এক্সক্লুসিভ

মোসাদ যেভাবে গুপ্তহত্যা চালায়

মাহমুদ ফেরদৌস

২৫ এপ্রিল ২০১৮, বুধবার, ৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

মালয়েশিয়ায় এক ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানীর হত্যাকাণ্ডের ফলে ইসরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের গুপ্তহত্যার প্রবণতা নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। ৩৫ বছর বয়সী বিজ্ঞানী ফাদি আল-বাতশ বসবাস করতেন মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে। গাজায় তড়িৎ প্রকৌশল নিয়ে পড়াশোনা করার পর মালয়েশিয়ায় একই বিষয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও জ্বালানি সিস্টেম ছিল তার বিশেষত্ত্ব। এই বিষয়ে তিনি বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রও প্রকাশ করেছেন।
গাজার শাসক হামাস বলেছে, আল বাতশ ছিলেন তাদের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সংস্থাটি শনিবারের ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদকে দায়ী করে।
বাতশকে ‘বিশ্বস্ত সদস্য’ আখ্যা দিয়ে হামাস বলেছে, তিনি ছিলেন একজন ফিলিস্তিনি বিজ্ঞানী। তিনি জ্বালানি বিষয়ে আন্তর্জাতিক অনেক ফোরামে অংশ নিয়েছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আল-জাজিরাকে দেওয়া এক বক্তব্যে আল বাতশের পিতা বলেন, তার সন্দেহ মোসাদই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। তিনি মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের আহ্বান জানান।
ইসরাইলি গুপ্তচর সংস্থা নিয়ে দেশটির শীর্ষস্থানীয় একজন বিশেষজ্ঞ হলেন রনেন বার্গম্যান। তিনি একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক। সম্প্রতি তার লেখা বই ‘রাইজ অ্যান্ড কিল ফার্স্ট’ বেশ আলোচিত হয়েছে।
রনেন বার্গম্যান বলেন, আল বাতশের হত্যাকাণ্ড একটি মোসাদ অপারেশন হওয়ার সমস্ত বৈশিষ্ট্যই বহন করছে। তিনি বলেন, ‘ঘাতকরা একটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করে তাদের টার্গেটকে হত্যা করে। মোসাদ বহু অভিযানে এভাবে মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছে। ইসরাইল থেকে বহু দূরে একেবারে নিখাদ পেশাদারী কায়দায় হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। পুরো বিষয়টিই মোসাদের জড়িত থাকার দিকে নির্দেশ করে।’

টার্গেট বাছাই করা
ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা যখন কোনো টার্গেটকে হত্যার জন্য বাছাই করে, তখন সেই প্রক্রিয়া বেশ কয়েক ধাপে অনুমোদিত হতে হয়। মোসাদের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া ছাড়াও, সামগ্রিক ইসরাইলি গোয়েন্দা সম্প্রদায় ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও এই প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকেন। মাঝে-মধ্যে হত্যার জন্য কাউকে বাছাই করার কাজ ইসরাইলের ঘরোয়া ও সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাও করে থাকে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আল বাতশকে টার্গেট হিসেবে বাছাই করার কাজ ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর কোনো ইউনিট বা অন্য গোয়েন্দা সংস্থাও করে থাকতে পারে। হামাসকে অনুসরণ করা যেসব ইউনিটের কাজ, তাদের সাধারণ গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করার সময় আল বাতশ নজরে এসে থাকতে পারেন। আবার বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইসরাইলি গুপ্তচর তৎপরতা ও গোয়েন্দাচক্রের মাধ্যমেও আল বাতশ চিহ্নিত হতে পারেন।
কিছু সূত্র জানিয়েছে, গাজা থেকে তুরস্কের ইস্তাম্বুল ও বৈরুতে যেসব যোগাযোগ হয়, তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। ফলে আল-বাতশকে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি এসব চ্যানেলের মাধ্যমেও হতে পারে। আল বাতশের বন্ধুরা জানান, তার সঙ্গে যে হামাসের সম্পৃক্ততা আছে, তা তিনি কখনও লুকানোর চেষ্টা করেননি। এক বন্ধু বলেন, তার সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক থাকার বিষয়টি ফিলিস্তিনি সম্প্রদায় জানে।

