বিশ্বজমিন

আসামে বাংলাদেশী বিরোধী বিক্ষোভ

মানবজমিন ডেস্ক

১৩ মে ২০১৮, রবিবার, ১১:০৫ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশী কথিত অভিবাসীদেরকে নাগরিকত্ব দেয়ার বিরুদ্ধে কয়েক শত মানুষ বিক্ষোভ করেছে আসামে। এ সময় তারা সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলেরও বিরোধিতা করেন। ২০১৬ সালের সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ তীব্র হয়ে ওঠে শনিবার। এ দিন আসামের বিভিন্ন রাস্তায় বিক্ষোভ হয়। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ধর্মীয় নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের ভারতীয় নাগরিকাত্ব দেয়ার যে প্রস্তাব ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছে তার চ্যালেঞ্জ জানানো হয় এ বিক্ষোভ থেকে। নর্থ-ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের (এনইএসও) দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী গুয়াহাটির দিঘলিপুকুরি এলাকায় বিক্ষোভ করেন। এ বিক্ষোভে আসাম সহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যের ছাত্র সংগঠনগুলো অংশ নেয়। অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা ও এনইএসও’র চেয়ারপারসন সমুজ্জল ভট্টাচার্য্য বলেন, তারা উত্তর-পূর্ব ভারতকে বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীদের ভাগাড়ে পরিণত হতে দেবেন না। তার ভাষায়, আমরা এই বিলের বিরুদ্ধে মোদি সরকারকে সতর্ক করে দিচ্ছি। প্রয়োজন হলে লাখ লাখ মানুষ এই বিলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামবে। তাদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন কৃষকদের সংগঠন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি নেতা অখিল গগৈ। অসম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিয়ে গুয়াহাটির ন্যাশনাল হাইওয়ে-৩৭ বন্ধ করে দেয় কয়েক ঘন্টার জন্য। অন্য ৫টি ছাত্র সংগঠন বিক্ষোভ করে রাজ ভবনের সামনে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা প্রস্তাবিত ওই বিলের সমালোচনা করেন। তারা বলেন, ঐতিহাসিব আসাম চুক্তির বিভিন্ন ধারা ভঙ্গ করে প্রস্তাবিত বিল। আসাম চুক্তিতে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের পর যেসব অভিবাসী বাংলাদেশ থেকে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গিয়েছেন ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হবে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রচারণাকালে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, বিজেপি নির্বাচিত হলে আসাম হবে বাংলাদেশীমুক্ত। অর্থাৎ আসামে কোনো বাংলাদেশী থাকবে না। তার এ বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি কথা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন আসামকে অবৈধ অভিবাসীমুক্ত করবেন। কিন্তু এখন তিনি বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের স্বাগত জানানোর জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে দিতে প্রস্তুত। সরকারের ওই প্রস্তাবিত বিলের সমালোচনা করেছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাজ সাংমা। তিনি বিলের বিরোধিতাও করেছেন। তাই তার প্রশংসা করে তরুণ গগৈ বলেন, আসামে বিজেপির রাজনীতি হলো মেরুদ-হীন। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল শুধু নয়া দিল্লিতে তার প্রভুদের দিকে মাথা নত করে রাখেন। ওদিকে আসামে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের মিত্র অসম গণ পরিষদ। তারা এরই মধ্যে প্রস্তাবিত বিলের বিরোধিতা করে প্রধান কার্যালয়ের সামনে ধর্মঘট পালন করেছে। এর আগে বিল উত্থাপন করা হলে তারা সরকারের ওপর থেকে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়ার হুমকি দিয়েছিল। পার্লামেন্টের সামনে বিলটি সম্পর্কে জনগণের প্রতিক্রিয়া কি সে সম্পর্কে ১৬ সদসের একটি যৌথ পার্লামেন্টারি কমিটি সম্প্রতি ৩০০ সংগঠন ও তিনটি জেলা সফর করেছে। এসব স্থানে বাংলা ভাষীদের আধিক্য বেশি। এর মধ্যে রয়েছে বরাক ভ্যালি। ব্রহ্মপুত্র ভ্যালি। আর ওই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি দলীয় এমপি রাজেন্দ্র আগরওয়াল।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status