বিশ্বজমিন
বিচার পাওয়ার অপেক্ষায় রানা প্লাজা ট্রাজেডির শিকার শ্রমিকরা
মানবজমিন ডেস্ক
২২ এপ্রিল ২০১৮, রবিবার, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন
রানা প্লাজা ট্রাজেডির শিকার গার্মেন্ট শ্রমিকরা এখনও সুবিচার পাওয়ায় অপেক্ষায় আছেন। আগামীকাল ওই ট্রাজেডির পঞ্চম বার্ষিকী। চার বছর আগে সাভারে রানা প্লাজা ধসে নিহত হন কমপক্ষে ১১৩০ জন শ্রমিক। বেঁচে আছেন যারা তাদের অবস্থা শোচনীয়। তাদেরকে নিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, রানা প্লাজা ধরে পড়ার পর ধ্বংসস্তূপ আর মৃতদেহের চাপায় আটকে ১০ ঘন্টা আটকে ছিল নিলুফার বেগমের পা। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু সুবিচারের আশায় থাকা তার কাছে এখন এক যন্ত্রণা হয়ে উঠেছে। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রাজেডি ঘটে রানা প্লাজায়। মঙ্গলবার এর পঞ্চম বার্ষিকী। এ্টি কারখানায় তৈরি হতো পশ্চিমা নামকরা সব ব্রান্ডের পোশাক। শ্রমিকদের দেয়া হতো কম মজুরি। সেসব কিছু পিছনে রেখে এখন বেঁচে থাকা শ্রমিকরা সুবিচার চান। রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু আদালতে এ মামলায় যে ধীর গতি তাতে ওই ট্রাজেডির বার্ষিকীতে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ওই ট্রাজেডি িেথকে বেঁচে গেছেন নিলুফার বেগম। সে সেই ২০১৩ সালের ২৪ শে এপ্রিলের কথা। তার ডান পায়ের ওপর পড়ে ছিল তিনটি মৃতদেহ আর ধ্বংস্তূত। এ জন্য তিনি পা তুলতে পারছিলেন না। নিলুফার বেগমের বয়স এখন ৩৮ বছর। তাকে উদ্ধার করার পর অপারেশন করা হয়েছে। তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেয়েছেন ৩৫০০ ডলার। কিন্তু অপারেশনে লেগেছে তার দ্বিগুন অর্থ। এর ফলে তিনি আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ও বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার কাছ থেকে অর্থ ঋণ করেছেন। রানা প্লাজা ধ্বংসস্তূপের কাছেই একটি মুদি দোকান চালান তিনি। বলেছেন, এখন আমি মৃত্যুর প্রহর গুণছি। আমার পায়ের মাংসপেশী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিডনি কাজ করছে না। রানা প্লাজা ছিল ৯ তলা বিশিষ্ট। এখানে কাজ করা ২০০০ এর বেশি শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের সবার কাহিনীই প্রায় একই। একশন এইড বাংলাদেশের মতে, তাদের বেশির ভাগই ক্ষতিপূরণ হিসেবে যে অর্থ পেয়েছেন তার পুরোটাই খরচ করেছেন চিকিৎসা করাতে। নিলুফার বেগম বলেন, রানা প্লাজার বিচার প্রক্রিয়া যে ধীর গতিতে চলছে তাই দেখার জন্যই সম্ভবত আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আগের দিন দিন ভবনের পিলারে ফাটল দেখা দেয়ার পরও আমাদেরকে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা কাজে না গেলে আমাদেরকে বরখাস্ত করার হুমকি দিয়েছিলেন কারখানার মালিক ও ম্যানেজার। ভবন মালিক এখন জেলে ভাল সময় পাড় করছেন। বাকি অভিযুক্তরা জামিনে বাইরে রয়েছেন। অন্যদিকে আমাদের অনেকেরই অঙ্গহানী হয়েছে। সবাই এখন আমাদেরকে এবং ওই ট্রাজেডির কথা ভুলে গিয়েছেন।
রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্ষোভ দেখা দেয়। পাইমার্ক, ম্যাঙ্গো ও বেনেটনের মতো ইউরোপীয়ান ও মার্কিন পোশাকের ব্রান্ডগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। চাপ দেয়া হয় বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি ও তাদের কর্মপরিবেশ উন্নত করার জন্য। এই খাতে বাংলাদেশে নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক। তাদের মাসিক বেতন ৬৫ ডলার থেকে শুরু। এই বেতন বিশ্বের মধ্যে সর্বনি¤œ। যেসব গ্রুপ কারখানার নিরাপত্তা আধুনিকায়ন দেখাশোনা করে তারা বলেছে, বাংলাদেশের গার্মেন্ট কারখানাগুলোর মান উন্নত হয়েছে। গত বছার ২০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বনি¤œ এমন সংখ্যা। এখনও ইউরোপীয়ান শতাধিক ব্রান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটি গ্রুপ সতর্কতা উচ্চারণ করেছে। তারা বলেছে, এখনও ৪৫০০ এমন পোশাক শিল্পে বড় ধরনের জীবনের প্রতি হুমকি আছে। এখাতে ঝুঁকি বিদ্যমান। এএফপির ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও অভিযুক্ত অন্য ৪০ জনের বিচার প্রক্রিয়া যে গতিতে চলছে তার চেয়ে বেশি দ্রুত গতিতে চলছে অবস্থার উন্নয়ন। দুদকের মামলায় ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ প্রকাশে ব্যর্থ হওয়ার কারণে গত বছর আগস্টে সোহেল রানাকে তিন বছরের জেল দেয়া হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও আছে। এ মামলার প্রক্রিয়া যেভাবে চলছে তাতে প্রসিকিউটররা বলছে, রায় ঘোষণা হতে আরো পাঁচ বছর