হত্যাকাণ্ডের প্রক্রিয়া
আল বাতশ যখন প্রাথমিক টার্গেট হিসেবে বাছাই হয়ে গেলেন, মোসাদ হয়তো এরপর তাকে হত্যা করা প্রয়োজন কিনা, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সংগ্রহে থাকা গোয়েন্দা তথ্য যাচাই-বাছাই করবে। হত্যা করা প্রয়োজন হলে, কোথায় তাকে হত্যা করা যায়, এবং হত্যা করার সেরা উপায় কী, তা নিয়ে আলাপ চলে।
মোসাদের বিশেষায়িত ইউনিট টার্গেটের ফাইল পড়া শেষ করলে, নিজেদের গবেষণার ফলাফল ইন্টিলিজেন্স সার্ভিস কমিটির প্রধানদের কাছে তুলে ধরা হয়। এই কমিটিতে রয়েছেন ইসরাইলের সকল গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান। হিব্রুতে এই কমিটিকে বলা হয় ভার্শ। ভার্শ তারপর সম্ভাব্য অপারেশন নিয়ে আলাপ করবে। নতুন পরামর্শ ও তথ্য সরবরাহ করবে। তবে অপারেশন অনুমোদন দেয়ার আইনি কর্তৃত্ব এই কমিটির নেই।
শুধুমাত্র ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীই এই অনুমোদন দিতে পারেন। রনেন বার্গম্যান বলেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীরা সাধারণত রাজনৈতিক কারণে একাই এই সিদ্ধান্ত নেন না। তিনি বলেন, ‘প্রায়ই দেখা গেছে যে প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় এক বা একাধিক মন্ত্রীকে জড়িয়েছেন। প্রায়ই প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই দুই একজন মন্ত্রীর মধ্যে থাকেন।’
অনুমতি পাওয়ার পর, এই অপারেশন ফিরে যায় মোসাদের কাছে। শুরু হয় পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কাজ। টার্গেট বিশেষে এজন্য কয়েক সপ্তাহ, মাস এমনকি বছরও লেগে যেতে পারে।
সিজারিয়া ইউনিট
মোসাদের অভ্যন্তরে সিজারিয়া ইউনিট হলো গোপন একটি অপারেশনাল শাখা। এই ইউনিটের দায়িত্ব হলো, বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে আরব দেশগুলোতে গুপ্তচর বসানো ও তাদের পরিচালনা করা। এই ইউনিট প্রতিষ্ঠিত হয় সত্তরের দশকের শুরুর দিকে। এই ইউনিটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাইক হারারি, যিনি কিনা পরে বেশ নাম কামিয়েছিলেন।
সিজারিয়া আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে বেশ বড়সড় একটি গুপ্তচর নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ টার্গেটের ওপর তথ্য সংগ্রহ, নজরদারি করা হয়।
মাইক হারারি সিজারিয়ার সবচেয়ে বিধ্বংসী ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হিব্রুতে এই ইউনিটের নাম ছিল কিদন (ইংরেজিতে বেয়নট)। এই ইউনিটের সদস্যরা ছিলেন পেশাদার খুনি, যারা গোপন হত্যাকাণ্ড ও নাশকতামূলক অভিযান পরিচালনায় অভিজ্ঞ ছিলেন। প্রায়ই ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শাখা, যেমন সেনাবাহিনী ও সেপশাল ফোর্স থেকে সদস্য নিয়ে থাকে কিদন। বিভিন্ন সূত্র আল-জাজিরাকে বলা হয়েছে, সম্ভাবনা বেশি যে এই কিদন ইউনিটের সদস্যরাই কুয়ালালামপুরে আল-বাতশকে হত্যা করেছেন।
উল্লেখ্য, মোসাদের বিভিন্ন ইউনিট শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি নেতা ও কর্মীদেরই হত্যা করেনি। তাদের হাতে সিরিয়ান, লেবানিজ, ইরানি ও ইউরোপিয়ান অনেকেই খুন হয়েছেন।

টার্গেট করে চালানো হত্যার অভিযান
সিজারিয়াকে অনেকটা মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ’র সেপশাল এক্টিভিটিজ সেন্টার (এসএসি)-এর সমতুল্য ভাবা হয়। ২০১৬ সালে নাম পরিবর্তনের আগে এসএসি’র নাম ছিল সেপশাল অ্যাক্টিভিটিজ ডিভিশন।
সিআইএ তাদের টপ-সিক্রেট বা সর্বোচ্চ গোপনীয় হত্যাকাণ্ড বা আধাসামরিক অভিযান পরিচালনা করে সেপশাল অপারেশন গ্রুপের (এসওজি) মাধ্যমে। এসওজি হলো এসএসি’র একটি অংশ। এসওজি’র সঙ্গে মিল রয়েছে মোসাদের কিদনের।

