অনলাইন

টর্নেডোর আঘাতে তছনছ চট্টগ্রাম বন্দর, একজনের মৃত্যু

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

১৪ জুন ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৩:০০ পূর্বাহ্ন

সকাল ৯টা। চট্টগ্রামজুড়ে তখন সন্ধ্যার ঘনঘটা। আর এই সময় প্রচন্ড এক দমকা হাওয়ায় তছনছ হয়ে যায় চট্টগ্রাম বন্দর। এমনকি বন্দরের জেটিতে বেঁধে রাখা কনটেইনারবাহী একটি জাহাজও দড়ি ছিঁড়ে কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে চলে যায়। আহত হয় ২০-২১ জন শ্রমিক। এদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা পরিষদের সদস্য মো. জাফর আলম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আকাশে ঘুমট অবস্থা। ঘনকালো মেঘে চট্টগ্রামজুড়ে নেমে আসে সন্ধার আবহ। এরমধ্যে সকাল ৯টার দিকে আঘাত হানে প্রচন্ড শক্তিশালী টর্নেডো।
এ সময় বন্দরের অভ্যন্তরের সিসিটি ইয়ার্ডে সারি সারি করে একটির ওপর একটি রাখা শতশত পণ্যভর্তি ও খালি কনটেইনার দমকা হাওয়ায় উড়ে ছিটকে পড়ে এলোমেলো হয়ে যায়। ভেঙে যায় ডক অফিসের সীমানা প্রাচীর (ফেন্সিং ওয়াল)। ৯, ১২, ১৩ ১৪ ও ১৭ নম্বর শেডের ছাউনি উড়ে গিয়ে তছনছ হয়ে পড়ে।
আকস্মিক এই টর্নেডোর আঘাতে এসব শেডে কর্মরত অন্তত ২০-২১ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। ডক শ্রমিক হাসপাতালে তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে রাসেল দে (৩০) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তিনি।   
বন্দরের টার্মিনালের ব্যবস্থাপক গোলাম মো. সারওয়ারুল ইসলাম জানান, টর্নেডোটি ছিল বন্দর কেন্দ্রিক। এটি প্রচন্ড বেগে আঘাত হানে বন্দরের সিসিটি ইয়ার্ডে। মাত্র ৪০-৪২ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল টর্নেডোর আঘাত। এ সময় পণ্যভর্তি ও খালি শতশত কনটেইনার শেড থেকে উড়ে গিয়ে এলোমেলো হয়ে যায়। কিছু শেডও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া জেটিতে অবস্থানরত একটি কনটেইনারবাহী জাহাজ এমভি ওইএল স্ট্রেইটস দড়ি ছিঁড়ে কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে চলে যায়। জাহাজটিতে বোঝাই করা শত শত কন্টোইনারের সারি ভেঙে পড়ে। এরমধ্যে অনেকগুলো কনটেইনার কর্নফুলী নদীর পানিতে পড়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
তবে টাগ বোটের সহায়তায় জাহাজটি পুনরায় জেটিতে ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে। শেডে উড়ে যাওয়া কনটেইনারগুলো আবার আগের জায়গায় রাখার কাজ শুরু হয়েছে। শেডে আহত শ্রমিকদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। নিহত রাসেল দে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ভাটিখাইন এলাকার রণজিত দেব এর পুত্র বলে জানান তিনি।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো. ফরিদ মিয়া জানান, চট্টগ্রামে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ছিল। সকল নদীবন্দর সমূহে ৩ নম্বর সতর্কতা বহাল ছিল। কিন্তু ভারী বর্ষণের বদলে থেমে থেকে টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছে। তবে মানুষের মনে ভয় জাগানোর মতো ঘনকালো মেঘ জমেছে আকাশে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে আঘাত হানল টর্নেডো।
এটি ছিল শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রীক। এর আশপাশের কোথাও কোন দমকা হাওয়া পর্যন্ত হয়নি। এ রকম টর্নেডো আরও আঘাত হানতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন ফরিদ মিয়া।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status