প্রথম পাতা

জার্মানিকেই এগিয়ে রাখছেন আমিনুল

১৪ জুন ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:২০ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক ব্রাজিলের পাঁড় সমর্থক। কিন্তু রাশিয়া বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বিচারে তিনি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকেই এগিয়ে রাখছেন। রাশিয়া বিশ্বকাপে তিনি যে পাঁচটি দেশের মধ্য থেকেই চ্যাম্পিয়নশিপ নির্ধারণ হওয়ার সম্ভাবনা দেখেন সেগুলো হচ্ছে- জার্মানি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল ও ফ্রান্স।
আমিনুল বলেন, সেই ছোটবেলা থেকেই আমি ব্রাজিলকে সাপোর্ট করি। দেশটির ছন্দময় ফুটবলের কারণেই ব্রাজিলের প্রতি আমার আকৃষ্টতা। আর নিজে যখন খেলা শুরু করেছি তখন থেকেই ব্রাজিলের একনিষ্ঠ ভক্ত বলা চলে। তিনি বলেন, এ বিশ্বকাপে আমার কাছে জার্মানিকেই অনেক বেশি ফেভারিট মনে হচ্ছে। জার্মানি সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছে এবং সে টিমের অনেকেই এবারও আছেন। বিশ্বকাপজয়ী জার্মানির তরুণ ফুটবলারদের অনেকেই এখন ম্যাচিউরড এবং তারা খুব ভালো করছে।
ফুটবলের নতুন স্টার সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতিটি বিশ্বকাপই নতুন কিছু স্টার ও সুপার স্টারের জন্ম দেয়। নতুন খেলোয়াড়দের জন্য বড় সম্ভাবনার একটি ক্ষেত্র এ বিশ্বকাপ। প্রতিটি বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে প্রতিটি দলের খেলোয়াড়রা ভালো কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে। তাদের একটি স্বপ্ন থাকে, এখানে ভালো পারফর্ম করে তারা যাতে বিশ্বের বড় বড় ক্লাবগুলোয় যাতে, খেলতে পারে এবং তাদের সে সুযোগটা তৈরি হয়। সে জায়গা থেকে আমি মনে করি, নতুন দল পানামা ও আইসল্যান্ড থেকেও কিছু স্টার বেরিয়ে আসতে পারে।
রাশিয়া বিশ্বকাপে যাদের ওপর চোখ থাকবে বলে মনে করেন আমিনুল হক তাদের মধ্যে রয়েছেন- লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, নেইমার, জেসুস, সালেহ ও জার্মানির গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার। এছাড়া জার্মানি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পর্তুগালের খেলোয়াডদের ওপরই আসলে বরাবরের মতো ফোকাসটা বেশি থাকবে। তবে আমরা কিছু নতুন স্টার, সুপার স্টারের জন্য অপেক্ষা করছি। তারা পারফর্ম করলে বিশ্বফুটবল নতুন কিছু সুপার স্টার দেখতে পাবে।
খেলোয়াড়ি জীবনে গোলরক্ষক ছিলেন তাই বিশ্বকাপে গোলরক্ষকদের নিয়ে আমিনুল হক বলেন, আমার কাছে মনে হয়, জার্মানি যে ম্যানুয়েল নয়্যার আছে, স্পেনের ডেভিট গিয়া, এদের ভালো করার সম্ভাবনা বেশি। এক সময় ব্রাজিলের গোলকিপারের যে শক্ত অবস্থান ছিল সে সুদৃঢ় একটি অবস্থান ছিল সেখান থেকে ব্রাজিল কিছুটা দূরে সরে এসেছে।
প্রিয় দল ব্রাজিলের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে আমিনুল হক বলেন, ব্রাজিল আসলে টোটাল ফুটবল খেলে। গোলকিপার থেকে শুরু করে ডিফেন্ডার কিংবা মিডফিল্ডার কিংবা স্ট্রাইকিং জোনে সবাই পার্টিসিপেট করে। এবার নেইমার, জেসুস, কুটিনহো, ফিরমিনো মিলিয়ে ব্রাজিলের ফরোয়াড লাইন সবচেয়ে স্ট্রং। ডিফেন্সও ভালো। তারা বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোতে খেলে। কিন্তু ব্রাজিলের ডিফেন্স যখন অ্যাটাকিং লাইনে পার্টিসিপেট করে তখন দেখা যায়, কাউন্টার অ্যাটাকে পড়লে ব্রাজিলের ডিফেন্স লাইন অরক্ষিত হয়ে যায়। এখানেই ব্রাজিলের দুর্বলতা কিছুটা আছে।
