অনলাইন

কারাগারে খালেদা জিয়ার অন্যরকম ঈদ

স্টাফ রিপোর্টার

১৭ জুন ২০১৮, রবিবার, ১২:৫৫ অপরাহ্ন

ঈদের দিন কারাগারে অন্যরকম একটি দিন কাটিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ঈদের দিন খালেদা জিয়ার কারাগারে অপেক্ষায় ছিলেন কখন সাক্ষাতে যাবেন স্বজনেরা। প্রত্যাহিক নিয়ম অনুযায়ী খালেদা জিয়া প্রতিদিন দেড়টার মধ্যেই সেরে নেন দুপুরের আহার। কারা কর্তৃপক্ষ স্বজনদের সাক্ষাতের সময় নির্ধারণ করে দুপুর ২টায়। ফলে ঈদের দিন দুপুরের আহার গ্রহণের রুটিনে ব্যাঘাত ঘটে খালেদা জিয়ার। দুপুর সোয়া ২টায় পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা কারাগারে গেলে তাদের নেয়া খাবার খান তিনি। আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে বাসার রান্না করা খাবার যখন মুখে তুলেন খালেদা জিয়া ততক্ষণে ঘড়িতে বেজে গেছে পৌনে তিনটা। এর আগে সোয়া ২টায় খালেদা জিয়ার প্রয়াত ভাই সাঈদ এস্কান্দরের স্ত্রী নাসরিন এস্কান্দার ও তার ছেলে শামস এস্কান্দার, শাফিন এস্কান্দার, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, ছেলে অভিক এস্কান্দার, এরিক এস্কান্দার, ভাগ্নি অরনি এস্কান্দার, অনন্যা এস্কান্দার, শাফিয়া ইসলাম, ভাগিনা সাজিদ ইসলাম, মো. মেহরাব, ডা. মো. আল মামুন, জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বড় বোন শাহিনা খান জামান বিন্দু, তার স্ব^ামী শফিউজ্জামান, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তারসহ গুলশানের বাসা ফিরোজার গৃহকর্মী ও গাড়ি চালকসহ ২০জন কারা ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরিবারের সদস্য বাসা থেকে খালেদা জিয়ার পছন্দের খাবারগুলো রান্না করে নিয়ে যান। অবশ্যই কারাগারে নেয়ার আগে খাবারগুলো কারা কর্তৃৃপক্ষ পরীক্ষা করেন। এছাড়াও স্বজনেরা খালেদা জিয়ার জন্য বেগুনি সাদা অর্কিডের একটি ফুলের তোড়া নিয়ে যান। সাক্ষাত শেষে বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে তারা বেরিয়ে আসেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অসুস্থ শরীর নিয়েও খালেদা জিয়াকে সাক্ষাতের জন্য অন্য একটি কক্ষে আনা হয়। দুই পাশ দিয়ে দুইজন মহিলা কারারক্ষি তাকে ধরে সে কক্ষে নিয়ে আসেন। খালেদা জিয়া বোন ও ভাইয়ের স্ত্রী ও স্বজনদের বুকে জড়িয়ে নিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ছোট ভাইসহ তাদের সন্তানেরা খালেদা জিয়াকে পায়ে ধরে সালাম করেন। এ সময়ে অনেকে আবেগপ্রবণ হলেও খালেদা জিয়া তাদেরকে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ধৈর্য্য ধরতে পরামর্শ দেন। তিনি স্বজনদের কাছে প্রত্যেকের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ-খবর নেন। এদিকে কারাগার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঈদ উপলক্ষে প্রথম শ্রেনীর বন্দি হিসেবে সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেয়া হয় দুুধের সেমাই, জর্দা ও মিষ্টি। তার চাহিদা অনুযায়ী দুপুরের খাবার রান্না করা হয়। ওদিকে ঈদের দিন সকাল ১০টা থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। বিএনপির নেতা-কর্মীরা কারাগারের সামনে যাবে- এমন কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে এই ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে জানায় পুলিশ। উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডের পর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে তার বন্দিত্ব সময় ছাড়িয়েছে চার মাস। দীর্ঘ ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া কারা অন্তরীন অবস্থায় তিনবার ঈদ উদযাপন করেন। তবে রাজনৈতিক সরকারের সময়ে কারাগারে এটিই তার প্রথম ঈদ। এর আগে ওয়ান ইলেভেনের সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালে ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের পর সংসদ ভবনে স্থাপিত সাব জেলে বন্দি রাখা হয়েছিলো। ওই সময়ে দুইটি ঈদ সেই সাবজেলে উদযাপন করেছেন তিনি। পাশেই আরেকটি সাবজেলে তখন কারাবন্দি ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status