লাগতে পারে। এক্ষেত্রে বার বার মুলতবি করে দেয়াকে দায়ী করেন প্রসিকিউটর মিজানুর রহমান। এখন পর্যন্ত কোনো সাক্ষী তার স্বাক্ষ্য দেন নি। এরই মধ্যে অনেক স্বাক্ষী লাপাত্তা হয়ে গেছেন। ওদিকে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, যে ধীরগতিতে মামলা চলছে তাতে দায়মুক্তির একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিক অধিকার আদায়ের শীর্ষ স্থানীয় নেতা মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেছেন, আমরা আশা করেছিলাম রানা প্লাজা ট্রাজেডি শ্রমিকদেরকে ইউনিয়নভুক্ত হতে সহায়তা করবে। তারা এক হয়ে তাদের উন্নত অধিকার আদায়ের দাবি তুলবে। কিন্তু ঘটেছে তার উল্টো। তিনি বলেন, কোনো প্রতিবাদ বিক্ষোভের আভাষ পেলেই কারখানা মালিকরা স্থানীয় গুন্ডা, পুলিশদের ব্যবহার করে। সরকার চালায় দমনপীড়ন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে বেশি বেতদের দাবিতে শ্রমিকরা যখন আন্দোলন করছিলেন তখন মোহাম্মদ ইব্রাহিম সহ ৪১ নেতাকে আটক করা হয়েছিল। ইব্রাহিম বলেছেন, পুলিশ তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তার মতে, প্রায় ১৭০০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাদেরকে আর চাকরিতে নেয়া হয় নি। রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর গার্মেন্ট মালিকরা আরো শক্তিধর হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করে বিদেশে তার মধ্যে শতকরা প্রায় ৮০ ভাগই তৈরি পোশাক। এম থেকে আসে ৩০০০ কোটি ডলার।
রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্ষোভ দেখা দেয়। পাইমার্ক, ম্যাঙ্গো ও বেনেটনের মতো ইউরোপীয়ান ও মার্কিন পোশাকের ব্রান্ডগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। চাপ দেয়া হয় বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি ও তাদের কর্মপরিবেশ উন্নত করার জন্য। এই খাতে বাংলাদেশে নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক। তাদের মাসিক বেতন ৬৫ ডলার থেকে শুরু। এই বেতন বিশ্বের মধ্যে সর্বনি¤œ। যেসব গ্রুপ কারখানার নিরাপত্তা আধুনিকায়ন দেখাশোনা করে তারা বলেছে, বাংলাদেশের গার্মেন্ট কারখানাগুলোর মান উন্নত হয়েছে। গত বছার ২০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বনি¤œ এমন সংখ্যা। এখনও ইউরোপীয়ান শতাধিক ব্রান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটি গ্রুপ সতর্কতা উচ্চারণ করেছে। তারা বলেছে, এখনও ৪৫০০ এমন পোশাক শিল্পে বড় ধরনের জীবনের প্রতি হুমকি আছে। এখাতে ঝুঁকি বিদ্যমান। এএফপির ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও অভিযুক্ত অন্য ৪০ জনের বিচার প্রক্রিয়া যে গতিতে চলছে তার চেয়ে বেশি দ্রুত গতিতে চলছে অবস্থার উন্নয়ন। দুদকের মামলায় ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ প্রকাশে ব্যর্থ হওয়ার কারণে গত বছর আগস্টে সোহেল রানাকে তিন বছরের জেল দেয়া হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও আছে। এ মামলার প্রক্রিয়া যেভাবে চলছে তাতে প্রসিকিউটররা বলছে, রায় ঘোষণা হতে আরো পাঁচ বছর লাগতে পারে। এক্ষেত্রে বার বার মুলতবি করে দেয়াকে দায়ী করেন প্রসিকিউটর মিজানুর রহমান। এখন পর্যন্ত কোনো সাক্ষী তার স্বাক্ষ্য দেন নি। এরই মধ্যে অনেক স্বাক্ষী লাপাত্তা হয়ে গেছেন। ওদিকে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, যে ধীরগতিতে মামলা চলছে তাতে দায়মুক্তির একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিক অধিকার আদায়ের শীর্ষ স্থানীয় নেতা মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেছেন, আমরা আশা করেছিলাম রানা প্লাজা ট্রাজেডি শ্রমিকদেরকে ইউনিয়নভুক্ত হতে সহায়তা করবে। তারা এক হয়ে তাদের উন্নত অধিকার আদায়ের দাবি তুলবে। কিন্তু ঘটেছে তার উল্টো। তিনি বলেন, কোনো প্রতিবাদ বিক্ষোভের আভাষ পেলেই কারখানা মালিকরা স্থানীয় গুন্ডা, পুলিশদের ব্যবহার করে। সরকার চালায় দমনপীড়ন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে বেশি বেতদের দাবিতে শ্রমিকরা যখন আন্দোলন করছিলেন তখন মোহাম্মদ ইব্রাহিম সহ ৪১ নেতাকে আটক করা হয়েছিল। ইব্রাহিম বলেছেন, পুলিশ তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তার মতে, প্রায় ১৭০০ শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাদেরকে আর চাকরিতে নেয়া হয় নি। রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর গার্মেন্ট মালিকরা আরো শক্তিধর হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করে বিদেশে তার মধ্যে শতকরা প্রায় ৮০ ভাগই তৈরি পোশাক। এম থেকে আসে ৩০০০ কোটি ডলার।