প্রথম পাতা

মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান

‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক

বাংলারজমিন ডেস্ক

২৫ মে ২০১৮, শুক্রবার, ১০:১০ পূর্বাহ্ন

মাদকবিরোধী অভিযানে এ পর্যন্ত কথিত বন্দুকযুদ্ধে অর্ধশতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল আরো নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে কুমিল্লা, মাগুরা ও ফেনীতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ, কক্সবাজার ও সাতক্ষীরায় মারা গেছে আরো তিনজন। এর আগে গত কয়েক দিনে আরো ৪৩ জনের মৃত্যু হয়। মাদকবিরোধী অভিযানে র‌্যাব ও  পুলিশের সঙ্গে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী। মাদক উদ্ধার ও চিহ্নিত ব্যবসায়ীদের ধরতে গিয়ে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটছে। তবে নিহতদের কারো কারো স্বজনের দাবি আটক বা তুলে নেয়ার পর তাদের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে মাদকবিরোধী অভিযানে মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যদি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা বিচারবহির্ভূত হত্যা নয়।

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে জানান, কুমিল্লায় বন্দুকযুদ্ধে রাজিব ও বাবুল প্রকাশ্য লম্বা বাবুল নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আমানগন্ডা সলাকান্দা নতুন রাস্তার মাথায় এবং রাত সোয়া ২টার দিকে সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা সংলগ্ন ঢাকা-চট্টগ্রাম পুুরাতন ট্যাংক রোডের গোয়ালমথন এলাকায় পৃথক এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের ৬ সদস্য আহত হয়েছে। নিহত রাজিব সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ি সংলগ্ন চাঙ্গিনী গ্রামের মৃত শাহ আলমের পুত্র ও বাবুল চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বৈদ্দেরখিল গ্রামের হাফেজ আহাম্মদের পুত্র এবং উভয়ই তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী বলে পুলিশ দাবি করেছে। উভয় ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশ জানায়, মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান চলাকালে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাত সোয়া ২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন ট্যাংক রোডের গোয়ালমথন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা একটি প্রাইভেটকারে মাদকদ্রব্য নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ী রাজিব ও তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় আত্মরক্ষায় পুলিশও ১৭ রাউন্ড গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় মাদক ব্যবসায়ী রাজিব।

এ সময় থানার ওসি নজরুল ইসলাম, এসআই শামসুদ্দিন ও এসআই অঞ্জন কুমার আহত হয়। আহত রাজিবকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রাজিবের বিরুদ্ধে থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কার্তুজসহ একটি এলজি, ৫০ বোতল ফেনসিডিল এবং ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে এর আগে মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার রামরায় এলাকা থেকে তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী বাবুলকে আটক করে পুলিশ। চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি আবুল ফয়সল জানান, মাদক ব্যবসায়ী বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার একটি মাদকের চালান উপজেলার আমানগন্ডা এলাকায় রয়েছে। পরে বাবুলকে নিয়ে আমানগন্ডার নতুন রাস্তার মাথার মন্তাজের বাগানে রাত ১টার দিকে অভিযানকালে বাবুলের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ২৩ রাউন্ড গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গুলিবিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ী বাবুল ছাড়াও থানার এসআই মোজাহের, কনস্টেবল মিজান ও ফরিদ আহত হয়। আহত বাবুলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি এবং ২শ’ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। নিহত বাবুলের বিরুদ্ধে মাদক আইনে ৫টি মামলা রয়েছে। এছাড়া চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ উপজেলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শালুকিয়া গ্রামের জুলফু মিয়ার পুত্র রোকন উদ্দিন রুকুকে ৭ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে।

ফেনী প্রতিনিধি জানান, ফেনীর ফুলগাজীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে সাহমিত হোসেন শামীম (২৫) ও মজনু মিয়া মনির (২৩) নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। বুধবার মধ্যরাতে উপজেলা আনন্দপুর জামুয়া রাস্তার মাথায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা একাধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি ছিল। এ সময় পুলিশের ৮ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করেছে।

ফুলগাজী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর জানান, বুধবার মধ্যরাতে ফুলগাজী উপজেলা আনন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামের জামুয়া রাস্তার মাথায় একদল মাদক ব্যবসায়ী ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে মাদক নিয়ে গ্রামে প্রবেশ করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে উপজেলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সাহমিত হোসেন শামীম ও মজনু মিয়া মনির গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

