বাংলারজমিন

বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি

শামীম আরমান, দোহার (ঢাকা) থেকে

২৬ মে ২০১৮, শনিবার, ৯:৩১ পূর্বাহ্ন

ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৯টা বেজে ১৯ মিনিট। লটাখোলা করম আলী মোড় থেকে ভাঙ্গা ব্রিজের পাশ হয়ে লটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দিকে যেতেই দূর থেকে চোখে পড়লো স্কুলড্রেস পরিহিত এক ক্ষুদে স্কুল শিক্ষার্থী কাঁদছে। কাছে গিয়ে তার নাম জিজ্ঞেস করতেই বললো ওর নাম আমিনুর। লটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তুমি কাঁদছো কেন বাবা? এমন প্রশ্ন করতেই এই প্রতিবেদকের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আরো কাঁদছে। ওর সাথে থাকা লটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আবির ইসলাম বলে ‘এই রাস্তা দিয়ে স্কুল থেইক্যা আহনের সময় আমিনুর পিছলা খাইয়া পইরা গ্যাছে, তাই কানবার লাগছে।’ আমিনুরের মতো মাঝে মাঝেই বৃষ্টির সময় জমে থাকা পানিতে এভাবেই পড়ে স্কুল শিক্ষার্থীসহ এই রোডে যাতায়াতকারী অনেক মানুষ। তবে এই গুরুত্বপূর্ণ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের লটাখোলা করম আলী মোড় ভাঙ্গা ব্রিজ লটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয় সংযোগ সড়কটি কেন মেরামত করছে না পৌরসভা তার সঠিক কোনো কারণ জানে না এই সড়কে যাতায়াতকারী পথচারীরা। এই বিষয়ে লটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির মানবিক শাখার শিক্ষার্থী ঝুমুর আক্তার বলে অল্প বৃষ্টিতেই এই পথ দিয়ে পানি জমে। ফলে আমাদের স্কুলে যেতে খুবই কষ্ট হয়। নবম শ্রেণির মানবিক শাখার শিক্ষার্থী শিখা আক্তার বলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম আসলেই এই পথ দিয়ে বিদ্যালয়ে যাই পানিতে পা ভিজিয়ে। কখনো কখনো অনেকককে পরে যেতেও দেখিছি। তাই এই রাস্তাটি উঁচু করলে হয়তো এই সমস্যার সমাধান হবে। লটাখোলা আজাহার আলী স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিনহাজ বলে আমরা যারা স্কুলে পড়ি তাদের এই পথ চলাচলের একমাত্র মাধ্যাম। অথচ দৈনন্দিন ব্যবহারের এই পথটি কি কেউ করে দেবে না। তাহলে এটা কিসের পৌরসভা বলেন? এ এলাকার বাসিন্দা নুরু মোল্লা বলেন, ভাই পৌরসভার মধ্যে আমরা বসবাস করি। অথচ কোনো মেহমান যদি বাড়িতে এসে জিজ্ঞেস করে এটা বলে আপনাদের পৌরসভা তখন খুব লজ্জা পাই। নুরু মোল্লার মতো এই এলাকার আরেক বাসিন্দা মো. আজহার বলেন, আমরা অতকিছু বুঝি না ভাই আমরা বুঝি পৌরসভায় আমরা বসবাস করি পৌরসভা আমাদের সেই নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবে। এছাড়া এই এলাকার আরেক বাসিন্দা মাসুদ দেওয়ান বলেন এই সড়ক দিয়ে অনেক লোকজন চলাচল করে। কিন্তু বৃষ্টি আসলেই তাদের দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায়। অনেক শিক্ষার্থী মানুষের বাড়ির ওপর দিয়ে চলাচল করে। এতে অনেকেই বিরক্তি বোধ করে।
এ ব্যাপারে পৌরসভা ১নং ওয়ার্ড কমিশনার বদরুল ইসলাম বদু বলেন, আমি যতটা জানি এই সড়কটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ভাই দেখেছেন। খুব শিগগিরই হয়তো জেলা পরিষদ থেকে এই সড়কের কাজ হতে পারে।
অপরদিকে দোহারের দক্ষিণ জয়পাড়া মাঝিপাড়া সড়কেও দীর্ঘ কয়েকমাস অতিবাহিত হলেও রাস্তায় পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজেও চলছে ধীরগতি। এতে দুর্ভোগে পরেছে এলাকাবাসি। এই এলাকার অনেক বাসিন্দা বলেন প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় আমরা বসবাস করি ঠিকই। কিন্তু সেই পৌরসভার নাগরীক হিসেবে কতটুকু অধিকার আমরা ভোগ করছি তার উদাহরণ এই রাস্তার কাজের অবস্থা দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন। পশু হাসপাতাল থেকে থানার মোড় সংযোগ সড়কের পুরো রাস্তাটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পরেছে। ফলে এই এলাকার কোনো মানুষ তাদের দৈনন্দিন কোনো কাজের জন্য এই সড়কে রিকশা নিয়েও আসতে পারে না। এ বিষয়ে পশু হাসপাতালসংলগ্ন থানার মোড় সংযোগ সড়কের ড্রেনেজ কাজের ঠিকাদার মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন ড্রেনের ব্যাজের ঢাকনা বড় হওয়ার কারণে তা পরিবর্তন করতে দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই ঢাকনাটি এনে ঢালাই শেষে এই কাজের পরিসমাপ্তি করা হবে। তাই অনতিবিলম্বে পশু হাসপাতাল থেকে থানার মোড় সংযোগ সড়কের ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য রিপিয়ারিংয়ের কাজ ও লটাখোলা এলাকার পানি নিষ্কাশনের কাজটি দ্রুত সম্প্রসারণ করতে পারলে এই দুই এলাকার বাসিন্দাসহ শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে এমনটাই আশাবাদী ভুক্তভোগি পৌরসভার জনসাধারণ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status