শেষের পাতা

‘সিজারিয়ান ডেলিভারি মাতৃস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক’

স্টাফ রিপোর্টার

২৮ মে ২০১৮, সোমবার, ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন

এক হাজার মায়ের মধ্যে ১৫ জনের সিজারিয়ান ডেলিভারি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গ্রহণযোগ্য হার হলেও বাংলাদেশে বেসরকারি হাসপাতালের এই হার ৮০ শতাংশ পর্যন্ত হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী এই তথ্য জানান। আজ ২৮শে মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সিজারিয়ান ডেলিভারির এই হার মাতৃস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক। অপ্রয়োজনে সিজার মায়ের জন্য ক্ষতিকর। প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, এখন এটা (প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির হার) ৪২ শতাংশ, এই হার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া দরকার। ক্লিনিক বা হাসপাতালে যদি ডেলিভারি না হয়, বাসাবাড়িতে হয় যেখানে প্রশিক্ষিত নার্স বা মিডওয়াইফ থাকে না। সেজন্য মা ও শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের আরো সচেতনতা তৈরি করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের অভিযোগ রয়েছে। এটা কমানোর কী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই কথাটা সঠিক। আমাদের দেশে সি-সেকশন (সিজারিয়ান ডেলিভারি) অনেক বেড়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্রহণযোগ্য হার হচ্ছে প্রতি হাজারে ১৫ জন। সরকারি হাসপাতালে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হয়। টার্শিয়ারি লেভেলে হাসপাতালেও হয়ে থাকে। জটিল কেসগুলো আসে বলে ওটা (সিজারিয়ান ডেলিভারি) একটু বেড়ে যায়। ইদানীং কিছু পরিসংখ্যান পেয়েছি বেসরকারি হাসপাতালে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত সিজারিয়ান ডেলিভারি করা হয়। তিনি বলেন, এটা কমানোর জন্য আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি, এখন প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একটি ফরম পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে, চেকলিস্ট। সেই ফরমে বিভিন্ন ধরনের রিকিয়্যারমেন্ট আছে। সেটা ফিলাপ করে আমাদের দিতে হবে। রোগীর টোটাল তথ্যটা- কেন, কী কী কারণে তাকে সিজার করা হলো, পরিবারের অনুমোদন নেয়া হয়েছে কি-না, এটার জটিলতা ছিল কি-না। বিভিন্ন ধরনের কমেন্ট ওখানে আছে, এটা আমাদের কাছে আসবে। জাহিদ মালেক বলেন, অযথা সিজার না করার জন্য সবাইকে আমাদের বলা আছে। দুই মাস হলো হাসপাতালগুলোতে ফরম দেয়া হচ্ছে, আমরা এখন ফিডব্যাক করছি।

ফরম ফিলাপ হয়ে আসার পর আমাদের একটি বিশেষজ্ঞ দল থাকবে, তারা ওটা দেখবেন। দেখার পর কোথাও গাফিলতি পাওয়া গেলে অবশ্যই যে শাস্তি বিধানে আছে, তা দেব। যে প্রতিষ্ঠান এই কাজ করবে তাদের জরিমানা ও বন্ধ করে দেয়া হবে। অন্যায় কাজ করলে তো ছেড়ে দেয়া হবে না। দেশে সিজারিয়ানের বর্তমান হার নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য উদ্বেগজনক মনে করেন কি-না জানতে চাইলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য কিছুটা তো উদ্বেগজনক বটেই। আমাদের কখনই কাম্য নয় ৭০/৮০ শতাংশ সিজার হোক। যেখানে অ্যাকসেপ্টট্যাবল লিমিট হলো ১৫ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘অপ্রয়োজনে সিজার করা হলে সেই মায়ের তো ক্ষতি হলো। তাদের দুর্বল করে দিলেন। মিডওয়াইফ তৈরি করতে পারলে সিজার কমে যাবে। কারণ ডাক্তারের মাধ্যমে ডেলিভারি করলে তিনি সময় দিতে পারেন না। একটি ডেট দিয়ে ডাক্তার একটি হাসপাতালে যায়, সেখানে মায়েরা অপেক্ষা করেন, সিজার করে চলে আসেন। মিডওয়াইফ থাকলে তিনি সময় দেবেন, ডেলিভারিতে তো সময় লাগে। প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব ফয়েজ আহম্মদসহ মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status