দেশ বিদেশ

প্রজ্ঞাপন ছাড়া বিশেষ দূত এরশাদ

মাসে ব্যয় ৫ লাখ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার

১৮ মে ২০১৮, শুক্রবার, ১০:০১ পূর্বাহ্ন

বিশেষ দূত হিসেবে এইচএম এরশাদ কোনো দায়িত্ব পালন করেননি। এ ব্যাপারে তার দায়িত্ব কী সে ব্যাপারেও দাপ্তরিক কোনো নির্দেশনা নেই। তবে এই দায়িত্বের খাতিরে তিনি প্রতিমাসে ব্যয় করছেন সরকারের সাড়ে ৫ লাখ টাকা। গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে টিআইবি। ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে দশম জাতীয় সংসদের চতুর্দশ থেকে অষ্টাদশ অধিবেশনের ওপর উপস্থাপিত সংস্থাটির পার্লামেন্ট ওয়াচ নামক পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশেষ দূত হিসেবে সংসদের প্রধান বিরোধী দলের সভাপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে ২০১৪ সালের ১২ই জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন। কিন্তু বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্বের কোনো সরকারি গেজেট প্রকাশ হয়নি বা দাপ্তরিক নির্দেশ পাওয়া যায়নি। তবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব- আধুনিক মুসলিম প্রধান গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি এবং এ দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও ঐতিহ্য বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেয়া, মধ্যপ্রাচ্যের জনশক্তি রপ্তানি বাজারের প্রসারে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করা। টিআইবির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, বিশেষ দূত হিসেবে সরকারি প্রটোকল প্রাপ্তি, বিশেষ ভাতা ও অন্যান্য খাত বাবদ মাসে গড়ে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করেন। এই ব্যয়ের আওতায় রয়েছে, নিরাপত্তা, গাড়ি, সচিব, মন্ত্রী পদমর্যাদার সমতুল্য ভাতা, স্বাস্থ্যসেবা, ইন্স্যুরেন্স, বিদেশ ভ্রমণ, টেলিফোন বিল ইত্যাদি। তবে এই সময়ে বিভিন্ন দেশ যেমন- চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভুটান ইত্যাদি দেশে ব্যক্তিগত সফর করলেও বিশেষ দূত হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি। তিনি দশম সংসদের মোট ১৮টি অধিবেশনে ৩২৭ কার্যদিবসের ৭৯ কার্যদিবসে উপস্থিত ছিলেন। হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের বিভিন্ন কাজের দৃশ্যত কঠোর সমালোচনা, দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা ও আর্থ সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে দলীয় ফোরামে এবং জনসভায় বক্তব্য দিতে দেখা গেলেও সংসদীয় কার্যক্রমে এসব ক্ষেত্রে তার জোরালো ভূমিকার ঘাটতি দেখা গেছে। বরং সংসদে দলের আত্মপরিচয় সঙ্কট সম্পর্কিত বক্তব্য প্রদান করেছেন। টিআইবি এ ব্যাপারে তার দুটি বক্তব্য তুলে ধরে। এর একটি সংসদ অধিবেশনে তিনি বলেছিলেন, ‘জাপা নেতিবাচক রাজনীতি করে না। আমরা সরকারের ভুল ধরার চেষ্টা করছি। এর পরও আমাদের নিয়ে মন্ত্রিসভায় অনেক হাসাহাসি করে। আমাদের নিয়ে হাসবেন না। তাহলে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে বিদ্রূপ করা হবে।’ জেলাপর্যায়ে দলীয় সম্মেলনে এরশাদ বলেছিলেন, ‘নির্বাহী বিভাগ কারো কথা শোনে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা ছাড়া কেউ কাজ করে না, ফাইল নড়ে না। একদলীয় শাসন চাই না, জনগণের শাসন চাই। দুঃশাসনের বেড়াজাল ভেঙে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তার বিশেষ দূত হওয়ার ব্যাপারে আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন খুঁজে পাইনি। তার কাজ কি সে ব্যাপারেও কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই। তিনি নিজেই তার কাজের ব্যাপারে বক্তব্যে বলেছিলেন; যা আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি। কিন্তু সে দায়িত্বও তিনি পালন করেননি। তবে এই দায়িত্বের সুবিধা তিনি নিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status