প্রথম পাতা

দুই সিটিতে প্রচারযুদ্ধে দুই দল

ইকবাল আহমদ সরকার, গাজীপুর ও রাশেদুল ইসলাম, খুলনা

২৫ এপ্রিল ২০১৮, বুধবার, ১০:১০ পূর্বাহ্ন

প্রতীক হাতে নিয়েই প্রচারণায় নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে  ভোটের উৎসব। কর্মী-সমর্থকরা নেমে পড়েছেন প্রকাশ্যে। এর আগে প্রার্থীরা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির হন। সেখানে প্রতীক নিয়ে হাসিমুখে ছুটে যান ভোটারদের কাছে। তবে নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে বিএনপি প্রার্থীরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

উৎসবমুখর পরিবেশে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর শুরু হয়েছে প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা। গতকাল সকাল ১০টা থেকে জয়দেবপুরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে অস্থায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রতীক বরাদ্দ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই মেয়র, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী, তাদের সমর্থক ও দলীয় বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী দলে দলে আসতে শুরু করেন। আর প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে উচ্ছ্বসিত প্রার্থীগণ। প্রতীক হাতে পেয়ে তারা বলেছেন, জয়ের ব্যাপারে পুরো আশাবাদী।

মেয়র পদে নৌকা পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত ও ১৪ দলীয় জোট প্রার্থী মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, ধানের শীষ পেয়েছেন বিএনপি মনোনীত বিশদলীয় জোট প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)র রুহুল আমিন কাস্তে প্রতীক,  ইসলামী ফ্রন্টের জালাল উদ্দিন মোমবাতি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নাসির উদ্দিন হাতপাখা, ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমানের মিনার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ উদ্দিন দেয়াল ঘড়ি প্রতীক পেয়েছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেন। এর আগে তিনি সকল প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন। প্রতীক পেয়ে উচ্ছ্বসিত প্রার্থীরা নির্বাচনে নিজের জয় লাভের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। নির্বাচনে প্রত্যাহারের পর ৭ জন মেয়র প্রার্থী, ২৫৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৮৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর একটি ওয়ার্ডে এরই মাঝে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ওয়ার্ডের একমাত্র প্রার্থী।

মেয়র প্রার্থীর পর কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান দুই দলের প্রার্থী। ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা জানান তারা।
জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে প্রতীক নিতে এসেছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগ সহসভাপতি কাজী আলিম উদ্দীন বুদ্দিন, অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন বাবুল, এসএম মোকসেদ আলম, মাজহারুল আলম প্রমুখ।

বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আল্লাহর রহমতে শতভাগ নিশ্চিত। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে এখন থেকে নির্বাচনের প্রচার কাজে নেমে পড়ব। জীবন দিয়ে হলেও দেশনেত্রীর যে অঙ্গীকার, সেটা বাস্তবায়ন করে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমার জীবনকে আমি উৎসর্গ করবো। তার সঙ্গে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ নিতে আসেন জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক ডা. মাজহারুল আলম, মো. সোহরাব উদ্দীন, মীর হালিমুজ্জামান ননী, আফজাল হোসেন কায়সার, আশরাফ হেসেন টুলু, শাখাওয়াত হোসেন সবুজ প্রমুখ।

সিপিবি’র কাজী রুহুল আমিন কাস্তে প্রতীক পেয়ে বলেন, কাস্তে প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। সিটিকে একটি বাসযোগ্য, মানবিক, উন্নত, আধুনিক এবং পরিবেশ সম্মতভাবে গড়ে তুলব। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা সাধারণ সম্পাদ জয়নাল আবেদিন খান, জেলা নেতা জিয়াউল কবির, দুলাল হোসেন প্রমুখ। ইসলামী ফ্রন্টের জালাল উদ্দিন তাদের দলীয় প্রতীক মোমবাতি বরাদ্দ পাওয়ার পর জানান, মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছে। পরিবর্তনের ধারায় নগরবাসী মোমবাতিকে বিজয়ী করবে বলে আশা করি। মেয়র ছাড়া ওয়ার্ড অনুসারে ভাগ হয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেন। এদিকে প্রতীক পেয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা। চান্দনা চৌরাস্তায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এ সময় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনী মিছিল ও শোভাযাত্রা করেন। এখানে তিনি দলীয় হ্যান্ডবিল বিতরণ করেন। এ ছাড়া শহরের রাজবাড়ী সড়কে বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনী মিছিল বের করে। মিছিলটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

খুলনা: খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ৩১টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের বিপরীতে ৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রথমবারের মতো দলীয় সমর্থনে কেসিসি নির্বাচনেও বড় দুটি দলে বিদ্রোহীদের ছড়াছড়ি। এর মধ্যে কাউন্সিলর পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে ২৫ জন ও বিএনপিতে ৯ জন বিদ্রোহী রয়েছেন।

কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. ইউনুস আলী বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালেই মেয়র প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া সম্পন্ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেককে (নৌকা) প্রতীক, বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে (ধানের শীষ) প্রতীক, জাতীয় পার্টি মনোনীত শফিকুর রহমানকে (লাঙল প্রতীক), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হককে (হাত পাখা) প্রতীক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি মনোনীত মিজানুর রহমান বাবুকে (কাস্তে) প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মেয়র প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার কার্যক্রম চলছে। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ায় প্রচারের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। দুপুর ২টা থেকেই প্রার্থীরা মাইকিং করে প্রচারণা শুরু করতে পারবেন।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status