের অগোচরে ছিল যদি না স্বজনরা দেখা করেত গিয়ে সেটি না জনতেন। প্রকৃত যে কারণে তিনি অজ্ঞান হয়েছিলেন সেটি সম্পর্কেও তারা মিথ্যা কথা বলছে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যখন সাবজেলে ছিলেন তখন কিভাবে তার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছিল এটার উত্তর দিবেন কী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক? তিনি কী এরকম একটি পরিত্যক্ত ভবনে ছিলেন? পৃথিবীর কোন দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কী এরকম পোড়ো পোড়ো বিধ্বস্ত স্যাঁতস্যঁতে পরিবেশে রাখে? কারণ যারা প্রতিহিংসা বিদ্বেষ ঈর্ষা ও অসুয়াতে ভোগে তারাই কেবলমাত্র তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এহেন নির্মম আচরণ করতে পারে। বিরোধী প্রতিপক্ষের প্রতি আওয়ামী লীগের আচরণ ২৫ শে মার্চের পর  পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চাইতে কোন অংশেই কম নয়।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ঈদের দুদিন আগে থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দেশের বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের উপর  ওবায়দুল কাদের সাহেবের নির্দেশে যে বাধা ও নির্দয় আচরণ করা হয়েছে তার নজির একমাত্র আওয়ামী লীগই। ঈদুল ফিতরের ন্যায় একটি প্রধান উৎসবের দিনেও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মতো মানুষও নিজ গ্রামের বাড়িতে পুলিশের দ্বারা অবরুদ্ধ থাকতে হয়েছে। উৎসবের দিনে তিনি বাইরে বেরুতে পারেননি এবং নিকটজনরা তার বাসায় ঢুকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে পারেননি। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা অবৈধ ক্ষমতার অহংকারে হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে পড়েছেন। এরা বিরোধী দলের স্বাভাবিক জীবন যাপন, সামাজিক অনুষ্ঠান, ধর্মিয় উৎসবেও বর্বোরচিত হস্তক্ষেপ করছে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা এবং বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাহেব বলেছেন, বেগম জিয়া নাকি বিদেশ যাওয়ার জন্য ইউনাইটেডে চিকিৎসা নিতে চান। তিনি ইউনাইটেডে এসে চিকিৎসকদের দিয়ে তিনি বিদেশে যাওয়ার সুপারিশ করিয়ে নিবেন। তিনি বিদেশ যাওয়ার জন্যই নাকি এ পাঁয়তারা করছেন। তিনি বলেন, কাল্পনিক বানানো গল্পে চ্যাম্পিয়ন আওয়ামী নেতারা। জনাব বাণিজ্যমন্ত্রী আপনি ভূলে গেছেন,কারাগার থেকে চিকিৎসার নামে বিদেশে যাওয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য আপনার নেত্রীর। রাজনীতি থেকে প্রধান নেতৃত্বকে মাইনাস করার তত্ত্ব আপনাদের কয়েকজনের মাথা থেকে এসেছে এরকম একটা ধারণা জনগন পোষন করে। এক্ষেত্রে বহুল প্রচারিত মাইনাস টু তত্ত্ব আপনাদেরই মানস সন্তান। এখন আমার প্রশ্ন আপনারা কী এখন মাইনাস টুতে আছেন না মাইনাস ওয়ানে আছেন এটা একটু খোলাসা করে জনগনকে জানাবেন কী? দেশনেত্রী বেগম জিয়া এমন নেত্রী যাকে জোর করে দেশ থেকে পাঠানো যায়নি। কিন্তু আপনার নেত্রী সহজেই দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়ার অনঢ় ও অনমনিয়তার কারণে ১/১১’র সরকার ব্যর্থ হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী এবং আপনি মন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু জনগনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে বিগত পাঁচ বছর অবৈধভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছেন। রিজভী বলেন,  বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চান এজন্য যে তাঁর হাঁটুতে যে মেটালিক প্লেট আছে সেটির এক্সরে এবং উন্নত মানের এমআরআই ও সিটি স্ক্যানের ব্যবস্থা সেখানে আছে। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরাও সে পরামর্শই দিয়েছেন। তাঁর শারীরিক যথাযথ পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্যই ইউন্ইটেড হাসপাতালের কথা বলা হয়েছে। আওয়ামী সরকার দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে পানি ঘোলা করার উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাঁকে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে নি:শেষ করে দেওয়া। তাঁকে চিকিৎসা না দেওয়ার জন্যই ওবায়দুল কাদের সাহেবরা নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা চেতনায় মানবকিতা সহমর্মিতার কোন বালাই নেই, আছে শুধু হত্যার হুমকি আর রক্তের নেশা। অসহিষ্ণু মননে থাকে না কোন নান্দনিক বোধ। তাই দেশব্যাপি চলছে বেআইনি বিচারবর্হিভূত হত্যার মাহযজ্ঞ, রক্ত জমাট বাধা আতঙ্ক দেশের জনপদে জনপদে তাড়া করে ফিরছে। আর এ জন্যই আওয়ামী শাসনের কোথাও আস্থা ও স্বস্তির লেশ মাত্র নেই। রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ইউনাইটেড হাসপাতালে দিতে হবে। এ নিয়ে কোন টালবাহানা জনগন মেনে নিবে না। অপপ্রচারের মিথ্যা-সন্ত্রাস করে ধারাবহিক অশান্তি জিইয়ে রাখলে এর খেসারত সরকারকেই দিতে হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status