বাংলারজমিন

হালুয়াঘাটের সেই নুরজাহান বিবির পাশে দাঁড়ালেন শিক্ষক

ওমর ফারুক সুমন, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) থেকে

২৮ মে ২০১৮, সোমবার, ৮:৫৪ পূর্বাহ্ন

‘বাবা ঘরে কিছু নাই, হুদা করলা ভাজা দিয়া সেহরি খাইছি’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে হালুয়াঘাটের দর্শারপাড় গ্রামের ৯২ বছরের সেই অসহায় নুরজাহান বিবির পাশে এবার সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন সেন্ট মেরিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কাকলি রাকসাম। তিনি শুক্রবার বিকালে অসহায় নুরজাহানের বাড়িতে যান এবং তার হাতে নিত্য প্রয়োজনীয় বস্ত্র, দ্রব্যাদি ও খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন। এ সময় নুরজাহান মৃদু হাসিতে বলেন, ‘মা’ আমার কার্ডটি কি হবে না? আমার কার্ডটি কইরা দেইন। বাঁচমু আর কয়দিন। আমি মরবার আগে একটু দেইখা যাইবার চাই। নুরজাহানের দাবি একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড। নুরজাহানের দুইটি ছেলে ছিল। একজন অসুখে মারা যায়। আরেকজন জীবিত থাকলেও অসুস্থ হয়ে ঘরে পড়ে আছে। একজন স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে সুরবানু তাকে খেয়ে না খেয়ে দেখাশোনা করেন। কোনো বেলা খায় আবার কোনো বেলা না খেয়েই চলে নুরজাহানের জীবন। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই বয়সেও সে একটি রোজা ভাঙেনি। কিছু জিজ্ঞেস করলে কথা বলতে গিয়ে অবাক দৃষ্টিতে ফ্যাঁলফ্যাঁল করে তাকিয়ে থাকে। এদিকে স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে সুরবানু কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, মারে লইয়া উপজেলা পরিষদে চার দিন গেছি। কইছে ছাগল দিবো, কার্ড দিবো। মেম্বারে দুই দিন যাইবার কইছে। পরে গেছি। পরে হেরা কিছুই দেই নাই। নামই নিছে না! ছাগল দিবো কেমনে? বইয়া থাইকা চইলা আইছি। কত গেলাম, পাত্তাই পাই না! অনেক মানুষ ধরলাম কিছুই পাইলাম না। মাইনসে বয়স্ক ভাতা পায়! আমার মা পায় না। জানা যায়, এই বয়সেও একটি রোজাও ভাঙেনি নুরজাহান বিবি। তবে, তার শরীর ভালো নেই। রোগ শোকে জর্জরিত। হয়তো একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড পেলে শান্তিতে মরতে পারতেন। কিছুটা হলেও তার তৃষ্ণা মিটতো। আমরা কি পারি না প্রায় শতবর্ষী এই নুরজাহান বিবির মুখে একটু হাসি ফোটাতে!
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status