বিশ্বজমিন

নোম্যান্স ল্যান্ড ছাড়তে রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমারের নির্দেশ

মানবজমিন ডেস্ক

২১ মে ২০১৮, সোমবার, ১:৩০ পূর্বাহ্ন

উত্তেজনাপূর্ণ সীমান্ত ছেড়ে যেতে রোহিঙ্গাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে মিয়ানমার। দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান নো-ম্যান্সল্যান্ডে এখনও অবরুদ্ধ হয়ে আছেন বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা মুসলিম। তাদের উদ্দেশ্য করে লাউড স্পিকার ব্যবহার করা শুরু করেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। এসব রোহিঙ্গাকে নো-ম্যান্স ল্যান্ড থেকে অবিলম্বে চলে যেতে বলা হচ্ছে তাতে। বার্তা সংস্থা এএফপি’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে চ্যানেল নিউজ এশিয়া। ওই এলাকার শরণার্থীরা রোববার মিডিয়ার কাছে এভাবেই তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হরেন। আগষ্টের শেষ দিকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ওই সময় থেকেই প্রায় ৬০০০ রোহিঙ্গা মুসলিম অবস্থান করছেন নো-ম্যান্সল্যান্ড নামের সংকীর্ণ এলাকায়। ওই নৃশংসতা থেকে রক্ষা পেতে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু ওইসব মানুষ সীমান্ত এলাকার বাফার জোনে রয়ে যান। লাউডস্পিকার ব্যবহার বন্ধে ফেব্রুয়ারিতে রাজি হয় মিয়ানমার। তারা রোহিঙ্গাদেরকে ওই এলাকা অভিলম্বে ত্যাগ করে বাংলাদেশে চলে আসার জন্য ঘোষণা দিতে থাকে। শুধু তা-ই নয়। নো ম্যান্স ল্যান্ড থেকে কিছু সেনা সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু তাদের বিপরীত দিকে যে শরণার্থীরা কাঁটাতারে আটকরা পড়েছেন তারা ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, কোনো সতর্কতা ছাড়াই সেই লাউডস্পিকারের মাধ্যমে আবার বার্তা দেয়া হচ্ছে। এর ফলে সীমান্তের ওই এলাকায় উত্তেজনার পারদ উপরের দিকে উঠছে। নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের এক নেতা মোহাম্মদ আরিফ। তিনি বলেন, এরই মধ্যে মিয়ানমারের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা বেশ কয়েকবার লাউডস্পিকারে সতর্কতা দিয়েছে। বার বার এভাবে বার্তা দেয়া হচ্ছে। এতে সেখানে ভীতি আতঙ্ক কাজ করছে। বার্মিজ ও রোহিঙ্গা এই দু’ভাষাতেই ওই বার্তা দেয়া হচ্ছে। এতে রোহিঙ্গাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে এই বলে যে, যদি শরণার্থীরা ওই এলাকা ত্যাগ না করেন তাহলে মিয়ানমারে তাদের বিচার করা হবে। না হয় বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আরেকজন রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ। তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারের নাগরিক। ওইটা আমাদের পিতৃভূমি। এ ধেশে থাকার সব রকম অধিকার আছে আমাদের। কেন আমাদেরকে অন্য দেশে যেতে হবে? প্রশ্ন রাখেন দিল মোহাম্মদ। লাউডস্পিকারের ওই বার্তায় শরণার্থীদেরকে ‘বাঙালি’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে এ শব্দটি ব্যবহার করা হয় রোহিঙ্গাদের বোঝাতে। তারা এদেরবে বাংলাদেশী হিসেবে দেখে থাকে। এ অবস্থায় বিজিবির স্থানীয় কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেছেন, পরিস্থিতির দিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমরা দেখতে পেয়েছি যে, তারা শরণার্থীদের ক্যাম্পের কাছে সীমান্ত বেড়া সংলগ্ন গাছে লাউড স্পিকার বেঁধে রেখেছে।
শরণার্থী সংকটকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে রয়েছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্পর্ক। দু’প্রতিবেশী দেশ নভেম্বরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া অচল হয়ে আছে। এ জন্য বিলম্বের জন্য এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দায়ী করছে। নো ম্যান্স ল্যান্ডে ও বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরগুলোতে যেসব শরণার্থী অবস্থান করছেন তারা বলছেন, তাদেরকে নিরাপত্তা ও মিয়ানমারের নাগরিকত্ব নিশ্চিত না করা পর্যন্ত দেশে ফিরে যাবেন না। এই সঙ্গে তারা এর আগের নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status