দেশ বিদেশ

সীমানা পুনর্বিন্যাস

দ্বিতীয় দিনে ৯ জেলার আসনের বিষয়ে শুনানি

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ এপ্রিল ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৩৪ পূর্বাহ্ন

জাতীয় সংসদের ৬০টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত শুনানি গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত ২১শে এপ্রিল প্রথম দিনের মতো গতকালও সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি এ শুনানিতে। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কমিশন কার্যালয়ে ৯ জেলার অন্তত ১৩টি আসনের সীমানা সংক্রান্ত শুনানিতে অংশ নেন সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীরা। গত ১৪ই মার্চ নির্বাচন কমিশন নতুন সীমানার যে খসড়া ঘোষণা করেছিল, তাতে পাল্টে যায় ৪০টি সংসদীয় আসনের সীমানা। এর আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনে যুক্ত ছিল শ্যামনগর উপজেলা এবং কালিগঞ্জের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে এ আসনটি। কিন্তু সংশোধনী খসড়া অনুযায়ী শ্যামনগর উপজেলা এবং কালিগঞ্জের পুরো উপজেলা যুক্ত করে সাতক্ষীরা-৪ সংসদীয় আসন বিন্যাস করা হয়। একই সঙ্গে সাতক্ষীরা-৩ আসনটি কালিগঞ্জের ৪টি ইউনিয়ন বাদ দিয়ে দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলা নিয়ে এ আসনটি করা হয়।

এ নিয়ে বিভক্ত সাতক্ষীরা-৪ ও ৩ আসনের জন-প্রতিনিধিরা অংশ নেন নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে। তবে, এ দুটি আসনের পূর্বের অবস্থায় বহাল রাখার দাবিতে ৩৮টি অভিযোগ পড়লেও কালিগঞ্জ উপজেলা অখণ্ড রাখার দাবিতে বিপক্ষে ৩টি আবেদন জমা হয়। একপক্ষ বলছে, কমিশনের সংশোধনীর সিদ্ধান্ত ঠিক: কারণ- সীমানা নির্ধারণ অধ্যাদেশ অনুযায়ী উপজেলাকে বিভক্ত করে একাধিক আসনে দেয়া যায় না। আর  দিলেও নানা প্রশাসনিক ঝামেলা তৈরি হয়।

পূর্বের সীমানা বহাল রাখার দাবি জানান সাতক্ষীরা-০৩ (আশাশুনি, দেবহাটা ও কালিগঞ্জের একাংশ) আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও দশম জাতীয় সংসদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ডা. আ ফ ম রুহুল হক। তিনি বলেন, উপজেলাকে অখণ্ড রাখতে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। কাকশিয়ালী নদী দিয়ে বিভক্ত কালিগঞ্জের উত্তরের চারটি ইউনিয়ন দেবহাটা ও আশাশুনির সঙ্গে সংযুক্ত। কালিগঞ্জ উপজেলার নদীর দক্ষিণের ৮টি ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং আয়তন সব দিক থেকে বিচ্ছিন্ন। তাই উপজেলার অখণ্ডতার দোয়াই দিয়ে আসন পুনর্বিন্যাস করা ইসির জন্য সমীচীন হয়নি। তাই ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পূর্বাবস্থায় আসনটি পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে ইসির কাছে।

আর সাতক্ষীরা-০৪ আসনের সাবেক জাতীয় পার্টির এমপি এইচএম গোলাম রেজা নবম ও দশম জাতীয় সংসদের আলোকে পুনর্বহারের জন্য কমিশনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তার আসনটি। তিনি বলেন, ২১শ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে রাজধানী ঢাকায় ২০টি সংসদীয় আসন বহাল আছে। আর উপজেলার অখণ্ডতার দোহায় দিয়ে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলা নিয়ে সাতক্ষীরা-০৪ আসনটি করা হয়েছে। কিন্তু এই আসনটির আয়তন ২৩৪২ বর্গকিলোমিটার যা ঢাকার ২০টি আসন থেকেও বেশি। এভাবে কমিশন এই আসনটি বহাল রাখলে জন-দুর্ভোগ বাড়বে।

সাবেক ওই এমপির মতো এই আসনটি বহাল চেয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জেলার সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য একে ফজলুল হক ও শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল হক দোলন। তারা উভয়ই উপজেলার অখণ্ডতায় আসন বিন্যাসের বিরোধিতা করে কমিশনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন। এরকম নানান যুক্তি আর অভিযোগ নিয়ে সোমবার শুনানিতে অংশ নেন যশোর-৪, মাগুরা-১ ও ২, নড়াইল-১ ও ২, খুলনা-৪, সাতক্ষীরা-৩ ও ৪, সিলেট-২ ও ৩, মৌলভীবাজার-২ ও ৪ এবং জামালপুর-৪ আসনের জনপ্রতিনিধিরা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্ব কমিশনাররা আগামী ২৫শে এপ্রিল পর্যন্ত এই যুক্তিতর্ক শুনবেন। এরপর ৩০শে এপ্রিল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত সংসদীয় আসনের সীমানা বিষয়ে ঘোষণা দেবে ইসি।


   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status