বাংলাদেশের মানুষ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা দুই দেশের সমর্থনে বিভক্ত- বিষয়টিকে যেভাবে দেখেন আমিনুল হক। তিনি বলেন, ব্রাজিল যখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় তখন পেলে ওয়ার্ল্ডের একজন বেস্ট ফুটবলার ছিলেন। পেলের নাম শুনতে শুনতে এবং বইপুস্তকে সেই কালো মানিকের কথা পড়তে পড়তে বাংলাদেশে ব্রাজিলের একটি সাপোর্টার বেইজ গড়ে ওঠে। পাশাপাশি ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেখানে ম্যারাডোনার অসাধারণ খেলা ও গোলের কারণে আর্জেন্টিনার ওপর একটা ফোকাস তৈরি হয়। বিশ্বফুটবলে এই দুটি দলই বেসিক্যালি ডমিনেট করে। তারা সবসময় প্রত্যাশিত থাকে, তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবে। সে যোগ্যতাও তাদের আছে। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বিশ্বফুটবলের পরাক্রমশালী দুটি দেশ। লিওনেল মেসি ও নেইমারের ওপর ভিত্তি করে এখন এই দুটি দেশের সমর্থকের সংখ্যা বাড়ছে। আমার মনে হয়, বাংলাদেশের অনেকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালকেও সমর্থন করে। আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশ ফুটবল পাগল একটি দেশ, সেটি দেশের প্রতিটি আনাচে-কানাচে গেলেই দেখা যায়। বাংলাদেশের মানুষ যে কি পরিমাণ ফুটবলকে ভালোবাসে সেটা এ বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই দেখা যায়, বোঝা যায়। যদিও আমাদের নিজেদের ফুটবলের ক্ষেত্রে এই জৌলুসটা আমরা দেখি না। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। কিন্তু বিশ্বফুটবলে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার যে সাপোর্টার বেইজড বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে সেটা আমার কাছে মনে হয় যে, বাংলাদেশের ফুটবলের উন্মাদনার বহিঃপ্রকাশ।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ভক্তদের উদ্দেশ্যে আমিনুল হক একটি অনুরোধ রেখেছেন। তিনি বলেন, দুই দেশের সমর্থকদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলতে চাই। সেটি হচ্ছে- সমর্থন যেন স্পোর্টসম্যান শিপের ভেতরে থাকে। সেটা যাতে পারসোনাল কোনো ইস্যু তৈরি না করে। যাতে এ সমর্থন নিয়ে যেন, মারামারি-কাটাকাটি সে ধরনের কোনো সিচুয়েশন যেন তৈরি না হয়।
স্বাগতিক রাশিয়াকে দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রত্যাশা করেন বাংলাদেশ ফুটবল দলের সাবেক এ অধিনায়ক। তিনি বলেন, স্বাগতিক দেশ হিসেবে পরিবেশ, আবহাওয়া, পরিচিত মাঠ মিলিয়ে রাশিয়ার একধরনের এডভানটেজ অবশ্যই থাকবে। পৃথিবীর প্রত্যেকটা স্বাগতিক দেশই হোমগ্রাউন্ডে এডভানটেজটা নেয় এবং পায় সেটা। যদি তারা আদায় করে নিতে পারে। সেক্ষেত্রে আমি আশা করি তারা দ্বিতীয় রাউন্ডে অবশ্যই যেতে পারে।
অনুলিখন: কাফি কামাল
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status