শেষের পাতা

নীতিমালা মন্ত্রিসভায় উঠছে আজ

কর্মকর্তারা ফ্রিতে পাবেন টেলিফোন মোবাইল, ইন্টারনেট

দীন ইসলাম

২১ মে ২০১৮, সোমবার, ৯:৪৯ পূর্বাহ্ন

সরকারি কর্মকর্তাদের ল্যান্ড টেলিফোন, সেলুলার (মোবাইল), ফ্যাক্স ও ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রাপ্যতা (প্রাধিকার) ঠিক করেছে সরকার। কোন পর্যায়ের কর্মকর্তা এসব প্রযুক্তি কতটুকু ফ্রি ব্যবহার করতে পারবেন তা নির্ধারণ করে ‘সরকারি টেলিফোন, সেলুলার, ফ্যাক্স ও ইন্টারনেট নীতিমালা-২০১৮’ তৈরি করা হয়েছে  । আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে নীতিমালাটি অনুমোদনের জন্য উঠবে।

অনুমোদন মিললে নিজের প্রাধিকার অনুযায়ী সুবিধা পাবেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিসভার সদস্য, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, আধা-সরকারি, সংযুক্ত দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও বিধিবদ্ধ সংস্থা, কর্পোরেশন, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন কমিশন এবং আদালতের ক্ষেত্রে টেলিফোন, সেলুলার, ফ্যাক্স ও ইন্টারনেট নীতিমালা প্রযোজ্য হবে মর্মে নীতিমালার শুরুতে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০৪ সালে জারি করা সমন্বিত টেলিফোন নীতিমালা দিয়ে এতদিন প্রাধিকার নির্ধারণ করা হতো। কিন্তু বর্তমান টেলিফোন নীতিমালায় অনেকের প্রাধিকারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। এজন্য ২০১৪ সাল থেকে সরকারি টেলিফোন নীতিমালা সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমান নীতিমালা সংশোধনের জন্য ২০১৪ সালের ৬ই নভেম্বর একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি কয়েক দফা মিটিং করে একটি খসড়া তৈরি করে। এরপর ২০১৫ সালে সরকারি টেলিফোন নীতিমালা নাম দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে এটি প্রকাশ করা হয়। জনপ্রশাসনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার পর বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থা এবং ব্যক্তির কাছ থেকে মতামত পাওয়া যায়। এরপর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কমিটি ওই মতামতগুলো পর্যালোচনা করে। সরকারি টেলিফোন ও ইন্টারনেট নীতিমালা, ২০১৭-এর খসড়া চূড়ান্ত করার পর এটি অর্থ বিভাগের মতামতের জন্য পাঠানো হয়। গত ২৪শে এপ্রিল অর্থ বিভাগ নীতিমালাটি নিয়ে পজেটিভ মতামত দেয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের টেলিফোন সংযোগ ও বিল প্রদান সংক্রান্ত বিষয়গুলো এতদিন নীতিমালায় উল্লেখ ছিল না।

প্রস্তাবিত নীতিমালায় দাপ্তরিক টেলিফোন ও ইন্টারনেট সুবিধা অন্তর্ভুক্ত করে প্রাধিকারের বিষয়টি সুস্পষ্ট ও স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সংশোধিত নীতিমালার শুরুতেই শিরোনাম ও সংজ্ঞা বর্ণনা করা হয়েছে। এর আগে নীতিমালাটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক চিঠিতে জানায়, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের টেলিফোন প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত নীতিমালায় যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তা প্রশাসনিক সংস্কার প্রকৃতির। তাই ওই নীতিমালাটি অনুমোদিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে আইনটি সংশোধনের প্রয়োজন হবে। এজন্য নীতিমালাটি মন্ত্রিসভা বৈঠকে উত্থাপনের আগে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপন করা। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে এ নীতিমালাটি আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দিতে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি নীতিমালার শিরোনাম পরিবর্তন করে ‘সরকারি টেলিফোন, সেলুলার, ফ্যাক্স ও ইন্টারনেট নীতিমালা-২০১৮’ করার সুপারিশ করে। এ ছাড়া নীতিমালার কিছু সংশোধন, অনুচ্ছেদে সংশোধনসহ কিছু সুপারিশ করে। উচ্চপর্যায়ের কমিটি সুপারিশ আমলে নিয়ে এটি অনুমোদন করে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি।

গত ১৮ই এপ্রিল ‘সরকারি টেলিফোন, সেলুলার, ফ্যাক্স ও ইন্টারনেট নীতিমালা-২০১৮’ মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য সারসংক্ষেপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬ অনুযায়ী কোনো  গুরুত্বপূর্ণ নীতিসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করতে হবে। এ নীতিমালাটি সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম বিধায় এতে মন্ত্রিসভার অনুমোদন প্রয়োজন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সারসংক্ষেপটি দেখেছেন ও অনুমোদন করেছেন এবং মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাতে সম্মতি দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে বিষয়টি আজ অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে উঠবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status