দেশ বিদেশ

তামাক চাষি ও ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারি

সিগারেটের আগে বিড়ি বন্ধ হলে কঠোর আন্দোলন

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ এপ্রিল ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

দেশে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে বিড়ি শিল্প এবং ২০৩৮ সালের মধ্যে সিগারেট শিল্পকে বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সরকারের এ ঘোষণাকে বৈষম্য মনে করছেন তামাক চাষি ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবসায়ীরা। তারা বিড়ি-সিগারেট বন্ধে একই সময় নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সারা দেশে একযোগে আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়ামে রংপুরের তামাক চাষি ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবসায়ীদের আয়োজিত মহাসম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। বৃহত্তর রংপুরের তামাক চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা বলেন, ভারতের মতো বাংলাদেশেও বিড়িকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। এছাড়াও প্রতি হাজার বিড়িতে শুল্ক ১৪ টাকা নির্ধারণ করাসহ বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি ছাড়া তামাক চাষ কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না। এ সময় বক্তারা বলেন, বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কর্তৃক ১৯০২৪ কোটি টাকা কর ফাঁকির পাশাপাশি ৩৫ টাকা মূল্যের সিগারেট ২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী কোনো গুরুত্ব না দিয়ে তিনি শ্রমঘন বিড়ি শিল্পকে বন্ধের জন্য বিভিন্নভাবে কৌশল অবলম্বন করছেন। এছাড়া এর আগেও অর্থমন্ত্রীর বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সারা দেশে বিড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের তীব্র আন্দোলনের মুখে তিনি পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানান বক্তারা। বক্তারা আরো বলেন, রংপুরের বেশিরভাগ চাষি তামাক চাষের সঙ্গে জড়িত। আর এই তামাক বিড়ি শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সেখানকার মাটিতে বালির পরিমাণ বেশি হওয়ায় তামাক ছাড়া অন্য কোনো ফসলের ভালো ফলন হয় না। তাই এসব চাষিদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া এই শিল্প বন্ধ করে দিলে আবার সেই মঙ্গা পরিস্থিতি ফিরে আসবে। তাছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অভিযোগ রয়েছে ২০০৯-১০ থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত সিগারেট কোম্পানিগুলো ১৯২৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। এছাড়া বিগত ৮ বছরে বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ১৩ হাজার কোটি টাকার মতো পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
 তারপরও তাদেরকে কোন যুক্তিতে ২২ বছর অতিরিক্ত সময় দিয়ে এ বিরাট  বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে? নীলফামারী জেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হামিদুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম। মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য রাশেদুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন রংপুর তামাক চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম তুহিন, সাধারণ সম্পাদক মাসুম ফকির প্রমুখ। এ সময় বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক এম কে বাঙ্গালী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। মহাসমাবেশে বক্তারা বিড়ি-সিগারেটের বৈষম্যমূলক শুল্কনীতি ও ভারত বাংলাদেশের বিড়ি শুল্কের তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপনের মাধ্যমে ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- বাংলাদেশে সিগারেট যতদিন থাকবে, বিড়ি শিল্পও ততদিন থাকবে। ভারতের ন্যায় বিড়ি শিল্পকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। ভারতের ন্যায় প্রতি হাজার বিড়িতে শুল্ক ১৪ টাকা করতে হবে। যে সব বিড়ি ফ্যাক্টরি ২০ লাখ শলাকার কম উৎপাদন করে তাদের কাছ থেকে শুল্ক  নেয়া বন্ধ রাখতে হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status