রনেন বার্গম্যান তার বইয়ে লিখেছেন, ২০০০ সালে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত, ইসরাইল ৫ শতাধিক গুপ্তহত্যার অভিযান চালিয়েছে। এসব অভিযানে মারা গেছে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে টার্গেট যেমন আছেন, তেমনি আছেন পথচারী বা আশপাশের সাধারণ মানুষও। এ তো গেল ২০০০ সালের আগের হিসাব।
দ্বিতীয় ইন্তিফাদা চলার সময় ইসরাইল ১ হাজারেরও বেশি কিলিং মিশন পরিচালনা করে। এদের মধ্যে ১৬৮টি সফল হয়। দ্বিতীয় ইন্তিফাদার পর ইসরাইল অন্তত ৮০০টি অপারেশন পরিচালনা করেছে। এগুলোর বেশির ভাগই ছিল গাজা ও বিদেশে অবস্থানরত হামাসের বেসামরিক ও সামরিক নেতাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে। রনেন বার্গম্যান অসংখ্য দলিল দস্তাবেজ, মোসাদ ও ইসরাইলি সূত্রের বরাতে তার বইয়ে এই সংখ্যা দিয়েছেন।
আরব-মোসাদ সহযোগিতা

মোসাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাংগঠনিক ও ঐতিহাসিক সংযোগ রয়েছে বেশ কয়েকটি আরব গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে। এদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো জর্দান ও মরক্কোর গোয়েন্দা সংস্থা।
অতি সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে শত্রুতা ও মিত্রতার সংজ্ঞা বদলে গেছে। এছাড়া রাষ্ট্র নয় এমন গোষ্ঠীর হুমকিও বেড়ে গেছে। ফলশ্রুতিতে, মোসাদ বেশ কয়েকটি আরব গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক বিস্তৃত করেছে। এদের মধ্যে রয়েছে কয়েকটি আরব উপসাগরীয় দেশ ও মিশর।

বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যে অভিযান পরিচালনার জন্য জর্দানের রাজধানী আম্মানে মোসাদের একটি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে। ১৯৯৭ সালে আম্মানে হামাসের নেতা খালেদ মেশালকে তার কানে বিষ সেপ্র করে হত্যার চেষ্টা চালায় মোসাদ। তখন তৎকালীন জর্দানিয়ান বাদশাহ হোসেন হুমকি দেন, আম্মানে মোসাদের স্টেশন বন্ধ করে দেয়া হবে। এই হুমকিতেই খোদ তৎকালীন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ওই বিষের অ্যান্টিডোট নিয়ে যান আম্মানে। ওই অ্যান্টিডোটেই প্রাণ বাঁচে খালেদ মেশালের।
তবে নিজের বইয়ে বার্গম্যান মোসাদ সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওই ঘটনার এক ভিন্ন কাহিনীর অবতারণা করেছেন। তিনি দাবি করেন, খালেদ মেশালের ওপর হত্যাচেষ্টার পর জর্দানের তৎকালীন গোয়েন্দা প্রধান সামি বাতিখি বেশ ক্ষুদ্ধ হন এজন্য যে, মোসাদ এই হত্যাচেষ্টার বিষয়ে আগে থেকে তাকে জানায়নি। তিনিও চেয়েছিলেন এই হত্যাপরিকল্পনায় সম্পৃক্ত থাকতে।

বার্গম্যানের গবেষণা অনুযায়ী, ষাটের দশক থেকে মোসাদের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক রক্ষা করে চলছে মরক্কো। বার্গম্যান লিখেছেন, ‘ইসরাইল থেকে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছে মরক্কো। বিনিময়ে, দেশটির তৎকালীন বাদশাহ হাসান মরক্কোর ইহুদীদেরকে ইসরাইলে অভিবাসিত হওয়ার অনুমোদন দেন। পাশাপাশি, মোসাদ মরক্কোর রাজধানী রাবাতে একটি স্থায়ী স্টেশন স্থাপন করার অনুমতি পায়। সেখান থেকেই মোসাদ অন্যান্য আরব দেশে গোয়েন্দাগিরি করার সুযোগ পায়।’ এই সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় উঠে ১৯৬৫ সালে। সেবার রাবাতে অনুষ্ঠিত আরব লীগের সম্মেলন চলাকালে আরব রাষ্ট্রপ্রধান ও তাদের সামরিক কমান্ডারদের বৈঠককক্ষ ও ব্যক্তিগত কক্ষে রেকর্ডিং ডিভাইস রাখার সুযোগ দেয়া হয় মোসাদকে।
তৎকালীন সময়ে ওই সম্মেলন ছিল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সম্মেলনটি ডাকার উদ্দেশ্য ছিল একটি যৌথ আরব সামরিক কমান্ড প্রতিষ্ঠা করা। দুই বছর বাদেই ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে মাত্র ৬ দিনের ব্যবধানে আরব দেশগুলোর বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করে ইসরাইল। দখলে নিয়ে নেয় আল আকসা মসজিদ সমেত পূর্ব জেরুজালেম। যুদ্ধের প্রস্তুতির খবর আগেভাগে পেয়ে আরব দেশগুলোর আক্রমণের আগেই ইসরাইল ওই দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আক্রমণ করে সব ভেস্তে দেয়।

