দেশ বিদেশ

হানিফের বক্তব্য স্বীকৃত স্বৈরাচারের পদধ্বনি: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার

২৭ এপ্রিল ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের বক্তব্যকে স্বীকৃত স্বৈরাচারের পদধ্বনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত আছেন, ততদিন পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকবে এবং শেখ হাসিনা ততদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন’- বলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ যে বক্তব্য দিয়েছেন তা স্বীকৃত স্বৈরাচারী সরকারেরই যথার্থ প্রতিধ্বনি।

এই বক্তব্যে গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্য নির্বাসনে পাঠিয়ে বাকশাল পুরোদমে চালু রাখার ইঙ্গিতবহ। তারা যে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চায়, তার বক্তব্য সেটিরই বহিঃপ্রকাশ। গতকাল সকালে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, হানিফ সাহেবের বক্তব্যে কী প্রমাণ হলো? আপনারা সদলবলে ভারতে গিয়েছিলেন কী ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেন-দরবার করতে? বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার জেনে গেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ২০/২২টির বেশি আসন পাবে না। তাই একতরফা নির্বাচনের পক্ষে নাক গলাতে তারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে। দেশকে গণতন্ত্রহীন করে আওয়ামী সরকার সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে গোটা দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে। হানিফের বক্তব্যে জাতির সামনে ভয়ঙ্কর তথ্য বেরিয়ে এলো, গণতন্ত্র বিধ্বংসী আওয়ামী লীগের পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ ঘটলো। কিন্তু জনগণ এবার আর বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, দেশজুড়ে বেকারত্ব, রাজনৈতিক মতপ্রকাশে স্বাধীনতা হরণ, লুটপাট ও দমননীতির বেপরোয়া উত্থানকে আরো দীর্ঘায়িত করতে চায় এ সরকার। তাই তারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বেআইনি কারাবাসে আটকে রেখে তাকে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে তার অসুস্থতা তীব্রতর করার এক ভয়ঙ্কর মাস্টারপ্ল্যানের যে অংশ, তা হানিফের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে মানুষের উদ্বিগ্ন মনকে অন্যদিকে নিবদ্ধ করার জন্যই সরকারের নানা কারসাজির মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাগরিকত্ব নিয়ে উদ্ভট, ভুয়া ও হাস্যকর প্রশ্ন তোলা আরেকটি কারসাজি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে সরকারি ষড়যন্ত্রের যেন শেষ নেই। তারেক রহমানকে নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বক্তব্যে সাধারণ মানুষের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে। সমালোচনার মুখে তিনি তার ফেসবুকের পোস্ট সরিয়ে নিয়ে এখন বলছেন তার ফেসবুক হ্যাকড হয়েছে। মূলত প্রশ্নবিদ্ধ কাগজপত্র উপস্থাপন করে তিনি সবার কাছে হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছেন। রিজভী বলেন, তারেক রহমান বৃটেনের আইন মোতাবেক সেখানে বসবাস করছেন। যে কথাটি আমি ও আমার দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর সামনে বার বার উপস্থাপন করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র ও তদবির করে ব্যর্থ হয়ে তার কেবিনেটের প্রতিমন্ত্রীকে দিয়ে জাতির সামনে প্রশ্নবিদ্ধ কাগজপত্র উপস্থাপন করাচ্ছেন। দেশের মানুষের সমালোচনা ও প্রত্যাখ্যানের মুখে শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুক থেকে উপস্থাপিত কাগজপত্র সরিয়ে ফেলেছেন। আসলে বিনাভোটের সরকারকে সবসময় জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েই চলতে হয়। রিজভী বলেন, আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই- তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেননি। যুক্তরাজ্যের অভিবাসন আইনে শত শত দেশের নাগরিকরা যেভাবে পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম নিয়ে অবস্থান করেন সেভাবেই তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। তিনি যুক্তরাজ্যের হোম ডিপার্টমেন্টে পলিটিক্যাল এসাইমেন্টের জন্য তার পাসপোর্টটি জমা দিয়েছেন, সারেন্ডার করেননি।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার কাছে জানতে চাই- আপনি কীভাবে দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটিয়েছিলেন? রাজনৈতিক আশ্রয়ে কীভাবে ছিলেন? আপনার ছোট বোন শেখ রেহানা কীভাবে বৃটেনে অবস্থান করেছিলেন? গণমাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেখতে পেলাম। জাতির সামনে এর জবাব দিবেন কী? রিজভী আহমেদ সারা দেশে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বুধবার বগুড়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুর নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা লিফলেট বিতরণের এক পর্যায়ে বগুড়ার শাহজাহানপুর উপজেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অন্যদিকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা যুবদল সভাপতি জাকির হোসেন জুয়েলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আমরা এসব গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কর্নেল (অব.) আবদুল লতিফ, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, শামসুজ্জামান সুরুজ, রফিক শিকদার, আমিনুল ইসলাম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status