ফেনীর একরাম হত্যার চার বছর

ফেনীর আলোচিত উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যার চার বছর আজ। ২০১৪ সালের এই দিনে ফেনী শহরের একাডেমি এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে, গুলি করে ও তাকে বহনকারী গাড়িতে আগুন ধরিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকাণ্ডটি শুধু দেশে নয়, বিশ্ব মিডিয়াতে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত হয়েছিল।
ফেনী জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট হাফেজ আহম্মদ জানান, ঘটনার দিন রাতে নিহতের বড় ভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে বিএনপি নেতা মাহাতাব উদ্দিন মিনারকে প্রধান আসামি করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দয়ের করেন। মামলাটি দীর্ঘ বিচারকাজ শেষে চলতি বছরের ১৩ই মার্চ ফেনীর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আমিনুল হক রায় ঘোষণা করেছিলো। রায়ে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৯ আসামিকে ফাঁসির আদেশ প্রদান করে বিচারক। রায়ে প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মিনারসহ খালাস পায় ১৬ জন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান কবীর বেঙ্গল জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আদেল, ফুলগাজী উপজেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদ চৌধুরী, পৌর কাউন্সিলর আবদুল্লাহ হিল মাহমুদ শিবলুসহ ২২ আসামি কারাগারে থাকলেও পলাতক রয়েছে ১৭ আসামি। রায়ের পর আসামিদের ফেনী কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত যেসব পলাতক আসামি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে তারা হলোÑ ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন জিহাদ, সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর মামাতো ভাই আবিদুল ইসলাম আবিদ, চৌধুরী মো. নাফিজ উদ্দিন অনিক, আরমান হোসেন কাউসার, জাহেদুল হাসেম সৈকত, জিয়াউর রহমান বাপ্পি, জসিম উদ্দিন নয়ন, এমরান হোসেন রাসেল ওরফে ইঞ্জি. রাসেল, রাহাত মো. এরফান ওরফে আজাদ, একরাম হোসেন ওরফে আকরাম, শফিকুর রহমান ওরফে ময়না, কফিল উদ্দিন মাহমুদ আবির, মোসলেহ উদ্দিন আসিফ, ইসমাইল হোসেন ছুট্টু, মহিউদ্দিন আনিছ, বাবলু ও টিটু।
নি¤œ আদালতে রায়ের কয়েক দিন পর উচ্চ আদালতে আপিল করে দণ্ডপ্রাপ্তরা। গত দুই মাসেও উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানি না হওয়ায় রায় কার্যকর নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বজনরা। তবে রায়ের পূর্ব বা পরে নিহতের স্ত্রীসহ পরিবারের তেমন কোনো সদস্য গণমাধ্যমের সঙ্গে রায় নিয়ে কথা বলেননি।
নিহত একরামের ভাই মোজাম্মেল হক জানান, দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পেলেও পর্দার আড়ালে থেকে গেছে ঘটনার মূল হোতা। তবে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা যেন উচ্চ আদালত থেকে কোনোভাবে রেহাই না পায় সেদিকে সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিহতের গ্রামের বাড়িতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।