এক্সক্লুসিভ

বর্ষায় রোহিঙ্গাদের রক্ষায় সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি মহড়া

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে

২০ মে ২০১৮, রবিবার, ৯:১৫ পূর্বাহ্ন

উখিয়া-টেকনাফের শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা। আর এদের মাঝে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকিতে। যার কারণে বর্ষা মৌসুমে এ জনগোষ্ঠীকে প্রাকৃতিক যে কোনো দুর্যোগ ও দুর্ঘটনার হাত থেকে সুরক্ষা করতে সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে উখিয়ার বালুখালী-২ ব্লকে চলছে প্রস্তুতি মহড়া। ১৫ই মে শুরু হওয়া এ মহড়ায় যৌথভাবে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ বিভিন্ন-বেসরকারি সংস্থাগুলোও।
সরজমিন উখিয়া কুতুপালং, বালুখালী, মধুরছড়া, লম্বাশিয়া, ময়নারঘোনা, তাজনিমারখোলা, শফিউল্লাহকাটা ও জামতলীসহ অন্যান্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখা যায়, ক্যাম্প এলাকার আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগ পরিবার পাহাড়ের উপর, ঢালুতে ও নিচু এলাকায় যত্রতত্র মাটি কেটে শ্রেণি পরির্বতন করে ঝুপড়ি বেঁধে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। বর্ষা মৌসুমে এসব ন্যাড়া পাহাড় ভারী বর্ষণে ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন পরিবেশবাদী ও সচেতন মহল। আর এমনটা হওয়ার আগেই নেয়া হচ্ছে প্রস্তুতি।
কুতুপালং পিপি জোনের মাঝি রাকিব হাসান জানান, মিয়ানমার থেকে সর্বস্বান্ত হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দুই/তৃতীয়াংশ পরিবার পাহাড়ের উঁচু-নিচু ঢালু ও থলিতে ঝুপড়ি বেঁধে বসবাস করছে। এরা বর্ষা মৌসুমে কোনো চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ পায়নি, কারণ যেভাবে রোহিঙ্গা আসার ঢল নেমেছিল, সে অবস্থায় যে যেখানে পারে সেখানে আশ্রয় খুঁজে নিয়েছিল। এনিয়ে তারা এখন খুবই চিন্তিত। একই বক্তব্য ঝুঁকিতে থাকা অন্যান্য রোহিঙ্গাদেরও।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স উখিয়ার স্টেশন অফিসার মো: জহিরুল ইসলাম জানান, প্রাকৃতিক যে কোনো দুর্যোগ ও দুর্ঘটনার হাত থেকে তাদের সুরক্ষা করার জন্য চলছে নানা প্রস্তুতি মহড়া। বন্যা ও পাহাড় ধস কিভাবে মোকাবিলা করতে হবে, সেজন্য রোহিঙ্গাদের মাঝে ৫শ’ লোকের মাঝে দেয়া হচ্ছে সচেতনামূলক ট্রেনিং । এছাড়াও দ্রুত উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য শরণার্থী ক্যাম্পের অভ্যন্তরে করা হয়েছে সাব-ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। পাশাপাশি তাদের অতিরিক্ত জনবলও বৃদ্ধি করেছে।

এ বিষয়ে ৯৭ পদাতিক ব্রিগেড এর ব্রি. জেনারেল মো: ইকবাল আখতার মিঞা জনান, যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য সেনা সদর দপ্তর থেকে যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে সেনানিবাসের মেডিকেল টিমও। পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও ক্যাম্পগুলোতে বসবাসরত মিয়ানমারের নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে উদ্ধারকারী দল। চলছে নানা রকম অনুশীলনও। এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইএনও) জানান, বিভিন্ন ক্যাম্পে পাহাড়ের ঢালুতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারি প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার শরণার্থীকে সরানোর কাজ চলছে। এছাড়া আষাঢ়ি ঢলে পানি যেন, ক্যাম্পেগুলোতে জমে না থাকে তার জন্য অভ্যন্তরীণ প্রায় ২০ কিলোমিটার খাল খননের কাজ চলছে। পাশাপাশি দুর্যোগকালীন সময়ে যেন তাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য সাইক্লোনশেল্টার ও অভ্যন্তরীণ যে মসজিদগুলো রয়েছেন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা মিলে এগুলো সংস্কার করা হচ্ছে। এছাড়াও দুর্যোগ মোকাবিলা কিভাবে করবে এ বিষয়েও দিচ্ছে রোহিঙ্গাদের মাঝে ট্রেনিং।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status