বিশ্বজমিন

টুইটার সমালোচনাকারীদের ব্লক করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন ট্রাম্প

মানবজমিন ডেস্ক

২৬ মে ২০১৮, শনিবার, ৯:২৮ পূর্বাহ্ন

টুইটারে সমালোচকদের ব্লক করে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ম্যানহাটানে ডিস্ট্রিক্ট জজ নাওমি বুচওয়াল্ড এক রায়ে এ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ও সরকারের অন্য কর্মকর্তাদের টুইটার অ্যাকাউন্ট, যা পাবলিক ফোরাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেখানে টুইটার ব্যবহারকারীরা তাদের নিজস্ব মত প্রকাশ করতে পারছেন না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জি নিউজ। এতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের জন্য অন্যতম মাধ্যম হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সেখানে তার যেসব অনুসারী তাদেরকে অবৈধ উপায়ে ব্লক করে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, @রিয়েল ডনাল্ড ট্রাম্প টুইটার অ্যাকাউন্টটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির একটি অখণ্ড ও বিতর্কিত অংশ করে তুলেছেন। এই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই তিনি তার এজেন্ডা, নীতি প্রকাশ করেন এবং সমালোচকদের সমালোচনা করে আক্রমণ করেন। এরই মধ্যে তার অ্যাকাউন্ট থেকে তাকে সমালোচনা করেন এমন অনেক সমালোচনাকারীকে ব্লক করে দিয়েছেন তিনি। এর ফলে ওইসব সমালোচনাকারী ট্রাম্পের টুইটের সরাসরি কোনো জবাব দিতে পারছেন না। তাই জজ নাওমি বলেছেন, সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর অধীনে কারো মুক্ত মত প্রকাশের অধিকারকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে তাকে এভাবে ব্লক করে দিয়ে। সংবিধানের ওই সংশোধনী বিষয়ে বিশেষজ্ঞা ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেস স্কুল অব ল-এর প্রফেসর ইউগিনি ভোলোখ। তিনি বলেছেন, বিচারকের এই সিদ্ধান্ত ট্রাম্পকে ছাড়িয়ে অন্য অনেকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। এর প্রভাব পড়বে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের ওপরও। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এক্ষেত্রে সমর্থন করছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়। ওই মন্ত্রণালয় বলেছে, আদালতের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সম্মানের সঙ্গে আমরা দ্বিমত পোষণ করি। আমার পরবর্তী করণীয় কি তা বিবেচনা করার চেষ্টা করছি। এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয় টুইটার ইনকরপোরেশন। তাই তারা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। জুলাই মাসে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির নাইট ফার্স্ট এমেন্ডমেন্ট ইন্সটিটিউট ও অন্যান্য টুইটার ব্যবহারকারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফার্স্ট এমেন্ডমেন্ট মামলা করেন। তারই জবাবে ওই রায় দিয়েছেন বিচারক বুচওয়াল্ড। মামলাটি করেন ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের সমাজবিজ্ঞানের প্রফেসর ফিলিপ কোহেন, ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক সংগঠক ও গীতিকার হলি ফিগুয়েরোয়া ও টেক্সাসের পুলিশ কর্মকর্তা ব্রান্ডন নিলি। এর মধ্যে কোহেনকে গত জুনে টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ব্লক করে দেন ট্রাম্প। তার অপরাধ প্রেসিডেন্টের একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন। তাতে ইংরেজিতে লিখেছিলেন তিনটি শব্দ। তা হলো ‘করাপ্ট ইনকমপিটেন্ট অথরিটারিয়ান’। বুধবার আদালত ট্রাম্প বিষয়ে যে রায় দিয়েছেন তাতে তিনি উল্লসিত। বলেছেন, এমন রায়ে বিচার ব্যবস্থার ওপর আমার আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখ্য, টুইটারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরো যাদের ব্লক করেছেন তাদের মধ্যে রয়ছেন উপন্যাসিক স্টিফেন কিং, অ্যানি রাইস, কমেডিয়ান রোজি ও’ডোনেল, মডেল ক্রিসি টাইজেন, অভিনেত্রী মেরিনা সিরতিস ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্তদের রাজনৈতিক অ্যাকশন বিষয়ক কমিটি ভোটভেটস ডট ওআরজি। এ মামলার শুনানিতে ট্রাম্পের পক্ষে আইন মন্ত্রণালয়ের আইনজীবীদের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন বিচারক বুচওয়াল্ড। তারা যুক্তি তুলে ধরে বলেন, প্রথম সংশোধনীর অধীনে প্রেসিডেন্ট ওইসব মানুষকে ব্লক করার অধিকার রাখেন, যাদের প্রতিক্রিয়া তিনি পেতে চান না। জবাবে বিচারক বুচওয়াল্ড বলেছেন, প্রথম সংশোধনীর অধীনে প্রেসিডেন্টের অধিকার সম্পর্কে অবশ্যই আমরা সম্মান জানাই এবং এ বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাই বলে এ সংশোধনীর তিনি সমলোচকদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারেন না। এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট যেটা করতে পারতেন তাহলো টুইটার ব্যবহারকারীদের ‘মিউট’ করে রাখতে পারতেন। এটা করলে ওইসব ব্যবহারকারী যখন টুইট করতেন তখন তা তিনি না দেখে থাকতে পারতেন। এতে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা লঙ্ঘন হতো না। তবে বিচারকের এই রায়ের সমালোচনা করেছেন ডিউক ইউনিভার্সিটির সংবিধান বিষয়ক আইনের প্রফেসর স্টুয়ার্ট বেঞ্জামিন। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও সরকারি অন্যদের টুইটার অ্যাকাউন্টকে পাবলিক ফোরাম হিসেবে দেখা ঠিক নয়।  

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status