দেশ বিদেশ

রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ: মোশাররফ

স্টাফ রিপোর্টার

২০ মে ২০১৮, রবিবার, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন

রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসায়ীদের অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দেয়ায় নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। গতকাল রমজানের দ্বিতীয় দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের আয়োজনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের এতো বেশি অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে যে, কোনো কিছুর ওপর এই সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। তাদের কোনো চেইন অব কমান্ড নেই। এই সরকারের কোনো দায়িত্ববোধও নেই। রোজায় প্রতি বছরই বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। সরকারের পক্ষ থেকে তদারকির কথাও বলা হয়। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে রোজার আগে প্রত্যেকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কত ছিল? আর আজকে দ্বিতীয় দিনে কত হয়েছে? অনেক পত্র-পত্রিকায় সেগুলো প্রকাশিত হয়েছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে তারা। তিনি বলেন, রোজার মধ্যে যে পরিমাণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে, এত ঊর্ধ্বগতি হয়েছে যে, জনগণের কাছে তারা ভোট চাইতে পারে না। তারা জানে জনগণ সুযোগ পেলে আওয়ামী লীগকে আর ভোট দেবে না। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নির্বাচন পরিচালনায় আমি দায়িত্বে ছিলাম। সেখানে বিএনপির প্রতি মানুষের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গণজোয়ার দেখে সরকার কায়দা করে গাজীপুরের নির্বাচনটা বন্ধ করে দিয়েছে। খুলনা ঢাকা থেকে দূরে হওয়ায় নীল নকশা করে জনগণের ভোট ছাড়া নতুন একটা কারসাজি করে নির্বাচনে জিতেছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা সম্ভব না। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে হলে খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রয়োজন। কারণ খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্র ও আগামী নির্বাচন এক সুতোয় গাথা। তাই এর জন্য ছাত্র ও যুবসমাজের যে যে অবস্থানে আছেন সেই অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে আন্দোলন সংগ্রামের বিকল্প নেই। এই সংগ্রামে সব সময় যুবকরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়। আমি আশা করি এদেশের যুব সমাজ, ছাত্রসমাজ ও শ্রমিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি জনজাগরণ গড়ে তুলবে। তার মাধ্যমে এই স্বৈরাচারি সরকারকে হটিয়ে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করে আগামী নির্বাচন করবে। দেশনেত্রীর নেতৃত্বে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা এদেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ৪টি নির্বাচন হয়েছে। দুইটি নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে এবং ২টি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। অথচ শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। ১৯৯৬ সালের পত্রপত্রিকাগুলো খুলে দেখেন তখন শেখ হাসিনার কি বক্তব্য ছিল। আর এখন তার কি বক্তব্য। পথিবীতে নাকি কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই। যেখানে এই শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ৪টি নির্বাচন করেছে। আজ তিনিই বলেন, পৃথিবীতে এর কোনো উদাহরণ নেই। সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে নির্বাচন করার নজিরও নাকি পৃথিবীতে নেই। অথচ এদেশের নির্বাচন ৪ বার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে। তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়াকে মাইনাস করে যে নির্বাচনের নকশা করা হয়েছে তা বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিন গ্রহণ করবে না, মেনে নেবে না। ৫ই জানুয়ারির মতো নির্বাচন আর দেশের মানুষ মেনে নেবে না। বার বার জনগণকে প্রতারণা করা যায় না। আবারো ৫ই জানুয়ারির পথে হাঁটলে জনগণ আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করবে। ভোটের অধিকার, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যখন তারা মাঠে নামবে তখন আমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবে না। তারা প্রতিরোধ করবে। যারা প্রতারণা করে ক্ষমতায় টিকে থাকার কথা চিন্তা করেন তারা অপেক্ষা করুন। সময় আর বেশিদিন নেই। সংগঠনের উপদেষ্টা আলহাজ মো. মোশারফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলহাজ নাজিম উদ্দিন আলম, ইসমাঈল হোসেন বেঙ্গল, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status