বাংলারজমিন

সিলেটে বিনিয়োগ করে দেড় কোটি টাকা নিয়ে শঙ্কায় লন্ডনি ফেরদৌসী

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে

১৭ মে ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন

সিলেটে একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে প্রায় দেড় কোটি টাকা হারাতে বসেছেন লন্ডনি ফেরদৌসী বেগম। বুধবার এসব তথ্য তুলে ধরে সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন এ অভিাযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন- বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান আইএসসিএল এর সিলেট ব্রাঞ্চের (চৌহাট্টা মানরু শপিং সিটিতে অবস্থিত) ইনচার্জ কামরুজ্জামান রুম্মান আমার পূর্ব-পরিচিত। তিনি তার কোম্পানির মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য তিনি আমাকে উৎসাহিত করেছিলেন। বিভিন্ন ধরনের মুনাফার নিশ্চয়তা দিলে আমার মধ্যে দেশে বিনিয়োগের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। তার কথা-বার্তা শুনে ও তার কোম্পানির সুযোগ-সুবিধার কথা জেনে আমি তাকে বিশ্বাস করি এবং ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত তার ও আইএসসিএল কোম্পানির মাধ্যমে আমি শেয়ার বাজারে প্রায় ৭৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। তাকে খুবই বিশ্বাস করতাম বিধায় লভ্যাংশ না নিয়ে বিনিয়োগ করতেই থাকি। কামরুজ্জামান রুম্মান আমার বিনিয়োগকৃত মূলধন ও লভ্যাংশ নিরাপদ আছে, সব সময় আমাকে তেমন আশ্বাস দিতেন বিধায় আমিও কখনো তাকে সন্দেহের চোখে দেখিনি। কামরুজ্জামান রুম্মান ২০১৭ সালে আমার কাছে তার নিজের খুবই লাভজনক একটি ব্যবসার জন্য ১ কোটি টাকা ঋণ চেয়েছিলেন। এক সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য করছি বিধায় তাকে আমি ১ কোটি টাকা ঋণ দিতে না পারলেও ২০১৭ সালে মার্চ থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে মোট ৮৫ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করি। টাকাগুলো চেকের মাধ্যমে দেয়া হয়। ঐ বছরের ৩০শে মার্চ ১০ লাখ, ২৩শে এপ্রিল ১৫ লাখ, ১৮ই মে ৬ লাখ ৬২ হাজার, ২৮শে নভেম্বর ১০ লাখ, ২৯শে নভেম্বর ৩৫ লাখ ও বিভিন্ন সময়ে নগদ আরও ৮ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ঋণ দেই। তিনি আরো বলেন- সম্প্রতি তিনি কামরুজ্জামান রুম্মান ও তার কোম্পানি আইএসসিএল সম্পর্কে কিছু নেতিবাচক ও ভয়ঙ্কর তথ্য জানতে পারেন কয়েকজন পরিচিত ব্যবসায়ী আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে। যা শুনে আমি শঙ্কিত হয়ে পড়ি। তার সাথে যোগযোগ করে আমার বিনিয়োগকৃত অর্থ ও তার লভ্যাংশ সম্পর্কে জানতে চাই এবং এ সংক্রান্ত যাবতীয় লেজার বিবরণী (স্টেটমেন্ট) দেখাতে বলি। তিনি আমাকে যেসব কাগজপত্র দিয়েছেন, তা নিয়ে আমি আইএসসিএল-এর প্রধান অফিসে যোগাযোগ করি। সিলেট ব্রাঞ্চ থেকে কামরুজ্জামান রুম্মানের দেয়া স্টেটমেন্ট জমা দিলে হেড ব্রাঞ্চও আমার লেনদেনকৃত দু’টি হিসাবের (যার নং-১৬১৫৭ ও ১৬১৬৪) স্টেটমেন্ট প্রদান করে। তারা আমাকে যেসব কাগজপত্র দিয়েছেন তাতে দেখা যায় কামরুজ্জামান রুম্মানের দেয়া যাবতীয় কাগজপত্র ও হিসাব ভুয়া। তখন আমি কামরুজ্জামান রুম্মানকে হিসাব-নিকাশের ফারাক এবং ভুয়া কাগজপত্র জমা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি হিসাব-নিকাশে ভুল ভ্রান্তির কথা স্বীকার করেন। তিনি একপর্যায়ে আমার বিনিয়োগকৃত ৭৮ লাখ ও ঋণ হিসেবে দেয়া ৮৫ লাখ টাকার সবই ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি আমাকে এক দফায় ৫ ও আরেক দফায় ২ লাখ টাকা প্রদান করেন। এরপরই তিনি আমাকে ৭৮ লাখ টাকার তিনটি চেক প্রদান করেন। একটি ৫৩ লাখ, একটি ১০ ও আরেকটি ১৫ লাখ টাকার। কিন্তু তার চেক নিয়ে আমি টাকা তুলতে গেলে প্রতিটি চেকই ব্যাংক থেকে প্রত্যাখ্যাত হই। তার একাউন্টে এই পরিমাণ টাকা ছিল না। আমি বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি নানা টালবাহানা শুরু করেন এবং এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এ অবস্থায় আমি এই সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মকর্তা কামরুজ্জামান রুম্মানের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছি। তবে আইএসসিএল কোম্পানি ও বিশ্বাসঘাতক কামরুজ্জামান রুম্মানের ব্যাপারে এখনও আমি আইনের আশ্রয় নেইনি। এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সিকিউরিটি কোম্পানি আইএসসিএল’র সিলেট ব্রাঞ্চ ইনচার্জ ১৪৯, তোপখানা এলাকার আবদুস সালামের ছেলে কামরুজ্জামান রুম্মানেন প্রতি আহ্বান জানাই, আমার বিনিয়োগকৃত ৭৮ লাখ টাকা ও ঋণ হিসেবে আমার কাছ থেকে নেয়া ৮৫ লাখ টাকা ফেরত দিন (নগদ ৭ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে)। অন্যথায় আমি প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status