এদিকে নিহত সাহমিতের মা আনোয়ারা বেগম জানান, বুধবার দুপুরে গ্রামের বাড়ির পাশে জমিতে গরুর জন্য ঘাষ কাটছিল সাহমিত। দুপুর ২টার দিকে ফুলগাজী থানার দারোগা শফিক তাকে জমি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাদের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় পুলিশ রাতে তাকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

অপরদিকে নিহত মজনু মিয়া মনিরের বোন রেজিনা বেগম জানান, বুধবার রাতে ফেনী শহরের বড় মসজিদ এলাকার তার (বোনের) বাড়ি থেকে গোয়েন্দা পুলিশ সাদা পোশাকে মনিরকে তুলে নিয়ে যায়। এর পর পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে পুলিশ। রাতে তারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গেলে তাদের তাড়িয়ে দেয় পুলিশ। টাকা দিতে না পারায় ভোর রাতে পুলিশ মনিরকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে বোন রেজিনা জানান, মনির ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তার চাচা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুলিশ ষড়যন্ত্র করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়েছে। তারা দফায় দফায় পুলিশকে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়েছেন।

তবে ওসি হুমায়ুন কবীর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুলিশ কাউকে বাড়ি থেকে তুলে আনেনি। টাকা চাওয়ার কোনো ঘটনাও ঘটেনি। মাদকের টাকায় তাদের পরিবার চালাতো বলে স্বজনরা এসব মনগড়া অভিযোগ করেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

মাগুরা প্রতিনিধি জানান, মাগুরায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মাদক ব্যবসায়ীদের দুই দলের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধে দু’জন মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে মাগুরা সদর থানা পুলিশ। এ বিষয়ে মাগুরার সহকারী পুলিশ সুপার মো. ছয়রুদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মাগুরা শহরতলীর পারনান্দুয়ালী গ্রামের হাউজিং প্রজেক্ট এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের দুই দলের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়।

এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ২ জনের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জানা যায়, মৃতদেহের একজন মাগুরা পৌর এলাকার নিজনান্দুয়ালী গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী আইয়ুব হোসেন (৫০) এবং অপরজন ভায়না টিটিডিসিপাড়ার মাদক ব্যবসায়ী  মিজানুর রহমান কালু (৪৩)।