সিআইএ ও মোসাদের পদ্ধতি
হত্যা করার জন্য টার্গেট বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মোসাদ ও ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা ব্যপক স্বাধীনতা ভোগ করে। কিন্তু আমেরিকার সিআইএ’কে এসব ক্ষেত্রে একাধিক ধাপের আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এসব ধাপে সিআইএ’র আইনি উপদেষ্টার কার্যালয়, মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয় ও হোয়াইট হাউজের আইনি উপদেষ্টার কার্যালয়কে সম্পৃক্ত করতে হয়। টার্গেটকে হত্যার ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রেসিডেন্সিয়াল ফাইন্ডিং অথরাইজেশনের প্রয়োজন হয় সিআইএ’র। এই অথরাইজেশন বা অনুমতিপত্র হলো একটি আইনি নথি যা সিআইএ’র আইনি উপদেষ্টার কার্যালয় ও বিচার মন্ত্রণালয় একসঙ্গে তৈরি করে থাকে।
প্রেসিডেন্সিয়াল ফাইন্ডিং অথরাইজেশনে প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করার আগে নানাবিধ সংস্থার পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়নের সুযোগ থাকে। এসব মূল্যায়নে জড়িত থাকেন মূলত বিচার মন্ত্রণালয়, সিআইএ ও হোয়াইট হাউসের আইনজীবীরা। ধারণা করা হয় যে, বারাক ওবামা মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে এমন ৩৫৩টি হত্যাকাণ্ডের অভিযানে অনুমোদন দিয়েছিলেন। তবে এগুলোর বেশির ভাগ ড্রোন হামলার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। তার পূর্বসূরি জর্জ ডব্লিউ বুশ দিয়েছিলেন ৪৮টি।

আইনি প্রক্রিয়া
একজন সাবেক জ্যেষ্ঠ সিআইএ কর্মকর্তা আল-জাজিরাকে বলেন, ‘কাকে হত্যা করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত সিআইএ নেয় না।’ তিনি বলেন, ‘সিআইএ কাউকে খারাপ মনে করলেই তাকে হত্যা করতে পারে না। যেই আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে, তার কারণে এটি করা খুব কঠিন।’ সিআইএ’র বেশির ভাগ টার্গেট করে চালানো হত্যার অপারেশন ছিল মূলত ড্রোন হামলা। এর ভিত্তি ছিল প্রেসিডেন্টের অনুমতি।
সিআইএ’র সাবেক কর্মকর্তা রবার্ট বাএর বলেন, ‘যে কোনো টার্গেটেড কিলিং অপারেশনে অবশ্যই প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর থাকতে হয়। টার্গেট যদি হয় উঁচু মাপের কেউ, তাহলে তো কথাই নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলো, যদি এ ধরনের অভিযান কোনো যুদ্ধক্ষেত্রে বা যুদ্ধ চলার সময় চালাতে হয়। এসব ক্ষেত্রে ফিল্ড অফিসাররা অনেক স্বাধীনতা ভোগ করেন।’
অপরদিকে মোসাদে, কোনো টার্গেটকে হত্যার ক্ষেত্রে সিআইএ’র মতো অত আইনি বিধিনিষেধ নেই। মোসাদের ক্ষেত্রে বাএর বলেন, ‘এটা তাদের জাতীয় নীতি।’

(আল-জাজিরায় প্রকাশিত সাংবাদিক আলী ইউনেসের ‘হাউ মোসাদ ক্যারিজ আউট ইটস অ্যাসাসিনেশন্স’ শীর্ষক লেখার অনুবাদ।)
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status