বাংলারজমিন

অর্ধকোটি টাকা নিয়ে উধাও স্বামী-স্ত্রী

প্রতারক চক্রের ফাঁদে ২ হাজার পরিবার

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:

২৭ এপ্রিল ২০১৮, শুক্রবার, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন

সহজ সরল মানুষ অতি সহজেই বিশ্বাস করে। ভেবে নেয় আপনজন। তুলে দেয় নিজের সম্বল। আর সেই বিশ্বাসী ব্যক্তিরা পদে পদেই প্রতারণা চালিয়েই যাচ্ছে দিনের পর দিন। থেকেও যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভুক্তভোগীরা পথে পথে ঘুরে হয়রান। সঙ্গে নিঃস্ব হচ্ছে হাজারো পরিবার। আর সেই প্রতারক চক্রের ফাঁদে প্রায় দুই হাজার পরিবার হতাশ, হারিয়ে তাদের সম্বল। প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের প্রধান বিজলী ও তার স্বামী হারুন নিরুদ্দেশ।
জানা গেছে, উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়াড়ী সদ্দারপাড়া এলাকার ফয়জার রহমানের পুত্রবধূ বিজলী বেগম ও স্বামী হারুন মিয়া পরিকল্পিতভাবে নিজ এলাকাসহ আশপাশের এলাকার সহজ সরল মহিলাদের প্রথমে আটা দেয়ার কথা বলে নামপ্রতি ১ হাজার টাকা করে উত্তোলন করে। হতদরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সরবরাহ এই ব্যানারে কয়েক জনের মাঝে আটাও বিরতণ করে। পরবর্তীতে এই ব্যানারকে কাজে লাগিয়ে গ্রামের সহজ সরল মহিলাদের ভুলিয়ে বিজলী ও তার স্বামী এজেন্ট তৈরি করে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, শিশু ভাতাসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে জনপ্রতি দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার করে টাকা উত্তোলন করতে থাকে। এভাবে প্রায় দুই হাজার থেকে তিন হাজার মহিলার কাছে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে হঠাৎ স্বামী স্ত্রী উধাও হয় বলে এলাকাবাসীসহ ভুক্তভোগীরা জানান। ভুক্তভোগী মর্জিনা, সাবেদাসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন- বিজলী ও তার স্বামী হারুন তাদের সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার যোগাযোগ আছে বলে আমাদের বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে টাকা চাইলে আমরা সরল বিশ্বাসে তাদের হাতে টাকা তুলে দিয়েছি। এলাকার জাহাঙ্গির মেম্বারসহ অনেকে বলেন- সত্যি কথা বলতে কি, তারা যখন আটা দেয়ার জন্য টাকা নিয়ে প্রথমে আটা দিয়েছিল এবং সেই বিতরণে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত থাকায় এলাকার সাধারণ মানুষ অতি সহজে তাদের বিশ্বাস করেছিল। তাদের কথা মতো টাকা তোলার এজেন্ট পপি ও নাজমা বলেন- আমরা বুঝতে পারি নাই যে বিজলী ও তার স্বামী প্রতারণা করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যাবে। তারা আরো বলেন উভয়ে তিন শতাধিক মহিলার কাছে তিন লাখ টাকা তুলে বিজলীকে দিয়েছে। শুধু তারাই নয় এ রকম অনেকেই লাখ লাখ টাকা দিয়েছে তাদের হাতে তুলে। এদিকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা প্রতারক চক্রের হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় প্রতিদিন পাওনাদাররা তাদের বাড়িতে ভির করছে টাকা ফেরতের জন্য। এ সময় অনেকে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন- আমরা সুদের উপর টাকা এনে দিয়েছিলাম বাড়িতেও বলি নাই। এখন স্বামীর ভয়ে বাড়িতেও থাকতে পারছি না। এ ছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টাকা উত্তোলনকারী বেশ কিছু এজেন্টও পাওনাদারের ভয়ে হয়েছেন বাড়ি ছাড়া। ইউপি চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুরুল ইসলাম (বিএসসি) ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ব্যক্তি বিজলীর সঙ্গে (০১৯৯৪৬৫৪৪০৭ ও ০১৭৩৫০৯২৬১৮) যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মোবাইল নাম্বার দু’টি বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মির্জা মুরাদ হাসান বেগ’র সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status