খেলা

ফেডারেশনের অবহেলায় চাকরি ছাড়ছেন পার্ক তেগুন!

স্পোর্টস রিপোর্টার

২৬ মে ২০১৮, শনিবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন

গত এসএ গেমসেও সাঁতারে দুটি স্বর্ণ জিতেছে বাংলাদেশ। দুটি স্বর্ণই এসেছে মাহফুজা খাতুন শিলার হাত ধরে। এই শিলাকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ান কোচ পার্ক তেগুন। তার কোচিংয়ে মাহফিজুর রহমান সাগর, নাজমা খাতুন, সোনিয়ারা দিন দিন নিজেদের ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। তরুণ সাঁতারুদের নিয়ে পার্ক যখন আগামীর পরিকল্পনা করছেন, ঠিক তখনই তাকে তাড়িয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে উঠছেন ফেডারেশনের কতিপয় কর্মকর্তা। তাদের অবহেলা ক্ষুব্ধ হয়ে শেষ পর্যন্ত চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই কোরিয়ান কোচ।
পার্ক তেগুনের সঙ্গে ফেডারেশনের চুক্তি ছিল তিন বছরের। প্রতিবছর শেষে তা নবায়ন হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে একবছর শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় বছরে নবায়ন হবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিজ দেশে কোচিংয়ে মনোনিবেশ করতে চাইছেন কোরিয়ান এই কোচ। গত মার্চে চুক্তির মেয়াদের প্রথম বছর শেষ হয়েছে। এরপর নিজ দেশে ছুটিতে চলে গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন পর ছুটি কাটিয়ে ফিরলেও বাংলাদেশে নানা ক্ষোভের কথা বলছেন এই কোচ। জানালেন চার মাসের বেতন বকেয়া। ফেডারেশনের সহযোগিতাও পাচ্ছেন না। পার্ক তেগুন অভিযোগের সুরে বলেন, ‘সাঁতার উন্নয়নে ফেডারেশনের অনীহা ও অসহযোগিতার কারণে বাংলাদেশে আর কাজ করতে চাইছি না। এশিয়ান গেমসে নিজ দেশের হয়ে কাজ করতে চাই। ফেডারেশনের কর্তারা সাঁতার উন্নয়নে আগ্রহী নয়। রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নিয়ে তারা ব্যস্ত। আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। তারা তাদের স্বার্থের বাইরে কিছু করতে রাজি নয়।’ ছুটিতে থাকাকালীন সময়েই চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন পার্ক। নিজের বকেয়া বেতনসহ আনুষ্ঠানিকতা সারতেই মূলত বাংলাদেশে ফেরা। ঢাকায় এসে বললেন, ‘বাংলাদেশের সবকিছু জানি। এটাই মনে হয় আমার সমস্যা। ছুটিতে থাকতে অনেক ভেবেছি। নিজ দেশে থাকলে পরিবারের কাছে থাকতে পারবো। সবার সহযোগিতা পাবো। এখানে তো ভালো কিছু করতে হলে বাধা আসে। এই যে আমি পাঁচ দিন ধরে ঢাকায় এসেছি। ফেডারেশনের কেউ আমার খোঁজ খবর নেয়নি। এভাবে চললে বাংলাদেশের সাঁতারে উন্নতি হবে কী করে।’ উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে প্রথম কোচ হিসেবে ঢাকায় আসেন পার্ক। তারপর বিরতি দিয়ে ২০১৬ সালে এসএ গেমসে আবারো তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তার কোচিংয়ে বাংলাদেশ দুটি স্বর্ণপদক জিতেছে। দেশব্যাপী প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি চলেছে তার মাধ্যমে। মিরপুরে আবাসিক ক্যাম্পে আছেন অর্ধশতাধিক সাঁতারু। এ ছাড়া জাতীয় দলও ছিল কোরিয়ান কোচের তত্ত্বাবধানে।
সাঁতার ফেডারেশন অবশ্য কোচের সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া বলেছেন, ‘কোচের কোনো বেতন বকেয়া নেই। বরং তার আবেদনের কারণে ঢাকায় ফেরার টিকিট দিয়েছে ফেডারেশন। আর বর্তমানে মিরপুর ক্রীড়া পল্লীর পরিবেশ নিয়ে আপত্তির কিছু নেই। ফেডারেশন তাকে সব রকমের সহযোগিতা করছে। এমনকি তার সঙ্গে চুক্তি বাড়ানোর বিষয়টিও চিন্তা-ভাবনার মধ্যে আছে। পার্ক তো ভালো কোচ। আমরা তাকে হারাতে চাই না।’
মাসিক পাঁচ হাজার ডলার বেতন পার্ক তেগুনের। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) থেকে এই বেতন দেয়া হয়। তবে, নতুন চুক্তি নিয়ে বিওএর উপ-মহাসচিব আসাদুজ্জামান কোহিনূর চুক্তি নিয়ে জানান, ‘পার্ক তেগুনের চুক্তি শেষ। এখন ফেডারেশন যদি বলে চুক্তি নবায়ন করবে তাহলে ভালো। তখন আমরা চিন্তা-ভাবনা করে দেখবো বেতন দেয়া যায় কি না। তবে, এখন ফান্ড সংকট আছে। আদৌ পার্কের বেতন দেয়া যাবে কি না এ নিয়ে কিছুটা সংশয় আছে।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status