প্রথম পাতা

সিন্ডিকেটে বাড়ছে চিনি পিয়াজের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১১ মে ২০১৮, শুক্রবার, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও বিভিন্ন মহলের চাঁদাবাজির কারণে পিয়াজ-চিনিসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। অন্যদিকে ফরমালিনের মতো টেস্টিং সল্টকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার মো. রুহুল আমিন, দোকান মালিক সমিতির চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন ও বারডেম হাসপাতালের নিউট্রিশন বিভাগের প্রধান শামসুন্নাহার নাহিদ।
ক্যাব সভাপতি বলেন চিনি, পিয়াজ, তেল, খেজুর, ছোলা, ডালসহ রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন এবার মজুদ পর্যাপ্ত আছে। দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। তাহলে হঠাৎ করে চিনি, পিয়াজের দাম কেন বাড়ছে? এর মূল কারণ সিন্ডিকেট। তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজারকে অস্থির করছে। অন্যদিকে যানজট, জাহাজজট, চাঁদাবাজিসহ নানা অব্যবস্থাপনার কারণে এ দাম বাড়ছে।
গোলাম রহমান বলেন, গত সপ্তাহে বেশ কিছুদিন সরকারি ছুটি ছিল। এটাকে পুঁজি করে আমদানি কম হয়েছে। এ অজুহাতে পিয়াজের দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু চিনির দাম বাড়াচ্ছে পুরোই সিন্ডিকেট করে। একটি পণ্য ১ টাকা ২ টাকা বাড়তে পারে, কিন্তু এক দুইদিনের ব্যবধানে ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়া অস্বাভাবিক। তিনি বলেন, এখন সরকারে উচিত বাজার মনিটরিং করা। একই সঙ্গে যারা অনৈতিকভাবে দাম বাড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।
দোকান মালিক সমিতির চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বলেন, ব্যবসা এখন ব্যবসায়ীরা করছে না। এটা রাজনৈতিক দলের কাছে চলে গেছে। ফলে সব ক্ষেত্রে চাঁদাবাজির পরিমাণ বেড়ে গেছে। আগে একটি দোকানের জন্য ভাড়া দিতে হতো ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা। এখন ৩০ হাজার টাকার বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে ভোক্তাদের উপরে।
বক্তারা বলেন, মানবদেহে ঘাতক টেস্টিং সল্ট বা মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট ব্যবহারে গ্রহণযোগ্য মাত্রা নির্ধারণ অথবা আইন প্রণয়ন করে নিষিদ্ধ করা দরকার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার এর ন্যূনতম মাত্রা নির্ধারণ করা থাকলেও বাংলাদেশে এর কোনো মাত্রা নির্ধারণ করা নেই বলে দাবি করেন তারা। ফলে বাংলাদেশ অত্যন্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা।
বক্তারা বলেন, গবেষণা অনুযায়ী টেস্টিং সল্ট গ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ লোকের মাথা ব্যথা, মাংসপেশী শক্ত হয়ে যাওয়া এবং শরীরে দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। যাকে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট সিনড্রম বলে অভিহিত করা হয়। রক্তচাপ এবং ওজন বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হলো সোডিয়াম গ্লুকানেট গ্রহণ। এটার প্রভাবে মাথাব্যথা, শরীরে অতিরিক্ত ঘাম বের হওয়া, মুখের চামড়ায় টান লাগা, নাক বা অন্য স্থানে জ্বালা অনুভব করা, হৃদ কম্পন বা বমি ভাব হওয়া, স্মৃতিশক্তি ও শারীরিক দুর্বলতা হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
২০১৫ সালে আইন প্রণয়ণ করে যেভাবে ফরমালিনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ঠিক সেভাবে টেস্টিং সল্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলে নিষিদ্ধ ঘোষণা অথবা গ্রহণযোগ্য মাত্রা নির্ধারণ করে আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status