বাংলারজমিন

পানি সেচের অভাবে সরাইলে ১৫০ একর জমি অনাবাদি

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে

২০ মে ২০১৮, রবিবার, ৮:০২ পূর্বাহ্ন

শুধুমাত্র পানি সেচের অভাবে সরাইলের নদীসংলগ্ন হাওরে ১৫০ একর কৃষিজমি দীর্ঘদিন ধরে অনাবাদি। স্থানীয় প্রভাবশালী চোরেরাই সেচ কাজের প্রধান অন্তরায়। অরুয়াইল ইউনিয়নের মেঘনার তীরে কাকরিয়া গ্রামের চরে এ জমির অবস্থান। ফলে সেখানকার কৃষকরা নিজেদের জমিতে ফসল চাষ করতে পারছেন না। পরিবারের জীবন বাঁচাতে তারা ঋণে জর্জরিত হয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। সরজমিনে স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাকরিয়া গ্রামটি মেঘনার একেবারেই তীরবর্তী স্থানে। মেঘনার ভাঙনে বেশ কয়েক বছর আগেই গ্রামের অনেক ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। একমাত্র ভরসা জমিগুলো হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন স্থানীয় কৃষকরা। পরে বিশাল এলাকাজুড়ে আস্তে আস্তে চর জেগে ওঠে। কিছুটা আশার সঞ্চার হয় কৃষকদের মনে। চরে চাষাবাদ করে অন্ন যোগাড় করে নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেন তারা। প্রচুর টাকা খরচ করে সেচকল বসানো হয়। স্থানীয় প্রভাবশালী চোর সিন্ডিকেটের একটি দল রাতে সেচ কাজে ব্যবহৃত মেশিন, যন্ত্রপাতি নিয়ে যায়। মাটির নিচের পাইপ পর্যন্ত চোরেরা তুলে নিয়ে যায়। স্কিমের মালামাল চুরি কারা করে জানলেও ভয়ে মুখ খুলতে চান না কৃষকরা। কারণ চোরেরা যেকোনো সময় কৃষকদের ওপর হামলা করার শঙ্কাও রয়েছে। আর এ কারণেই গত ২ বছরের ও অধিক সময় ধরে ৪ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ চরের ১৫০ একর জমি সম্পূর্ণ অনাবাদি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যেখানে প্রচুর পরিমাণ বোরো ধান উৎপাদনের পরও বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান শাকসবজিও ফলানো যেত। কৃষকরা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে পারত। ফসল না হওয়ায় সেখানকার কৃষকদের কষ্টের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলেছে। তিন বেলার আহার যোগাড় করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধ্য হয়ে ঋণ ও মহাজনী সুদের চাকায় পিষ্ট হচ্ছেন। কৃষকরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায়। চরের জমিগুলো আর যেন পতিত না থাকে সেই ব্যবস্থা চায় এখানকার কৃষকরা। জনৈক কৃষক বলেন, পানির অভাবে জমি চাষ করতে পারছি না। ইউপি সদস্য মো. সুন্দর আলী ও কৃষক আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে জানান, সমস্যার নাটের গুরু ওবায়দুল্লাহ। এতবড় জায়গায় সে অন্য কারো সেচ মেশিন সহ্য করতে পারে না। মনগড়ামতো গরিব কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি ৩০ শতাংশ জমির পানি সেচের ফি ২-৩ হাজার টাকা আদায় করে। ওবায়দুল্লাহ চরে অন্য কাউকে মেশিন বসাতে দেয় না। সে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলে, ‘কেউ মেশিন বসালেই চুরি হয়ে যাবে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. জাহিরুল ইসলাম সরকার বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। অনাবাদি জমির বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে দেখব।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status