শেষের পাতা

সিলেটে কাজের মেয়েকে ধর্ষণ তোলপাড়

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে

২৫ এপ্রিল ২০১৮, বুধবার, ৯:৪৬ পূর্বাহ্ন

সিলেটে কাজের মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত সোহেল মিয়া লাপাত্তা। তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ। এদিকে- এ ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছে সিলেটের শেখঘাট, ঘাষিটুলা, কলাপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায়। তবে- এই ধর্ষণের ঘটনাকে মিথ্যা বলে অভিহিত করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালেহ আহমদ চৌধুরী। তিনি দাবি করেছেন- একটি পক্ষ আগামী নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ফায়দা লুটতে তার মামা সোহেলকে এ ঘটনায় জড়িয়েছে। শনিবার নগরীর কোতোয়ালি থানায় ধর্ষিত কিশোরীর বোন তানজিমা বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় একমাত্র আসামি নগরীর  ১০নং ওয়ার্ডে কলাপাড়ার ডহর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সোহেল মিয়া। মামলার বাদী তানজিমা বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায়। তারা দীর্ঘ দিন ধরে ঘাষিটুলার কলাপাড়া এলাকার ফজল মিয়ার কলোনিতে বসবাস করছেন। এদিকে- কোতোয়ালি থানায় দায়ের মামলার এজাহারে তানজিমা বেগম অভিযোগ করেছেন- প্রায় তিন বছর আগে তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থেকে ১২ বছর বয়সী ছোট বোনকে সিলেটের ডহর এলাকার বাসিন্দা সোহেল মিয়ার বাসায় ঘরের কাজে সহযোগিতার জন্য শ্রমিক হিসেবে দেন। বছর দুয়েক পর তার ছোট বোনকে যৌন হয়রানি করতে থাকেন সোহেল মিয়া। এসব কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দিতে থাকেন সোহেল মিয়া। গত ১৪ই এপ্রিল রাত ১টার দিকে ছোট বোনের কক্ষে প্রবেশ করে মুখ চেপে ধরে সোহেল মিয়া একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরদিন তানজিনার বাসায় গিয়ে ধর্ষণের কথা জানায় ওই কিশোরী। তানজিনা তার স্বামী ও ভাইসহ সোহেল মিয়ার বাসায় গিয়ে এই ঘটনার বিচার প্রার্থী হলে উল্টো তাকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। ওই দিনই ধর্ষিতা কিশোরীকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেন তানজিনা। ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারে চিকিৎসা শেষে ওই কিশোরী সহ কোতোয়ালি থানায় গিয়ে মামলা করেন তানজিমা বেগম। এদিকে- মামলা দায়েরের পর কোতোয়ালি থানা পুলিশ অভিযুক্ত সোহেল মিয়াকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ওসি গৌসুল হোসেন জানিয়েছেন- আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযানে রয়েছে। মামলা দায়ের হওয়ার পর আসামি গা-ঢাকা দিয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে- মামলা দায়ের করে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে পরিবার। মামলার বাদী গতকাল অভিযোগ করেছেন- মামলা তুলে নিতে কাউন্সিলর ও সোহেলের পক্ষের লোকজন তাদের ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছেন। তারা এখন ভিকটিমের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারেও তারা পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা চান বলে জানান তানজিমা বেগম। তিনি জানান- শুধু একদিন নয় এ ঘটনার আগেও তার বোনকে ধর্ষণ করেছিল সোহেল মিয়া। ২০১৭ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর তার বোনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ওই ব্যবস্থাপত্রে প্রমাণ রয়েছে তার বোনের স্বামীর নাম সোহেল। ঠিকানা দেয়া হয়েছে তাহিরপুরের। হাসপাতালে ভর্তি করার আগে তার বোনকে ধর্ষণ করা হয়। ওই সময় তার কিশোরী বোন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে সবার অগোচরে সুনামগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ধর্ষক সোহেল আহমদ সিজার করিয়ে একটি মৃত সন্তান প্রসব করান। এই ঘটনাটি আমরা জানতাম না। দ্বিতীয় দফা যখন তার বোন ধর্ষণের স্বীকার হয় তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে এই ঘটনা ধরা পড়ে। এরপর তার বোনই সব ঘটনা খুলে বলে। তানজিমা বেগম বলেন- এবারের ধর্ষণের ঘটনায় যে মামলা করেছি সেটির সূত্র ধরে পুলিশ তদন্তে নামলে সব কিছু পরিষ্কার হবে। তবে- তানজিমা বেগমের ওই অভিযোগ সত্য নয় বলে জানিয়েছেন সোহেল মিয়ার মামা ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সালেহ আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন- ওই ঘটনার সময় সোহেলের কাজের ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছিল ভিকটিম মেয়েটি। বিষয়টি ভিকটিমের চাচা গৃহকর্তা সোহেলকে অবগত করে চিকিৎসা করান। তিনি দাবি করেন- ভিকটিমের সঙ্গে অন্য কারও অপকর্মের ঘটনা কৌশলে সোহেলের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। একটি মহল এ ঘটনা নিয়ে খেলা করছে বলে দাবি করেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status