দেশ বিদেশ

পৌর মেয়রের কার্যালয়ে বৈঠক রাসেলের মৃত্যু ঘটনার রফাদফা

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে

২৮ মে ২০১৮, সোমবার, ১০:১৪ পূর্বাহ্ন

অবশেষে নৈশপ্রহরী রাসেল মিয়ার মৃত্যুর দায় চুকিয়ে ফেলা হয়েছে। শনিবার রাতে পৌরসভায় মেয়রের কার্যালয়ে এক বৈঠকে চাঞ্চল্যকর এ মৃত্যুর রফাদফা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন। সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ নবীর হোসেন ও অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. জিয়াউল হক এবং নিহতের পরিবারের লোকজনও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানায়-ঘটনার মীমাংসায় নিহতের বড় ভাই ও ছোট ভাইকে পৌরসভা ও পুলিশে অস্থায়ী চাকরি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। তা ছাড়া নিহতের মাকে এককালীন কিছু টাকা দেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই গতকাল রোববার দুপুরে নিহতের মা আমেনা বেগমকে থানায় ডেকে নিয়ে নগদ ২ লাখ টাকা দেয়া হয়। এ আগে তার ছেলেকে হত্যার জন্য মেয়রের ভাইপোকে দায়ী করে দেয়া অভিযোগটি লিখিতভাবে প্রত্যাহার করিয়ে নেয়া হয়। তার ছেলে রাসেল থানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে এমন লিখিত রাখা হয় বলে সূত্র জানায়। আমেনা বেগমকে থানায় নিয়ে যান মধ্যপাড়ার শ্রমিক নেতা শফিকুল ইসলাম। শহরের সিটি সেন্টার মার্কেটে পৌর মেয়রের ভাইপো আসিফ ইকবাল খানের মালিকানাধীন কাপড় বিক্রির দোকান ‘স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউজ’-এ চুরির অভিযোগে গত ২১শে মে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের নৈশপ্রহরী রাসেলসহ আরো কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। ওইদিন রাতেই থানার ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় রাসেল। এর ৩ দিনপর ২৪শে মে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় রাসেল। এ ঘটনায় তার মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে ওইদিনই সদর মডেল থানায় তার ছেলেকে হত্যার অভিযোগ দেন। এতে মেয়র ভাইপোকে প্রধান আসামি করা হয়। তার অভিযোগ স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী আসিফ ইকবাল খান তার দোকানে চুরির অভিযোগে ২১শে মে তার ছেলে রাসেলকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে অন্য আসামিদের নিয়ে বেধড়ক পেটায়। পরে চুরির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাসেলকে সদর থানায় নিয়ে যায়। থানায় কর্তব্যরত কর্মকর্তা রাসেলকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন তাদেরকে। এরপর আসিফ ও সুমন রাসেলকে থানার ছাদে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। পরবর্তীতে রাসেলকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এরপর ৩ দিনেও এই অভিযোগ নথিভুক্ত না করে ফেলে রাখে পুলিশ। এরপরই শনিবার রাতে পৌরসভায় ওই বৈঠকটি হয়। বৈঠকে মেয়র তার ভাইপোকে নির্দোষ দাবি করে পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে একাজ করেছে বলে অভিযোগ করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল হক খোকন পৌরসভার বৈঠকে তার উপস্থিতির কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনার নিষ্পত্তি হয়েছে বলে জানান। তবে সদর মডেল থানা পুলিশ এনিয়ে মুখ খুলছে না। নিহতের ভাই লিটন মিয়ার কাছে সালিশের বিষয়ে জানতে ফোন দিলে তিনি এ বিষয়ে শাহজাদা নামের এক সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status