বাংলারজমিন

চাঁপাই নবাবগঞ্জ-আমনুরা-তানোর ২০ কি.মি সড়ক খানাখন্দে ভরা

চাঁপাই নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

২১ মে ২০১৮, সোমবার, ৮:৩৫ পূর্বাহ্ন

খানাখন্দে পরিণত হয়েছে চাঁপাই নবাবগঞ্জ-আমনুরা-তানোর সড়ক। কার্পেটিং, ইট, বালু ও খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এই সড়কে। বিশেষ করে চাঁপাই নবাবগঞ্জের আতাহার বুলনপুর থেকে আমনুরা থেকে তানোরের মুণ্ডুমালা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের এখন বেহাল দশা। এর ফলে এই সড়ক দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এজন্য যাতায়াতকারী যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা সদর থেকে আমনুরা হয়ে রাজশাহীর তানোর উপজেলা পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছোট-বড় হাজারো যানবাহন চলাচল করে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা, নিম্নমানের সংস্কার কাজ আর ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে ইট, বালু, খোয়া ও বিটুমিন উঠে গিয়ে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সদর উপজেলার আতাহার বুলনপুর থেকে জামতলা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। ইট/সুরকি ফেলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। রাস্তা খারাপের জন্য চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে আমনুরা পর্যন্ত মাত্র ১৫ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ৫০/৫৫ মিনিট। এলাকাবাসী জানান, ২০১৪ সালে এই সড়কটি নতুন করে কার্পেটিং করা হয়। কিন্তু সড়কের দু’ধারে গড়ে উঠা প্রায় ৪০টির মতো অটো রাইসমিলের ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে নির্মাণের একবছরের মধ্যেই সড়কের বিভিন্নস্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া পানি নিষ্কাশনের সুবিধা না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে অনেক জায়গা নষ্ট হয়ে গেছে।
সদর উপজেলার আতাহার গ্রামের মফিজ উদ্দিন জানান, এই সড়কের দু’ধারে গড়ে উঠা অটোরাইস মিলগুলোর পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। এ কারণে বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে যায়। এ ছাড়া মিলগুলোর ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে দ্রুত খানাখন্দকে পরিণত হচ্ছে সড়কটি। তিনি বলেন বর্তমানে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে।
একই গ্রামের জমসেদ আলী জানান, বাড়িঘর ও অটোরাইস মিলগুলোর তুলনায় রাস্তাটি নিচু হওয়ায় সহজেই বৃষ্টির পানি জমে যায়। ফলে সংস্কারের পর খুব বেশি দিন টিকছে না এই রাস্তার কাজ।  
চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন গ্রুপের সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান ফিরোজ বলেন, চাঁপাই নবাবগঞ্জ-আমনুরা সড়ক দিয়ে শুধু রাজশাহীর তানোর নয়, নওগাঁর যানবাহনও চলাচল করে। মাত্র ১০ কিলোমিটার খারাপ সড়কের কারণে যাত্রাপথের সময় বেড়ে যাচ্ছে। প্রায় গাড়ি বিকল হয়ে পড়ছে সড়কের বিভিন্ন স্থানে। ফলে গাড়ির যন্ত্রাংশও নষ্ট হচ্ছে বেশি।     
অন্যদিকে আমনুরা ঝিলিম বাজার থেকে তানোরের মুণ্ডুমালা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কেরও বেহাল দশা। নির্মাণের মাত্র একবছরের মাথায় এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে ছোট ছোট পুকুরের সৃষ্টি হয়। মাঝেমধ্যেই এসব খাদে পড়ে যানবাহন উল্টে যায়। এলাকাবাসী জানান, এই সড়ক এখন যানবাহন চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। বাসচালক সাইফুল ইসলাম জানান, এই সড়কের আমনুরা দরগা, ধুমধাম, আইড়ার মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার এই বেহাল দশার কারণে যানবাহনের যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়ছে। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
আমনুরার স্কুলশিক্ষক শরিফুল ইসলাম জানান, আমনুরা থেকে মুণ্ডুমালা পর্যন্ত ১০/১৫ মিনিটের পথ হলেও সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে সময় লাগছে এক ঘণ্টারও বেশি।
ঝিলিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি বলেন, বছরখানেক আগে এই সড়কটি সংস্কার করা হয়। অথচ এক বছরের মাথায় তা যানবাহন চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, তার ইউনিয়নের প্রধান এই সড়কটি দীর্ঘসময় ধরে বেহালদশায় থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে বলে জানান তিনি।   
এ ব্যাপারে চাঁপাই নবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এজেডএম ফারহান দাউদ বলেন, চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা সদর থেকে আমনুরা পর্যন্ত সড়কে অটো রাইস মিলের ভারি যানবাহন চলাচল বেড়ে যাওয়ায় এই বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টির পানি সড়কে জমে থাকায় কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ এই রাস্তা উঁচু করে কার্পেটিং করার জন্য ৩৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সড়ক বিভাগ। প্রকল্পটি খুব শিগগিরই একনেকে পাস হবে বলে জানান তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status