মাগুরা সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় নিহত মাদক ব্যবসায়ী  আইয়ুবের নামে ১৮টি এবং কালুর নামে ২১টি মাদকের মামলা রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটিকে মাগুরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তবে নিহত মাদক ব্যবসায়ী কালুর বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন দিলু ও আইয়ুবের মেয়ে রুকসানা জানান, তারা অতীতে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল।  পরিবারের দাবি গত মঙ্গলবার অজ্ঞাত কিছু লোক তাদের ধরে নিয়ে যায়। পরে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে লাশ হাসপাতালে এলে খবর পেয়ে আমরা শনাক্ত করি।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরায় এক মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টার দিকে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামের সিদ্ধের পুকুর নামক স্থান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতের নাম আবদুল আজিজ (৪৫)। সে সদর উপজেলার পরানদহ গ্রামের কেরামত আলীর ছেলে। জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের ইউপি সদস্য পিয়ার আলী জানান, সিদ্ধেরপুকুর নামক স্থানে পাকা রাস্তার পাশে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তিকে (৪৮) মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তিনি সকাল ৭টার দিকে। তিনি কালীগঞ্জ থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে। পথচারীরা লাশ দেখে মাদক ব্যাবসায়ী আবদুল আজিজ বলে শনাক্ত করেন। এদিকে নিহতের স্বজনরা জানায়, গত বুধবার রাত ১০টার দিকে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ আবদুল আজিজকে তার বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার ভোরে তার গুলিবিদ্ধ লাশ কালীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে তারা জানতে পারেন। কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান জানান, গুলিবিদ্ধ এক মাদক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের চোয়ালে ও গলায় দুটি গুলির চিহ্ন আছে। মৃত্যু সম্পর্কে এই মুহূর্তে কিছু বলা যাবে না।
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে জানান,  কক্সবাজারে ইয়াবা ও অস্ত্রসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মোহাম্মদ হাসান (৩৬)  নামে একজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহসপতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শহরের কলাতলী এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।  
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন খন্দকার জানান, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দু’গ্রুপের গোলাগুলির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায় একদল পুলিশ। অভিযানের খবর টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইয়াবা ব্যবসায়ী মো. হাসানের লাশ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে একটি দেশীয় বন্দুক ও দুই রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়।
ওসি আরো জানান, নিহতের বুকে ও পিঠে তিনটি গুলি লেগেছে। মূলত ইয়াবা ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে কোন্দলের জের ধরে প্রতিপক্ষের সঙ্গে গোলাগুলিতে হাসান নিহত হয়। নিহতের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় দ্রুত বিচার আইনে ও ইয়াবার মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামেও একটি ইয়াবা মামলা রয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
নিহতের স্ত্রী ও চার সন্তানের জননী আমেনা খাতুন বলেন, বুধবার ভোররাতে পরিবারের সবাই সেহরি খেতে বসাবস্থায় সাদা পোশাকধারী তিনজন যুবক প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় বাইরেও দাঁড়িয়ে ছিল তিনজন। তারা আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেট বন্ধ করে দেয়। পেছন পেছন আমি দৌড়ে গেলে আমাকে গুলি করবে বলেও হুমকি দেয় তারা। পরে মাইক্রোবাসে করে তাকে নিয়ে শহরের দিকে চলে যায়। এরপর আমরা সদর থানা, জেলা গোয়েন্দা কার্যালয় ও র‌্যাব-৭ কক্সবাজার কার্যালয়ে গিয়ে তাকে খোঁজ করি। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ মিলেনি। পরে সকালে হাসপাতাল মর্গে আমার স্বামীর লাশ রয়েছে বলে খবর পাই।
নিহতের বড়ভাই শহর মুল্লুুক ও মো. ইলিয়াছ বলেন, আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।
নিহতের স্ত্রীর বড় ভাই সাইদুল ইসলাম বাবুল বলেন, হাসানকে তুলে নিয়ে যাবার পর আমরা একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে কক্সবাজার সদর থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু কক্সবাজার সদর থানার ওসি অভিযোগটি না নিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, নিহত মো. হাসানের কক্সবাজার বাসটার্মিনাল ও আদর্শগ্রাম কেন্দ্রিক ইয়াবা ব্যবসার বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে। শ্যামলী পরিবহনের একটি সিন্ডিকেটও হাসানের সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। দুই সিন্ডিকেট মিলে শ্যামলী পরিবহনে করে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা পাচার করে থাকে। ইয়াবা ব্যবসার টাকা দিয়ে হাসান টেকনাফ লাইনের বাস, ছারপোকা গাড়ি ও কয়েকটি টমটমের মালিক হয়েছে। সমপ্রতি আদর্শগ্রাম এলাকায় দুটি বাড়ির ফাউন্ডেশনও দিয়েছে। বাড়িগুলো এখন নির্মাণাধীন রয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল জানান, নিহত মোহাম্মদ হাসানের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগে কক্সবাজার সদর থানাসহ জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
 স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। নিহত ওই মাদক ব্যবসায়ীর নাম সেলিম ওরফে ফেন্সি সেলিম (৩২)।  পুলিশের দাবি ঘটনাস্থল থেকে ১টি শুটার গান, ১টি গিয়ার চাকু, ৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৫ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করেছে এবং বন্দুকযুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুস ছাত্তারসহ ৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্যরা হলেন ওসি (তদন্ত) নজরুল ইসলাম, ওসি (অপারেশন) আজিজুল হক, উপ-পরিদর্শক ইব্রাহীম, কনেস্টবল সাইদুল ও জাহাঙ্গীর আহত হন। তবে তারা কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছেন তা জানা যায়নি। বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দক্ষিণ নিমাইকাশারী এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত সেলিম ওরফে ফেন্সি সেলিম বাগমারা সানাড়পাড় এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের সানাড়পাড়, মৌচাক, নিমাইকাশারী এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় দক্ষিণ নিমাইকাশারী এলাকায় পুলিশের আভিযানিক দলটি পৌঁছলে সংঘবদ্ধ একটি দল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। ২০-২৫ রাউন্ড গুলি বিনিময়ের পর একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ঘটনায় অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে উল্লিখিত অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশের ৪ কর্মকর্তাসহ ২ সদস্য আহত হয়। লাশ উদ্ধারের পর পরিচয় শনাক্ত হয়। নিহত সেলিম পুলিশের তালিকাভুক্ত চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ এবং ডেমরা থানায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২০শে নভেম্বর রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ সেলিমকে আটক করেছিল। ওই সেলিমকে ছাড়িয়ে নিতে তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা করে। ওই ঘটনায় পুলিশ সেলিমের বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করে। কিন্তু দ্রুতই আবার জামিনে বেরিয়ে আসে সেলিম।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status